ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৯ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৬ ১৪৩১

বকশীবাজারে অস্থায়ী আদালতের এজলাস কক্ষে আগুন

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:১১, ৯ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ১৩:০৫, ৯ জানুয়ারি ২০২৫
বকশীবাজারে অস্থায়ী আদালতের এজলাস কক্ষে আগুন

আগুনে পুড়ে গেছে আদালতের এজলাস কক্ষ (ছবি: মামুন খান)

ঢাকার বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালত বন্ধের দাবিতে রাত থেকে বিক্ষোভের মধ্যে ভোরে এজলাস কক্ষ আগুনে পুড়ে গেছে। তবে কীভাবে এই আগুনের সূত্রপাত তা এখনও পরিষ্কার হওয়া যায়নি।

বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) ভোরে এজলাস কক্ষে আগুন লাগে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

লালবাগ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, “ভোরে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। আগুনে এজলাস কক্ষের চেয়ার, টেবিল, এসিসহ সব কিছু পুড়ে গেছে।” আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, ভোরে বহিরাগতরা এসে আদালতের এজলাস কক্ষে আগুন দিয়েছে। 

এদিকে, পোড়া এজলাস কক্ষ পরিদর্শন করেছেন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক ইব্রাহিম মিয়া। আজ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আদালত পরিদর্শন করেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে প্রসিকিউশন টিম, আইনজীবী ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও ছিলেন।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাত থেকে শিক্ষার্থীরা আলিয়া মাদ্রসা মাঠে অবস্থান নেন। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকালে তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মোড়, পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার, বকশিবাজার অরফানেজ রোড ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দিয়েছেন। পরে পরিস্থিতে নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে যান সেনবাহিনী ও পুলিশ।

শিক্ষার্থীদের দাবি, বিচার কাজ চলমান থাকলে শিক্ষা কার্যক্রম বিঘ্ন হয়। এর আগে বেশ কয়েকবার মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দেওয়ার পরও সমাধান হয়নি।

আগুনে এজলাস কক্ষের চেয়ার টেবিল পুড়ে গেছে (ছবি: মামুন খান)


 আজ এই আদালতে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিস্ফোরক আইনের মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। তবে আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এজলাস কক্ষ পুড়ে যাওয়ায় আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব না। 

এদিকে, বিডিআর পরিবারের সদস্যরা শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন। তারা জানান, গত ২৮ নভেম্বর এ মামলার জামিন শুনানি করেনি আদালত। কারণ দেখিয়েছিল আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে শুনানি হবে, প্রজ্ঞাপন জারি হবে। আজ আদালতের কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় তারা হতাশা প্রকাশ করেন। 

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন।

এ ঘটনার পর সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিডিআরের নাম বদলে যায়, পরিবর্তন আসে পোশাকেও। এ বাহিনীর নাম এখন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি।

বিদ্রোহের বিচার বিজিবির আদালতে হলেও হত্যাকাণ্ডের মামলা বিচারের জন্য আসে প্রচলিত আদালতে। এই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে মুক্তি আটকে আছেন ৪৬৮ বিডিআর সদস্যের।

হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। তাতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।

২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ও হয়ে যায় হাই কোর্টে। তাতে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। আরো ২২৮ জনকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। খালাস পান ২৮৩ জন।
 

ঢাকা/মামুন/ইভা 


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়