সীমান্ত সম্ভারে স্বর্ণের দোকানে চাঞ্চল্যকর চুরির রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ৩

ধানমণ্ডিতে সীমান্ত সম্ভারে স্বর্ণের দোকানে চাঞ্চল্যকর চুরির রহস্য উদঘাটন ও চোরাই স্বর্ণালংকার উদ্ধারসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির ডিবি-লালবাগ বিভাগ।  

রবিবার (১২ জানুয়ারি)  সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ডিবি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মো. নাসিরউদ্দিন এ তথ্য জানান। 

তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) থেকে শনিবার (১১ জানুয়ারি) পর্যন্ত ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে কুমিল্লা জেলার কোম্পানীগঞ্জ ও মুরাগনগর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবি-লালবাগ বিভাগ। এসময় তাদের কাছ থেকে চুরি হওয়া সর্বমোট ৫০ ভরি আট আনা স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।”  

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. রুবেল, সফিক ওরফে সোহেল ও সাদ্দাম হোসেন।

ডিবি-লালবাগ জানায়,  শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে ধানমন্ডি মডেল থানার বিজিবি সীমান্ত সম্ভার শপিং কমপ্লেক্স এর গ্রাউন্ড ফ্লোরের ‘ক্রাউন ডায়মন্ড এন্ড জুয়েলার্স’(দোকান নং ০১৪ ও ০১৫) শো-রুমে চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উক্ত শো-রুমের মালিক কাজী আকাশ বাদি হয়ে ধানমন্ডি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তিনি মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন অজ্ঞাতনামা চোরেরা শো-রুমের তালা কেটে ভিতরে প্রবেশ করে ১৫৯ ভরি বিভিন্ন ধরণের স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যায়। যার আনুমানিক মূল্য দুই কোটি পঞ্চাশ লক্ষ আটাশ হাজার আটশত টাকা। 

এ ঘটনা ও মামলা দায়েরের পর থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকার উদ্ধারে তদন্ত আরম্ভ করে। গোয়েন্দা বিভাগ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে। ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায়, এক অভিনব পদ্ধতিতে শো-রুমের সাটার কেটে ভিতরে প্রবেশ করে মাত্র আট মিনিটের মধ্যে স্বর্ণালংকারসহ সংঘবদ্ধ চোরচক্র পালিয়ে যায়। উক্ত দলের একজন একটি চাদর দিয়ে দোকানের সামনে শেড তৈরি করে এবং অপর একজন দ্রুত সাটারের তালা কাটে। তৃতীয় এক ব্যক্তি শোরুমে প্রবেশ করে ডিসপ্লে থেকে স্বর্ণালংকার বের করে একটি হ্যাভারসেক ব্যাগে ভর্তি করে দ্রুত বের হয়ে আসে। এছাড়া আরো কয়েকজনকে শোরুমের চারপাশে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। 

ভিডিও ফুটেজে প্রাপ্ত ছবির সাথে প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ এবং অন্যান্য গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ গত ৯ জানুয়ারি অভিযান শুরু করে। অভিযানে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম আসার পথে মো. রুবেল নামে একজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পরবর্তীতে কুমিল্লার দেবিদ্বার বাজার সংলগ্ন নিউমার্কেট এলাকা থেকে সফিক ওরফে সোহেলকে হেফাজতে নেওয়া হয়। 

তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানা এলাকার কোম্পানীগঞ্জ বাজারের একটি জুয়েলারি দোকান থেকে ২৮ ভরি ১৪ আনা চুরি যাওয়া স্বর্ণালংকার এবং ২১ ভরি ১০ আনা চুরি যাওয়া স্বর্ণালংকারের গলিত স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। এসময় সেখান থেকে সাদ্দাম হোসেন (৩১) নামে আরও এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিবি পুলিশ কর্তৃক চুরির ঘটনায় জড়িত মোট তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক সর্বমোট ৫০ ভরি আট আনা চুরি হওয়া স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত স্বর্ণের আনুমানিক মূল্য ৭০ লক্ষ টাকা।  ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট চক্র শনাক্ত করা হয়েছে।