মোটা অঙ্কের টাকা ধার দিচ্ছেন, বিপদ এড়াতে আইনজীবীর পরামর্শ জানুন
ছবি: প্রতীকী
জীবনে চলার পথে নানা সময় আমরা বিভিন্ন বিপদের সম্মুখীন হই। কখনো সেই সমস্যাটা হয় আর্থিক। আর্থিক সংকটকালে আমরা অনেকের কাছ থেকে টাকা ধার নেই। আবার এর বিপরীত ঘটনাও ঘটে। অনেক সময় দেখা যায় যে কোন আত্মীয় বা বন্ধু টাকা ধার নিলেন এবং নির্দিষ্ট সময়ে ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের পরেও টাকা ফেরত দিতে চান না, নানান টালবাহানা করেন। অনেক সময় অনেকে অস্বীকারও করেন। এতে অনেকেই বিপদে পড়েন। কাউকে টাকা ধার দেওয়ার সময় যেসব বিষয় করণীয় এ ব্যাপারে রাইজিংবিডির সাথে কথা বলেছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আঞ্জুমান আরা লিমা।
তিনি বলেন, ‘কেউ যখন আমাদের কাছে এই ধরনের সমস্যা নিয়ে আসে তখন আমরা আইনজীবীরা প্রথমেই জানতে চাই যে টাকা ধার দেওয়ার সময় কোনো ডকুমেন্টস আছে কিনা কিংবা কোনো লিখিত বা কেউ সাক্ষী রয়েছেন কিনা। যখন কেউ বলে এসব আছে তখন আমাদের জন্য আইনি প্রক্রিয়ায় কাজ করা সহজ হয়। আবার অনেকেই এসে বলে তিনি তো আমার একেবারে কাছের মানুষ৷ সেজন্য কোনো লিখিত ডকুমেন্টস নেই কিংবা সাক্ষীও নেই। এর আগেও অনেকবার টাকা ধার নিয়েছেন কিন্তু এখন ফেরত দিতে চাচ্ছেন না। তখন আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধান করা একটু কঠিন হয়।’
টাকা ধার দেওয়ার সঠিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে এই আইনজীবী বলেন, ‘আপনারা যখনই যে কাউকে টাকা ধার দেবেন সেটা ফ্যামিলির কেউ হউক বা বাইরের হউক যদি একটা স্ট্যাম্পে কন্ডিশন ও প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে কয়েকজন সাক্ষীর সই রাখেন; পরবর্তীতে কিন্তু সমস্যা হয় না। অনেকেই আবার ভাবেন যে, আমার ফ্যামিলির মানুষ বা কাছের মানুষকে টাকা দিবো যদি কোনো চুক্তি বা স্ট্যাম্পে সই করতে বলি তবে তো মনে কষ্ট পাবে, সম্পর্ক খারাপ হবে। আসলে এটা একটা ভুল ধারণা, আপনি যদি টাকা ধার নেন তবুও এভাবে সাক্ষী রেখে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ধার নেবেন। সাক্ষী দুজনের বেশি রাখাই ভালো। এতে করে সম্পর্ক নষ্ট হবে না সম্পর্ক আরও ভালো হবে ভবিষ্যতে।’
আঞ্জুমান আরা লিমার পরামর্শ অনুযায়ী জেনে নিন টাকা ধার দেওয়ার সময় কোন কাজ করবেন না—
অনেকেই টাকা ধার নেওয়ার জন্য ফাঁকা চেক দিয়ে থাকেন যেটি একেবারে ভুল কাজ। আপনি কারো কাছে ৫ লাখ টাকা নিয়ে চেক দিলেন ফাঁকা এরপর একটা নির্দিষ্ট সময় পর আপনি টাকা দিতে না পারলে সে আপনার নামে ১০ বা ১৫ লাখ টাকা লিখে মামলা করলো তখন আপনারা বিপদে পড়বেন। ভুলেও এসব কাজে ফাঁকা চেক দেবেন না। কখনো দিলেও সেটার প্রয়োজনীয় শর্ত স্ট্যাম্পে লিখে রাখবেন এবং সাক্ষী রাখবেন।
উল্লেখ্য, সাক্ষীদের বয়স অবশ্যই ১৮ বছরের বেশি হতে হবে। এসব সাক্ষীর ক্ষেত্রে পরিবারের বা কাছের মানুষ রাখার চেয়ে একটু দূরের মানুষ রাখার চেষ্টা করবেন যে আপনার বিপদে এসে পাশে দাঁড়াবেন।
/লিপি