ঢাকা     বুধবার   ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৪ ১৪৩১

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল: যেভাবে সাজানো হয়েছে এজলাস

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০৯, ৭ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ১৮:৫৩, ৭ জানুয়ারি ২০২৫
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল: যেভাবে সাজানো হয়েছে এজলাস

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ সংস্কার করা নতুন ভবনটি উদ্বোধন করেন।

‘জুলাই-আগস্ট গণহত্যার’ বিচার করতে সংস্কার করা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মূল ভবন ও এজলাস কক্ষ উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ সংস্কার করা নতুন ভবনটি উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনের পর এজলাস কক্ষ ঘুরে দেখেন প্রধান বিচারপতি। এ সময় তার সঙ্গে ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি ও প্রসিকিউটরা উপস্থিত ছিলেন। পরে গণমাধ্যমকর্মীরা ট্রাইব্যুনালে প্রবেশ করেন। এজলাসে উন্মুক্ত ছিল ছবি তোলা, ভিডিও করা। অনেককে ছবি তুলতে ও ভিডিও করতে দেখা গেছে। ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান করে প্রধান বিচারপতি পুরো ট্রাইব্যুনাল ঘুরে দেখেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এজলাস ঘুরে দেখা যায়, দোতলা বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় ট্রাইব্যুনালের এজলাস কক্ষ। বিশালাকার এজলাস কক্ষে তিন বিচারপতির জন্য তিনটি চেয়ার স্থাপন করা হয়েছে। সামনে রয়েছে তিনটি মনিটরও। সামনের পাঁচটা চেয়ার রাখা হয়েছে বেঞ্চ অফিসার ও পারসোনাল অফিসারদের জন্য। আইনজীবীদের জন্য বড়সড় একটা ডায়াস রাখা হয়েছে বিচারপতিদের ঠিক সামনেই। বিচারপতিদের ডান পাশে সাক্ষীর কাঠগড়া রাখা হয়েছে। যেখানে দাঁড়িয়ে সাক্ষীরা সাক্ষ্য দেবেন।

একসঙ্গে চারজন বসতে পারেন, এমন ১৫টি বেঞ্চ রাখা হয়েছে। এজলাসের দুই পাশে দুইটি বড় মনিটর স্থাপন করা হয়েছে। আসামিদের বসার স্থান রাখা হয়েছে এজলাসে প্রবেশ করেই ঠিক বামপাশেই। সেখানে ১৫টি চেয়ার রাখা হয়েছে আসামিদের বসার জন্য। সামনেই রয়েছে একটা ছোট মনিটর। নিরাপত্তার স্বার্থে পুরো এজলাস কক্ষে পাঁচটি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।

উদ্বোধনের পর এজলাস কক্ষ ঘুরে দেখেন প্রধান বিচারপতি


প্রধান বিচারপতি রেফাত আহমেদ বলেন, ‘‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংস্কারকৃত মূল ভবন ও এজলাস কক্ষ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে নতুন যুগের সূচনা হল।’’

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ‘‘এই ভূ-খণ্ডের বিচার বিভাগীয় ইতিহাসে ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি ‘ঢাকা হাইকোর্ট’ বা ‘পুরাতন হাইকোর্ট ভবন’ হিসেবে যে মহান ঐতিহ্য ধারণ করে আছে; ২০২৪ এর জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনয়ন, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ও ন্যায়বিচারের শাশ্বত নীতিসমূহের অনুসরণের মাধ্যমে তা নতুন মাত্রায় পূর্ণতা পাবে।’’

ট্রাইব্যুনালের প্রতি প্রত্যাশা জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘যে একজন সাধারণ নাগরিক তার হৃদয় উৎসারিত অকৃত্রিম চেতনাবোধ থেকে সমগ্র জাতির নৈতিক সমর্থনপুষ্ট একটি গণজোয়ার রুখতে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রতি যে প্রত্যাশা রাখেন, আমিও ঠিক অনুরূপ প্রত্যাশা রাখি।’’

১৯০৫ সালে ‘গভর্নর হাউজ’ হিসেবে যাত্রা করা ‘পুরাতন হাইকোর্ট’ হিসেবে পরিচিত এই ভবনটির সংস্কার কাজ শেষে উদ্বোধনের পর এখানে চলবে জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকাজ।

গত বছরের অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পুরোনো এই ভবনটির সংস্কারে কাজ শুরু করে অন্তর্বর্তী সরকার। ট্রাইব্যুনালের অবকাঠামো আন্তর্জাতিক মানের করতে এই সংস্কারে সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।

ঢাকা/এনএইচ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়