ঢাকা     শনিবার   ০৪ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২০ ১৪৩১

মোল্লা কলেজের চেয়ারম্যানসহ ৭ আসামির জামিন

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:১৪, ১ জানুয়ারি ২০২৫  
মোল্লা কলেজের চেয়ারম্যানসহ ৭ আসামির জামিন

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমানসহ ৭ আসামিকে জামিন দিয়েছেন আদালত। 

বুধবার (১ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে এ জামিন আবেদন করেন তারা। 

আসামিপক্ষে সিনিয়র আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার জামিন শুনানি করেন। দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিনের আদেশ দেন। 

জামিন পাওয়া অপর আসামিরা হলেন— মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের প্রিন্সিপাল মো. ওবায়দুল্লাহ নয়ন, ম্যানেজিং কমিটির সহ সভাপতি আফরোজা বেগম, কমিটির অভিভাবক সদস্য মাহফুজা রহমান বীনা ও ওমর ফারুক, কলেজের সহকারী অধ্যাপক কানিজ ফাতিমা সাফিয়া ও মাতুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আমিন মিয়া।

দুদক সূত্রে জানা যায়, ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে থাকা ২৪ কোটি ২৯ লাখ ৮৯ হাজার টাকার এফডিআরের কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের হিসাবরক্ষক আকরাম মিয়া। এ কারণে আকরাম মিয়ার বিরুদ্ধে ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন দুদক উপ-পরিচালক শারিকা ইসলাম। পরে তদন্তের দায়িত্ব পান সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ঈসমাইল। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।

এদিকে, তদন্তে একজন করণিকের নামে কীভাবে প্রায় ২৪ কোটি টাকার এফডিআর থাকতে পারে, ঘটনার শুরু থেকেই বিষয়টি রহস্যজনক। কলেজের দায়িত্বপ্রাপ্তরা পুরো টাকা কলেজের বলে দাবি করে আসছিল, তবে টাকার যথাযথ হিসাব দিতে তারা ব্যর্থ হয়।

যার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করে আকরাম মিয়ার পাশাপাশি আসামি হিসেবে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান মোল্লা, প্রিন্সিপাল মো. ওবায়দুল্লাহ নয়ন, ম্যানেজিং কমিটির সহ সভাপতি আফরোজা বেগম, কমিটির অভিভাবক সদস্য মাহফুজা রহমান বীনা ও ওমর ফারুক, কলেজের সহকারী অধ্যাপক কানিজ ফাতিমা সাফিয়া ও মাতুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আমিন মিয়াকে যুক্ত করা হয়।

দুদক সূত্রে জানা যায়, ড. মাহবুবুর রহমান কলেজের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. আকরাম মিয়ার নামে বেসিক ব্যাংকের মাতুয়াইল শাখায় ২০২২ সালের ৭ মার্চ পর্যন্ত পাঁচটি এফডিআর হিসাব খোলা হয়।  হিসাবগুলোতে ২৪ কোটি ২৯ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৪ টাকা স্থিতি রয়েছে। কলেজের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার নামে ব্যাংকে ওই টাকার এফডিআর হিসাব থাকার বিষয়টি অস্বাভাবিক এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ হিসেবে অর্জিত। এমনকি ওই টাকা আকরাম মিয়ার অন্যান্য হিসাব থেকেই স্থানান্তরিত হয়েছে।

আকরাম মিয়া ২০১০ সালের ১ জুন ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হিসাবরক্ষক পদে মাসিক তিন হাজার টাকা বেতনে যোগদান করেন। ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি বেসরকারি কলেজে যোগদানের পর থেকে ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত সর্বসাকুল্যে বেতন পান ৪২ লাখ ৭৩ হাজার ৩৪৩ টাকা। যা বেসিক ব্যাংকের এফডিআর হিসাবে জমা হওয়া ওই টাকার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।

এমনকি অ্যাকাউন্টে টাকাগুলো রাখার বিষয়ে তিনি ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের গভর্নিং বডির কোনো অনুমোদন বা রেকর্ডপত্র প্রদান করতে পারেনি। তাছাড়া কলেজের আয়ব্যয় খাতওয়ারি হিসাবভুক্ত করে কলেজের নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রাখার বিধান রয়েছে, তা কোনো কর্মচারীর ব্যক্তিগত হিসেবে রাখার সুযোগ নেই।

২০০৯ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের প্রবিধানমালা অনুসারে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামে নিকটবর্তী কোনো তফসিলি ব্যাংকে হিসাব থাকবে, যা গভর্নিং বডি বা ক্ষেত্রমত সদস্য-সচিবের যৌথ স্বাক্ষরে পরিচালিত হবে। আকরাম মিয়া এ সংক্রান্ত কোনো প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন।

ঢাকা/মামুন/এনএইচ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়