ঢাকা     শুক্রবার   ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ||  মাঘ ১৭ ১৪৩১

বিদিশার ১০০ কোটি টাকার মানহানি মামলা 

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৪৩, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ২৩:০০, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫
বিদিশার ১০০ কোটি টাকার মানহানি মামলা 

কা‌জী মামুন, বি‌দিশা এরশাদ ও শাহাতা জারাব এরিক

মানহানি বক্তব্য দিয়ে ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি করার অভিযোগে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিক ঢাকার আদালতে মামলা করেছেন। 

মামলায় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্টের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী মো. মামুনুর রশিদসহ তিন জনকে আসামি করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তারের আদালতে এ মামলা করা হয়। শুনানি শেষে মামলার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ডিবি পুলিশকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। 

বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. নজরুল ইসলাম সরদার এ তথ্য জানান। 

অন্য আসামিরা হলেন- হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্টের সাবেক সদস্য ফখর-উজ-জামান জাহাঙ্গীর ও মনিরুজ্জামান টিপু। 

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা গত ২২ জানুয়ারি সকাল ১১টায় সাংবাদিক সম্মেলন করে বিদিশা সিদ্দিক এবং তার পুত্র সন্তান শাহাতা জারাব এরিক এরশাদের বিরুদ্ধে মানহানি, আপত্তিকর বিভ্রান্তিকর অপমানজনক মিথ্যা বক্তব্য প্রদান করেন।

এর আগে ২১ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্ট’ সংক্রান্ত অনিয়ম নিরসনে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের জন্য দরখাস্ত করেন এরিক এরশাদ। এতে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশেতাকে সামাজিকভাবে হেয়-প্রতিপন্ন করতে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে। 

অভিযোগে আরো বলা হয়, একাধিকবার কাজী মো. মামুনুর রশিদ এবং ফখর-উজ-জামান জাহাঙ্গীরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তারা সময়ক্ষেপণ ও তালবাহানা করছেন। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ট্রাস্টের হিসাব বুঝিয়ে দেননি। তারা ট্রাস্টের অনিয়মকে বৈধ করার জন্য বেআইনিভাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। কাজী মো. মামুনুর রশিদ দীর্ঘদিন ধরে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ট্রাস্টের অর্থ ইচ্ছামত নিয়ম বহির্ভূতভাবে খরচ করে আসছে। এরিক এরশাদ অসুস্থতা থাকা সত্ত্বেও ট্রাস্টের সভাপতি ও সদস্যরা তাকে অর্থ প্রদান না করে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের ট্রাস্টের অর্থ লুটপাট করেছে।

এসবের প্রতিবাদ করায় বিদিশা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আসামিরা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে অপমানজনক বক্তব্য দেন। এতে তাকে কলঙ্কিত ও কালিমা লেপন করা হয়েছে। বিদিশা ও তার ছেলে এরিক এরশাদ জাতীয়, আন্তর্জাতিকভাবে, সামাজিকভাবে এবং মানসিকভাবে মারাত্মক অপমানিত এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার ক্ষতির পরিমাণ ১০০ কোটি টাকা। বিদিশার সুনাম, সুখ্যাতি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে সংবাদ সম্মেলন করে তার ব্যক্তিগত সুনাম বিনষ্ট করে। তিনি মানসিক, আর্থিক, সামাজিকভাবে হেয়-প্রতিপন্ন ও সম্মানহানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগে বলা হয়।

মামলার কথা স্বীকার ক‌রে বা‌দি বি‌দিশা এরশাদ ব‌লেন, ‍“ট্রা‌স্টের সম্পদ কু‌ক্ষিগত ক‌রে আসা‌মি কা‌জি মামুন আমার ছে‌লের জীবন ঝুঁকির ম‌ধ্যে ফে‌লে দি‌য়ে‌ছে। তারা সম্পদ কু‌ক্ষিগত ক‌রে ভাত কাপ‌ড় ও চি‌কিৎসা‌ সেবা থে‌কে শুধু ব‌ঞ্চিত ক‌রে‌নি, তারা ট্রাস্ট দখলে রাখ‌তে আমার না‌মে আ‌জেবা‌জে কথা ছড়া‌চ্ছে। সংবাদ স‌ম্মেলন ক‌রে কা‌জি মামুন ট্রাস্ট থে‌কে পদত্যাগ করার কথা ঘোষণা কর‌লেও আমার না‌মে মানহা‌নিকর অসত্য বক্তব্য দি‌য়েছে। যা বি‌ভিন্ন পত্র-প‌ত্রিকায় প্রকা‌শিত হ‌য়ে‌ছে। এ‌তে আমার সামা‌জিক মর্যাদা ও ভাবমূ‌র্তি ক্ষুণ্ন হ‌য়ে‌ছে। আ‌মি কা‌জি মামুনদের দৃষ্টান্তমূলক শা‌স্তির জন্য আদাল‌তে মানহা‌নিকর মামলা ক‌রে‌ছি।”

বিদিশা ব‌লেন, “কা‌জি মামুন‌ একজন বাটপার, দুর্নী‌তিবাজ। একজন নী‌রিহ ম‌হিলাকে চাক‌রি দেওয়ার না‌মে ধর্ষণ ক‌রে। ওই মামলায় কয়‌দিন আ‌গে জেল থে‌কে বে‌রি‌য়ে‌ সে আবারও অপক‌র্মে লিপ্ত।”

বি‌দিশার প‌ক্ষে মামলা প‌রিচালনা ক‌রেন অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম। রা‌তে তি‌নি ব‌লেন, “আসা‌মিদের বিরু‌দ্ধে একশ কো‌টি টাকার মানহা‌নির অ‌ভি‌যোগ আনা হ‌য়ে‌ছে। মামলা আম‌লে নি‌য়ে আদালত অ‌ভি‌যোগ তদ‌ন্তে গো‌য়েন্দা পু‌লিশ‌কে নি‌র্দেশ দি‌য়ে‌ছেন।”

এর আ‌গে কা‌জি মামুন গত  ২২ জানুয়া‌রি এক সংবাদ স‌ম্মেল‌নে হু‌সেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্ট থে‌কে ‌স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করার ঘোষণা দেন। তি‌নি ব‌লেন, “ট্রা‌স্টের পুনর্গঠন স্বা‌র্থে আজ বিকাল থে‌কে আ‌মি ট্রাস্টের সদস্য থে‌কে পদত্যাগ করলাম।”

ঢাকা/মামুন/নঈমুদ্দীন/এনএইচ/এসবি


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়