‘ফরেস্ট বাথিং’ যেভাবে করবেন
লাইফস্টাইল ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম
ফরেস্ট বাথিং করলে জীবনীশক্তি ফিরে আসে। ছবি: প্রতীকী
আমেরিকান সাহিত্যিক রালফ ওয়াল্ডো এমারসন বলেছেন, বন্য বাতাস পান করার কথা। কেন বলেছেন? তার কারণ হচ্ছে, পানি পান করলে যেমন জীবনীশক্তি ফিরে আসে, বন্য বাতাস পান করলেও তাই। আক্ষরিক অর্থে বন্য বাতাস পান করা যায় না কিন্তু শ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করা যায়, অনুভব করা যায়।
বনে কিছু সময় কাটানো বা কিছু সময় প্রকৃতির মাঝে মনে মনে হরিয়ে যাওয়াকে বলা হয় ‘শিনরিন ইয়োকু’ বা ফরেস্ট বাথিং। এ হলো প্রকৃতির সৌন্দর্যে ভেসে যাওয়া। যদিও বাথিং বলতে গোসল করা বোঝায়, আর ফরেস্ট বাথিং বলতে বনের সৌন্দর্য, প্রকৃতির শব্দ, নিরবতা, স্পর্শ ও গন্ধ অনুভব করা বোঝায়। এর মাধ্যমে মূলত মনের গোসল হয়।
ফরেস্ট বাথিং কেন করবেন: জাপানিজ একটি গবেষণায় দেখা গেছে, টানা দুই ঘণ্টা বনে কাটালে শরীর ও মনে পরিবর্তন আসে। রক্তচাপ কমে, হতাশা কমে, মনোযোগ বাড়ে আর স্মৃতিশক্তি ভালো হয়। এ ছাড়া বনের গাছ থেকে নির্গত ফাইটোনসাইড নামক রাসায়নিকের প্রভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
১৯৮০-র দশক থেকে জাপানের জনগণের স্বাস্থ্য পরিচর্যার জন্য সরকারি ও উন্মুক্ত এমন সবুজাভ বনগুলোতে যাওয়ার রীতি শুরু হয়। এখনও এই রীতি চলমান। বরং আরও বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে ফরেস্ট বাথিং।
ফরেস্ট বাথিং আমাদের দৃষ্টি, শ্রবণ, স্বাদ, ঘ্রাণ এবং স্পর্শের ইন্দ্রিয়গুলোর একটির সঙ্গে আরেকটির সংযোগ তৈরি করে দেয়। ফরেস্ট বাথিংয়ের জন্য একেবারে বনের কাছেই যেতে হবে, তা নয়। গাছের ছায়ায় কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলে এবং জোরে জোরে শ্বাস গ্রহণ করলেও ফরেস্ট বাথিংয়ের অনুভূতি পেতে পারেন। এ ছাড়া চলে যেতে পারেন কোনো পার্কে।
ফরেস্ট বাথিং যেভাবে করবেন: রোদ, বৃষ্টি, শীত কিংবা কুয়াশা ভেজা প্রকৃতি বা গাছ স্পর্শ করে, হেলান দিয়ে বসে কিছু সময় নিরবতা পালন করতে পারেন। এ সময় চোখ বন্ধ করে পাতা নড়ার শব্দ শুনুন, পাখির কলতান শুনুন, কোনো পোকামাকড়ের হেঁটে যাওয়া অনুভব করুন। এরপর চোখ খুলে আকাশের দিকে তাকান। আলো ছায়ার লুকোচুরি দেখুন, কিছু পাতা স্পর্শ করুন। মাটির ছোঁয়া পেতে খালিপায়ে কিছু সময় হাঁটুন। দেখুন চারপাশের রং কীভাবে বদলে গেছে।
কর্মব্যস্ত জীবনে হাঁপিয়ে উঠলে ফরেস্ট বাথিং করতে পারেন।
ঢাকা/লিপি