ঢাকা     মঙ্গলবার   ০৭ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৩ ১৪৩১

পর্নো ভিডিও প্রচার দুঃখজনক-উদ্বেগের, অনুসন্ধানের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৩১, ৫ জানুয়ারি ২০২৫  
পর্নো ভিডিও প্রচার দুঃখজনক-উদ্বেগের, অনুসন্ধানের নির্দেশ

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের মনিটরে পর্ণো ভিডিও প্রচারকে দুঃখজনক, আপত্তিকর ও গভীর উদ্বেগের বলে মন্তব্য করেছেন আদালত। ৩০ দিনের মধ্যে অনুসন্ধান করে জড়িত ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানাসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তাকে (ডিসিও) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রবিবার (৫ জানুয়ারি) ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাজুল ইসলাম সোহাগ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের স্টেনোগ্রাফার জালিজ মাহমুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, “পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০ (১)সি ধারায় স্বপ্রণোদিতভাবে আমলে নিয়ে আদালত একটি মিস মামলা রেকর্ড করেন। একইসঙ্গে প্রকাশিত ও প্রচারিত সংবাদের সরেজমিনে অনুসন্ধানপূর্বক অত্রাদেশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে জড়িত ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানাসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও), বাংলাদেশ রেলওয়ে, ঢাকাকে নির্দেশ প্রদান করেন।

অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাকে সার্বিক সহায়তা প্রদানের জন্য অফিসার ইনচার্জ, ঢাকা রেলওয়ে থানা, ঢাকা রেলওয়ে জেলাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী  ৬ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেছেন আদালত।

আদালত আদেশে বলেন, “কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় রেলস্টেশন ও রেলওয়ে জংশন। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ও ঐতিহ্যবাহী রেলস্টেশন। এই স্টেশনটি প্রতিনিয়ত লাখো মানুষের পদচারণার মুখরিত থাকে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষ রাজধানীসহ বিভিন্ন গন্তব্যস্থলে পৌঁছায়, কোমলমতি শিশুসহ আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা নির্বিশেষে সবাই সাময়িক সময়ের জন্য এ স্টেশনে অবস্থান করে থাকেন। স্টেশনের বিভিন্ন জায়গায় বেশ বড় আকারে ডিজিটাল ডিসপ্লে বা বোর্ড রয়েছে যেটিতে বিভিন্ন আন্তঃনগর ও লোকাল ট্রেনের সময়সূচি প্রকাশ ও বাণিজ্যিক প্রচারণা চালানো হয়। উক্ত বাণিজ্যিক প্রচারণা নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ করার জন্য একজন বাণিজ্যিক কর্মকর্তা ওই বিভাগে নিযুক্ত থাকেন।

কিন্তু কমলাপুর রেলস্টেশনের মত স্পর্শকাতর জায়গায় পর্নো ভিডিও প্রচারিত হওয়াটা অত্যন্ত দুঃখজনক, আপত্তিকর ও গভীর উদ্বেগের। উক্ত বিষয়টি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনাসহ ব্যর্থতা প্রকাশ করে। এতে আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটসহ দেশে-বিদেশে অবস্থানরত ও বসবাসরত বিভিন্ন মানুষের নিকট ভুল বার্তা প্রেরণ করে। তদুপরি, অদ্যাবধি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি কোনো ফলপ্রসূ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে মর্মে পরিলক্ষিত হয় না।

এটি স্পষ্ট যে, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে অপরাধের শামিল অপ্রীতিকর ও আপত্তিকর যে ঘটনা ঘটেছে সেটি একটি অপরাধ এবং উক্ত অপরাধে জড়িত অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা আবশ্যক মর্মে গোচরীভূত হয়। কিন্তু অদ্যাবধি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো অপরাধীকে সনাক্ত করতে পারেননি বা উক্ত ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে পারেননি। যার ফলে উক্ত বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসন্ধান হওয়া আবশ্যক।

অর্থাৎ একজন ম্যাজিস্ট্রেট কোন পুলিশ অফিসার ব্যতিত অন্য কোথাও হতে প্রাপ্ত তথ্য অথবা নিজস্ব জ্ঞান অথবা সন্দেহের ভিত্তিতে যে কোনো অপরাধ আমলে নিতে পারেন। ফলে, সার্বিক বিবেচনায় The Code of Criminal Procedure, 1898 এর Section 190 (1) (c) অনুযায়ী বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত ও প্রচারিত সংবাদটি আমলযোগ্য অপরাধের সংবাদ হিসেবে বিচারিক বিবেচনায় গ্রহণ করা হলো।মিডিয়ায় প্রকাশিত ও প্রচারিত সংবাদের সত্যতা নিরুপণের জন্য অনুসন্ধান হওয়া আবশ্যক মর্মে প্রতীয়মান হয়।

ঢাকা/মামুন/এসবি


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়