ঢাকা     মঙ্গলবার   ০৫ নভেম্বর ২০২৪ ||  কার্তিক ২১ ১৪৩১

চুলের যত্নে চাল ধোয়া পানি কতটা উপকারী?

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪১, ২৩ মার্চ ২০২১   আপডেট: ১২:৫৪, ২৩ মার্চ ২০২১
চুলের যত্নে চাল ধোয়া পানি কতটা উপকারী?

শত বছর ধরে এশিয়ার অনেক দেশে চুল ও ত্বকের যত্নে চাল ধোয়া পানি ব্যবহার করা হচ্ছে। জাপানে নারীরা চুল দীঘল ও নমনীয় করতে চালের পানি দিয়ে চুল ধুতেন। ভারতের আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে একজিমার চিকিৎসা হিসেবে চাল ধোয়া পানি ব্যবহার করা হতো। কিন্তু আধুনিক সময়ে আপনার মনে সন্দেহ থাকতে পারে যে, চাল ধোয়া পানি কি আসলেই ত্বক ও চুলের উপকার করতে পারে? 

নিউ ইয়র্ক সিটির কসমেটিক ডার্মাটোলজিস্ট মিশেল গ্রিন বলেন, ‘চাল ধোয়া পানিতে প্রচুর পরিমাণে এমন ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে যা চুলের বিকাশসাধন ও সৌন্দর্য বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। এসব পুষ্টি চুলের গ্রন্থি মজবুত করে, চুলের ঘনত্ব বাড়ায়, সুস্থ রাখে ও উজ্জ্বল দেখায়।’ ডা. গ্রিনের মতে, সব ধরনের চুলে চাল ধোয়া পানি ব্যবহার করা যেতে পারে।

তবে মতভেদ রয়েছে যে, চাল ধোয়া পানি চুলের ক্ষতিও করতে পারে। হ্যাঁ, এটি লো পোরোসিটির ক্ষেত্রে সত্য হতে পারে। পোরোসিটি মানে হলো, একজন মানুষের চুল কতটা আর্দ্রতা শোষণ করতে পারে তার পরিমাণ। গোসলের সময় চুল ভিজতে দেরি হলে অথবা সহজে কন্ডিশনার শোষণ না হলে ধরে নিতে পারেন যে পোরোসিটি কম। লো পোরোসিটি শনাক্তের আরেকটি উপায় হলো, চুলে কিছু ব্যবহার করলে জমে থাকা। এক বাটি পানিতে চুল রেখেও পোরোসিটির মাত্রা নির্ণয় করতে পারেন। কক্ষ তাপমাত্রার পানিতে চুল কয়েক মিনিট ভেসে থাকলে বুঝে নিতে পারেন পোরোসিটি কম। সুতরাং চাল ধোয়া পানি ব্যবহারে আপনার চুল কুঁকড়ে গেলে এড়িয়ে চলাই ভালো।

আপনি চাল ধোয়া পানির পরিবর্তে ভাতের মাড়ও ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু ডা. গ্রিনের মতে, চুলের যত্নে ভাতের মাড়ের চেয়ে গাঁজানো চালের পানি বেশি কার্যকর হতে পারে। এর কারণ, গাঁজনের সময় পিটারিয়া নামক বাইপ্রোডাক্ট উৎপন্ন হয়, যেখানে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও মিনারেল থাকে।

এই পানীয় তৈরি করতে প্রথমে চাল ভালোভাবে ধুয়ে নোংরা, বিষাক্ত পদার্থ বা কীটনাশক দূর করতে হবে। এরপর দুই বা তিন কাপ পানিতে এককাপ চাল একদিন ভিজিয়ে রাখুন। তারপর ফ্রিজে সংরক্ষণ করে তিনদিনের মধ্যে ব্যবহার করুন। গাঁজনকৃত চালের পানিতে কড়া গন্ধ থাকে। গন্ধ দূর করতে কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল মেশাতে পারেন অথবা কমলা বা লেবুর খোসা দিতে পারেন।

আপনি শ্যাম্পুর পরিবর্তে বা চুল ধোয়ার পর চালের পানি ব্যবহার করতে পারেন। মাথার ত্বকে এই পানি ঢেলে ম্যাসাজ করুন এবং অবশিষ্ট চুল ভিজিয়ে নিন। ৩০ মিনিট পর সাধারণ পানিতে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে এক বা দুই বার ব্যবহার করুন। দ্রুত পরিবর্তন দেখতে উৎসুক হবেন না, ধৈর্য ধরুন। যদি মনে করেন, চাল ধোয়া পানি আপনার চুলের জন্য উপযুক্ত নয়, তাহলে ব্যবহার বন্ধ করে দিন। 

ফিরোজ/তারা


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়