নেতিবাচক চিন্তা আপনাকে গ্রাস করছে?
লাইফস্টাইল ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম
ছবি: প্রতীকী
মানুষ যখন বিষণ্নতায় ভুগতে থাকে তখন তার মনের মধ্যে অনেক ধরনের নেতিবাচক চিন্তা আসে। এই চিন্তা আসে আমাদের আবেগ ও আচরণ থেকে। নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক এবং মনোবিজ্ঞানী র্যাচেল গোল্ডম্যান বলেন,‘‘আমাদের চিন্তা-ভাবনা, আবেগ ও আচরণ সবই নিজেদের মধ্যে সংযুক্ত। এজন্য আমরা কেমন বোধ করি এবং কোন ধরনের আচরণ করি– তার ওপর আমাদের চিন্তা প্রভাব রাখতে পারে। কখনো কখনো আমাদের নেতিবাচক চিন্তা মাথায় আসতে পারে। কিন্তু চেষ্টা করতে হবে প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় যেন তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে না পারে। ’’
নেতিবাচক চিন্তা দূর করার জন্য ভাবনা প্রতিস্থাপন একটি ভালো উদ্যোগ হতে পারে। ডা. সাইদুল আশরাফ, প্রধান মনোবিদ লাইফ স্প্রিং বলেন, ‘‘ যেকোন নেতিবাচক চিন্তা ‘থট চ্যালেঞ্জ’ বা নিজেকে প্রশ্ন করে মন থেকে দূর করা সম্ভব। এ হলো একটি অভ্যাস যা বার বার চেষ্টা করে গড়ে তুলতে হয়। যেমন জিমে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিদিন যেতে হয়, ‘থট চ্যালেঞ্জ’ও তাই। যদি বার বার মনে হয়, আমি ভালো কিছু করতে পারছি না। সেক্ষেত্রে ‘থট চ্যালেঞ্জ’ হবে কোন কাজটি করতে পারি।’’
এই মনোবিদ আরও বলেন, ‘‘ধরা যাক এখন রাত হয়েছে। আর আমরা বলতে শুরু করেছি, কেন রাত হলো? এই চিন্তা আমাদেরকে দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত করে তুলতে পারে। বরং আমরা এটা করতে পারি যে, একটা লাইট জ্বেলে দিতে পারি। এতে হয়তো রাত দূর হয়ে যাবে না কিন্তু অন্ধকার দূর হয়ে যাবে। আমরা অনেক সময় জীবনে একটা বিষয় নিয়ে বার বার ভাবতে থাকি। জীবনে যে ভুলটা হয়েছে সেই ভুলটা নিয়ে বার বার দুঃশ্চিন্তা করা যাবে না। নেতিবাচক ভাবনা দুঃখবোধ থেকে শুরু হয়, তারপর হতাশার জন্ম দেয়। সুতরাং নেতিবাচক চিন্তা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিত।’’
নেতিবাচক চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আরও যা যা করতে পারেন
অহেতুক নিন্দা বা প্রশংসা দুই অভ্যাসই মানুষকে যথাযথ সত্য থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। যথাযথ মূল্যায়নের জন্য প্রয়োজন গঠনমূলক সমালোচনার। কেউ যখন আপনাকে অতিরিক্ত নিন্দা করবে তখন নিজেকে অযোগ্য মনে করবেন না। আবার কেউ যখন অতিরিক্ত প্রশংসা করবে তখন নিজেকে অতিরিক্ত যোগ্য মনে করবেন না। এতে বাস্তবের কাছাকাছি থাকতে পারবেন। এতে নেতিবাচক চিন্তা থেকেও দূরে থাকা যায়।
কোনো একটি চিন্তা বার বার দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত করে তুললে ‘সিলভার লাইনিং’ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করুন। এজন্য একটি চিন্তাকে অন্য চিন্তা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিতে পারেন।
নেতিবাচক চিন্তার গুরুত্ব কমিয়ে দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে এর প্রভাব মুক্ত হতে পারবেন। নেতিবাচক চিন্তা আপনাকে অস্থির করে তুললে কিছুক্ষণের জন্য হলেও মনোযোগের চর্চা করতে পারেন। ইতিবাচক স্থান, বিষয় বা দৃশ্য কল্পনা করতে পারেন। এতে মনোযোগ ইতিবাচকতার দিকে নিয়ে যেতে পারবেন।
ঢাকা/লিপি