অফিস রোমান্স কতটা নিরাপদ?
প্রতীকী ছবি
অফিসে সহকর্মীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ানো একই সঙ্গে ভয়ংকর ও আনন্দদায়কও হতে পারে। এক্ষেত্রে একটি বড় উদাহরণ সাবেক আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও তার অফিসের ইন্টার্ন মনিকা লিওনেস্কির কাহিনি। ওই ঘটনায় ক্লিনটনের প্রেসিডেন্ট পদও সংকটে পড়ে গিয়েছিল। ক্লিনটন পরে মনিকার সাথে ‘অনৈতিক সম্পর্ক’ ছিল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছিলেন।
অফিস রোমান্স কেবল তিক্ত অভিজ্ঞতাই হয় তা নয়, সুখকরও হতে পারে। আরেকটি এমন ঘটনা হলো বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি বিল গেটস ও মেলিন্ডা গেটসের সম্পর্ক। মাইক্রোসফট কোম্পানিতে ১৯৮৭ তে কাজ শুরু করেন মেলিন্ডা। এরপর বিল গেটসের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই জুটি ১৯৯৪ সালে বিয়ে করেন। দুটোই বিশাল উদাহরণ। তবে অফিস রোমান্সের এমন অনেক ঘটনাই আছে। এখন দেশ-বিদেশের অনেক অফিসেই সহকর্মীদের প্রেমের সম্পর্ক বিষয়ে জানা যায়। হয়তো আপনার অফিসেও আছে প্রেমিক জুটি। তবে প্রশ্ন হলো অফিসে প্রেমের সম্পর্কে জড়ানো কতোটা নিরাপদ?
ভালো-মন্দ দু’দিকই আছে: অফিসে সহকর্মীর সাথে রোমান্স করার বিষয়টাতে ভালো ও মন্দ দু’দিকই বিদ্যমান। কারো কারো ক্ষেত্রে অফিসে রোমান্স বেশ আনন্দদায়ক হলেও অনেকের জন্যই তা এক চোরাবালির মতো, ধীরে ধীরে ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে পারে। যদি আপনি কোনো সহকর্মীর প্রতি বেশি অনুরক্ত হন এবং তাকে ডেটে বাইরে নিয়ে যেতে চান, তাহলে এর ভালো-মন্দ দু’দিকই বিবেচনা করুন।
অনুভূতিটা উভয় পক্ষের হওয়া উচিত: কোনো সহকর্মীকে আপনি ভালোবাসতেই পারেন, তবে এক্ষেত্রে ওই সহকর্মীও কি আপনাকে ভালোবাসে? এ বিষয়টা আগে স্পষ্ট বুঝে নিন। যদি বুঝতে পারেন ওই সহকর্মীও আপনাকে ভালোবাসে, তাহলে আপনি ভাগ্যবান। আর যদি ওই সহকর্মী প্রত্যাখ্যান করেন, তবে তা মেনে নিন সুন্দরভাবে। যদি প্রত্যাখ্যাত হয়ে আবারো ভালোবাসতে বাধ্য করেন ওই সহকর্মীকে, তাহলে বিষয়টি যেমন বোকামি, তেমনি এতে আপনার চাকরিও হারাতে হতে পারে।
আপনার অফিস কি তা মেনে নেবে?: সহকর্মীর সাথে ডেট করার আগে এটা জেনে নিন তা আপনার অফিস পলিসির বিরুদ্ধে যাচ্ছে কি না। যদি বুঝে থাকেন, অফিসের পলিসির বিরুদ্ধে কিছু করছেন না, তাহলে আপনার হৃদয়কে ভালোবাসার সুযোগ দিতেই পারেন।
পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবন আলাদা রাখুন: অফিস রোমান্সের অন্যতম খারাপ দিক হলো এক্ষেত্রে পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবন আলাদা করা যায় না। তবে যারা এই বিষয়টা বুদ্ধিমত্তার সাথে উৎরে যেতে পারেন, তারাই অফিসে রোমান্স করার ক্ষেত্রে সফল হন।
কাজের কি ক্ষতি হচ্ছে?: যাকে ভালোবাসেন আপনি, তার আশেপাশে থাকলে আপনার মন উড়ু-উড়ু থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে অফিসে ভালোবাসার মানুষ পাশে থাকলে কাজের ব্যাঘাত ঘটতে পারে, তা খেয়াল রাখুন।
গুজব সামলাতে পারবেন তো?: অফিসে দুই সহকর্মীর প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে অন্য সহকর্মীরা গুজবে মাততে পারে। এই বিষয়টা সামলাতে পারবেন তো আপনি? এমনকি এমন সব কথাও আপনি শুনতে পারেন, যা খুব অসত্য ও পীড়াদায়ক।
পরিস্থিতি ঘোলাটেও হতে পারে: এখন সময়টা ‘হ্যাশ মি টু’এর। তাই কোনো নারী কলিগ যদি তার পুরুষ কলিগের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলে, সেটাই বিশ্বাস করবে সবাই। এক্ষেত্রে কলিগের সাথে প্রেমের সম্পর্ক যদি ঠিকঠাক না এগোয়, ভাঙ্গন ধরে, তাহলে পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে যেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে অপরাধী না হয়েও প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারেন আপনি, এ বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে আপনাকে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
রাইজিংবিডি.কম