প্লেজেন প্রোপার্টিজের সিইওর ফাঁসি চাইলেন দীপ্ত টিভির তামিমের বাবা
প্লেজেন প্রোপার্টিজের সিইও ফাইজুর আমেদ ও প্রশাসনিক ম্যানেজার ইব্রাহিম
দীপ্ত টিভির সম্প্রচার কর্মকর্তা তানজিল জাহান তামিমের বাবা তার ছেলেকে হত্যার মামলায় আসামিদের ফাঁসির দাবি করেছেন।
এ মামলার অন্যতম আসিম প্লেজেন প্রোপার্টিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অর্থাৎ সিইও ফাইজুর আমেদ। প্লেজেনের প্রশাসনিক ম্যানেজার ইব্রাহিমও আসামি।
উচ্চ আদালত থেকে ৮ সপ্তাহের জামিন পেয়েছিলেন ফাইজুর ও ইব্রাহিম। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় বুধবার বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তারা।
বুধবার (১ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালতে প্লেজেনের ফাইজুর ও ইব্রাহিমের এই জামিন শুনানি হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তামিমের বাবা মামলার বাদী সুলতান আহমেদ। তার আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করেন।
কান্নায় ভেঙে পড়ে আদালত তামিমের বাবা বলেন, “আমি আমার সন্তানকে রক্ষা করতে পারিনি। আসামিদের জামিনের বিরোধিতা করছি।”
বিচারক জাকির হোসেন গালিব প্লেজেনের ফাইজুর ও ইব্রাহিমের জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ফাইজুর ও ইব্রাহিমের পক্ষে জামিন শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার। বাদীপক্ষে আবরার খান তাসলিম জামিনের বিরোধিতা করেন।
ফাইজুর ও ইব্রাহিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশের পর আদালত প্রাঙ্গণে তামিমের বাবা সুলতান আহমেদ ছেলে হত্যার আসামিদের ফাঁসির দাবি তোলেন।
দীপ্ত টিভির সম্প্রচার কর্মকর্তা তানজিল জাহান তামিমের বাবা ও মামলার বাদী সুলতান আহমেদ
তিনি বলেন, “আমার ছেলে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই। সবার ফাঁসি হোক। কারণ আমার ব্রাইট ছেলেটাকে বাসায় এসে নির্মমভাবে হামলা করেছে। তারা বলছে, সেটেলমেন্টের জন্য আসছিল। আসলে তারা আসছিল মারার জন্য। এর আগেও একদিন আসছিল। কিন্তু সেদিন আমার ছেলে বাসায় ছিল না। সেদিন তারা হামলা করে নাই। পরদিন যখন আমার ছোট ছেলেটা গেছে তখনই হামলা করছে।
“আমাকেও আটকে রাখছে, আমার বড় ছেলেকেও আটকে রাখছে। যেন আমরা ওকে রক্ষা করত না পারি। এদিক-ওদিক মারছে যেন ও মারা যায়। পরে ও নিজে এসে মাকে বলেছে, ‘মা ওরা আমাকে অনেক মারছে। তোমরা কেউ যেও না। তোমাদেরও মারবে।’ আমি বিচার চাই। যেন এর সুষ্ঠু বিচার হয়। সবার যেন সাজা হয়, সে বিচার চাই।”
সুলতান আহমেদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই মামলায় গত ২৪ ডিসেম্বর বিএনপি নেতা শেখ রবিউল আলম রবি আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন। রবিউল আলমের জামিনে অসন্তোষ প্রকাশ করেন সুলতান আহমেদ।
তিনজন মালিকের জমি নিয়ে প্লেজেন প্রোপার্টিস একটি ভবন নির্মাণ করে। ৯ তলা ওই ভবনে ২৭টি ফ্ল্যাট ছিল। প্রত্যেক জমির মালিককে পাঁচটি করে ফ্ল্যাট দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জমির মালিক তামিমের বাবাকে মাত্র দুটি ফ্ল্যাট দেয় প্লেজেন প্রোপার্টিজ। বাকি তিনটির মধ্যে একটি ফ্ল্যাট মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তার শ্বশুরের কাছে বিক্রি করে দেন ডেভেলপার কোম্পানির মালিক।
গত ১০ অক্টোবর বাকি দুটি ফ্ল্যাটের অভ্যন্তরীণ কাজ শুরু করার সময় ২০-২৫ জন হামলা চালিয়ে ভবনের সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। তখন তামিম নিচ থেকে ফ্ল্যাটের দিকে এগিয়ে গেলে তারা তার ওপর হামলা চালায়। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় তামিমের বাবা সুলতান আহমেদ বাদী হয়ে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় ১৬ জনের নামসহ অজ্ঞাত ১১-১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঢাকা/মামুন/রাসেল