ঢাকা     বুধবার   ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৪ ১৪৩১

নাফিজ সারাফাতের পরিবারের সম্পদ ক্রোকের আদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০১, ৭ জানুয়ারি ২০২৫  
নাফিজ সারাফাতের পরিবারের সম্পদ ক্রোকের আদেশ

চৌধুরী নাফিজ সারাফাত (সংগৃহীত ছবি)

পদ্মা ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সারাফাত, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহিদ ও ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সারাফাতের নামে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় থাকা ১৮টি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও নাফিজ সারাফাত ও আঞ্জুমান আরা শহিদের নামে থাকা জমিসহ বাড়ি ও প্লট ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন (গালিব) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের কোর্ট পরিদর্শক আমির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

নাফিজ সারাফাতের যেসব সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়েছে, সেসবের মধ্যে আছে—
রাজধানীর গুলশানে ২০ তলা বাড়ি, গুলশানের একটি ফ্ল্যাট, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বাজারে চারটি ফ্ল্যাট, নিকুঞ্জ উত্তর আবাসিক এলাকায় একটি ফ্ল্যাট, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি ফ্ল্যাটের ৫০ শতাংশ, নিকুঞ্জে দুটি প্লট, বাড্ডার কাঠালদিয়ায় আড়াই কাঠার প্লট, গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ১০ কাঠা করে ২০ কাঠা জমি, গাজীপুর সদরে ৮. ২৫ শতাংশ জমি, নিকুঞ্জরের জোয়ার সাহারায় ৪.৯৫ শতাংশ জমি এবং নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জের পূর্বাচলে সাড়ে ৭ কাঠার প্লট।

আঞ্জুমান আরা শহিদের নামে থাকা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সাড়ে ৭ কাঠা জমির ওপর চারতলা বাড়ি, পান্থপথে একটি ফ্ল্যাট, গুলশান লিংক রোডে একটি ফ্ল্যাট, মিরপুর ডিওএইচএসে একটি ফ্ল্যাট, শাহজাদপুরে একটি ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি ফ্ল্যাটের ৫০ শতাংশ, নিকুঞ্জে ৩ কাঠা জমি, বাড্ডার কাঠালদিয়া আড়াই কাঠা নাল জমি ও গাজীপুর সদরে ৮.২৫ শতাংশ চালা জমি ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

রাহিব সাফওয়ান সারাফাতের নামে বনানীতে থাকা তিনটি ও বারিধারায় থাকা চারটি ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। 

দুদকের অনুসন্ধান দলের প্রধান ও কমিশনের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান এসব স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, নাফিজ সারাফাত ও অন্যদের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা ও একে অপরের যোগসাজশে প্রায় ৮৮৭ কোটি টাকা আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিষয়ে সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চৌধুরী নাফিজ সারাফাত, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহিদ এবং ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সারাফাতের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাবর সম্পত্তির তথ্য পাওয়া গেছে এবং তারা পলাতক আছেন। 

স্থাবর সম্পত্তিগুলো মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে সম্পৃক্ত অপরাধ তথা দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত/বৈধ আয়বহির্ভূতভাবে অর্জন করা হয়েছে মর্মে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। নাফিজ সারাফাত ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে সম্পদ অর্জনের বিষয়টি মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও (৩) ধারা মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধান শুরু করার পর থেকে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা স্থাবর সম্পত্তিসমূহ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর, বন্ধক বা বেহাত করার জন্য বিভিন্ন প্রচেষ্টা করছেন মর্মে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগগুলো সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে অভিযোগের সাথে সংশ্লিষ্ট এসব স্থাবর সম্পত্তি অবিলম্বে ক্রোক করা আবশ্যক।

দুদেকর পক্ষে মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন। পরে আদালত চৌধুরী নাফিজ সারাফাত ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন।

ঢাকা/মামুন/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়