নববর্ষ উদযাপন: দেশব্যাপী র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি
ফাইল ছবি
ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে র্যাব। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) থেকে দায়িত্বপূর্ণ এলাকার উল্লেখযোগ্য ভেন্যু ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি এবং নিরাপত্তা টহল বৃদ্ধি করেছে। যা ১ জানুয়ারি পর্যন্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে সারা দেশব্যাপী পর্যাপ্তসংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন থাকবে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে র্যাব সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়, ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ইতোমধ্যে জারিকৃত সব ধরনের আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক নির্দেশনা বাস্তবায়নে র্যাব কাজ করছে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশে র্যাবের গোয়েন্দা ও আভিযানিক দল প্রস্তুত রয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর রাতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগের মাধ্যমে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তা টহল বৃদ্ধি করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে র্যাব। এছাড়া র্যাবের সাইবার মনিটরিং টিম অনলাইনে সাইবার নজরদারির মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত অব্যাহত রেখেছে।
র্যাব জানায়, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার গুলশান, বনানী, বারিধারা, উত্তরা, ধানমন্ডি, মিরপুরসহ অন্যান্য এলাকায় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, অভিজাত হোটেল ও ক্লাব/বার অধ্যূষিত এলাকায় পূর্ব হতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে র্যাব। পাশাপাশি ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ১ জানুয়ারি ৬ টা পর্যন্ত রাজধানীসহ সারাদেশে বার ও মদের দোকান বন্ধ রাখার ব্যাপারে সরকার প্রদত্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নে রকাজ করছে। এছাড়া কক্সবাজার ও কুয়াকাটাসহ সব পর্যটন এলাকায় উপলক্ষে লোক সমাগম নিয়ন্ত্রণ করা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে র্যাব।
পটকা, আতশবাজিসহ আগুন দ্বারা পরিচালিত ফানুস উড়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে। আতশবাজি বা পটকা ফুটানো বা ফানুস উড়ানো বন্ধ রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুন বছর উদযাপন উপলক্ষে জনবহুল স্থানে, খোলা জায়গা বা বাসার ছাদে ও ফ্লাইওভারে কনসার্ট ও নাচ-গানের আয়োজন থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেছে সংস্থাটি।নিরাপত্তার কার্যক্রমে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। বিভিন্ন যানবাহন ও পথযাত্রীদের তল্লাশিপূর্বক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
র্যাবের টহল/চেকপোস্ট জোরদার করতে ডগ স্কোয়াড দ্বারাও তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ভিভিআইপি/ভিআইপি, বিদেশি কূটনৈতিক মিশনের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন মেগা প্রজেক্টে কর্মরত ও বাংলাদেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকদের এলাকায় গুরুত্বের সাথে নিরাপত্তা বিধান জোরদার করা হয়েছে। চক্রান্তকারী, উস্কানীদাতা৷ উগ্রবাদী সংগঠন/নিষিদ্ধ সংগঠন এবং সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের বিষয়ে আগাম তথ্য সংগ্রহপূর্বক নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও যেকোনো ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিতে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছে র্যাব।
অন্যাদিকে ভার্চুয়াল জগতে যেকোনো গুজব/মিথ্যা তথ্য ছড়ানো প্রতিরোধে র্যাব সাইবার মনিটরিং টিম অনলাইনে সার্বক্ষণিক নজরদারি অব্যাহত রেখেছে র্যাব। যারা সাইবার জগতে মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে উস্কানি দেওয়ার মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং সংঘাতকে উস্কে দেওয়ার অপচেষ্টা করবে তাদেরকে সনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। বঙ্গভবন, রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনা, সচিবালয়, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়সহ সব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও কেপিআই এর নিরাপত্তা নিশ্চিতে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
যেকোন ধরনের উচ্ছৃঙ্খলতা, মাদকাসক্ততা প্রতিরোধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং হচ্ছে। উচ্চস্বরে গাড়ির হর্ণ বাজানো ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি বা মোটরসাইকেল চালানো থেকে সংশ্লিষ্টদের কঠোরভাবে বিরত রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কোনো নারী যাতে ইভটিজিং অথবা সম্মানহানীর শিকার না হন সেদিকে বিশেষভাবে সতর্ক দৃষ্টি রেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। র্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, ডগ স্কোয়াড টিম ও ক্রাইম সিন ভ্যানকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং কৌশলগত স্থানে থেকে সার্বক্ষণিকভাবে নিরাপত্তার বিধানে নিয়োজিত রয়েছে। সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে সবার সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য।
এছাড়া এই সময়ে যেকোনো বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে জেলা/মেট্রোপলিট্রন এলাকা/থানা ভিত্তিক স্থানীয় র্যাবের সহযোগিতা পেতে টহল ইনচার্জ অথবা দায়িত্বপ্রাপ্ত র্যাব ব্যাটালিয়ন অধিনায়ককে অবহিত করণসহ র্যাবকে (র্যাব কন্ট্রোল রুমের হটলাইন নম্বরে (মোবাইল: ০১৭৭৭৭২০০২৯) জানানোর জন্য অনুরোধ করা হলো।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ
