ঢাকা     বুধবার   ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ||  মাঘ ২ ১৪৩১

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান-এমডির বিরুদ্ধে মামলা, ব্যবসায়ীদের বক্তব্য

প্রেস বিজ্ঞপ্তি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪৬, ২২ আগস্ট ২০২৪   আপডেট: ১৬:৫৯, ২২ আগস্ট ২০২৪
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান-এমডির বিরুদ্ধে মামলা, ব্যবসায়ীদের বক্তব্য

শেখ হাসিনার নামে করা মামলায় আসামি করা হয়েছে দেশের শিল্পগ্রুপ বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহানকে। অথচ ঘটনার সময় দেশে ছিলেন না বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান। এমন হয়রানিমূলক মামলায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দেশের ব্যবসায়ীরা। গণমাধ্যমে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তি এমন তথ্য জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। 

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশের বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা দেশের অর্থনীতির জন্য অশনিসংকেত। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করবেন। ব্যবসায়ীদের ওপর দমন-নিপীড়ন করা হলে দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি কখনো ধরে রাখা যাবে না। দেশের বিনিয়োগ বাড়বে না। বিনিয়োগ না বাড়লে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি হবে না। যা অর্থনীতিকে চরম সংকটে ফেলবে। ব্যবসায়ীরাই দেশের অর্থনীতি এগিয়ে নিয়ে যাবেন। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় রাজধানীর বাড্ডা থানায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। তিনটি মামলাতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরসহ মোট ৫৩৭ জনকে আসামি করা হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টুর বক্তব্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে অর্থনীতি চাপে রয়েছে। সরকারের কর্তব্য এখন এ সংকট উত্তরণের জন্য ব্যবসায়ীদের জ্বালানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা দেওয়া। দেশের শিল্প কারখানায় লাখ লাখ মানুষ চাকরি করে। যদি ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, কারখানা চালু রাখতে না পারেন তাহলে অর্থনীতিতে সংকট বাড়বে। ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা না করলে দেশের বিনিয়োগ বাড়বে না। উল্টো যদি আবারও ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা হয়, ব্যবসায়ীদের ওপর দমন-নিপীড়নমূলক কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় সেটা দেশের জন্য আরও বড় সংকট তৈরি করবে। 

বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ফারুক হাসানের মন্তব্য উল্লেখ করে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গণহারে মামলা হয়রানি করা যাবে না। বিশেষ করে যেসব ব্যবসায়ী নিরীহ নিরপরাধ, যাদের বিরুদ্ধে কোনো এলিগেশন নেই। তাদের কোনোভাবেই হয়রানি করা যাবে না। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক ক্ষতি হবে। বরং ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিকে সচল রাখতে হবে। অন্যথায় দেশে আরও বেশি বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে বলে মনে করেন ফারুক হাসান।   

ফারুক হাসান আরো বলেন, দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও সরকার ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সেক্টরের দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনা ঘটছে। এতে অপরাধী নন এমন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধেও মামলা হচ্ছে। আমি নিজেও কোনো দিন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নই। আমি এটাও চাই ব্যবসার সঙ্গে রাজনীতিকে মেলানো যাবে না। মেলানো ঠিকও হবে না। যারা প্রকৃত অর্থে অন্যায় করেছেন, টাকা পাচার করেছেন, দুর্নীতি করেছেন সেসব ব্যবসায়ী বা রাজনীতিকদের ধরে আইনের আওতায় আনলে আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু যারা দোষী নন, অন্যায় করেননি, অনিয়ম-দুর্নীতি করেননি তাদের যেন হয়রানি না করা হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দেশের ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি আমিন হেলালীর মন্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি বলেছন, যারা লুটপাট করে টাকা নিয়ে পালিয়েছে তাদের আলাদা করে ব্যবস্থা নিন। যারা ব্যবসা করছেন তাদের ওপর লুটপাটের দায়ভার চলে এলে হয়রানি করলে ব্যবসায়ীরা টিকে থাকতে পারবেন না। যারা ব্যবসা করছেন তাদেরই পাওয়া যাচ্ছে, আর যারা লুট করেছেন তারা পালিয়েছেন। লুটপাটকারীদের চাপটা ব্যবসায়ীদের ওপর আসছে, এটা হতে পারে না। এতে ব্যবসায় প্রতিযোগিতা হারাবে। তারা টিকে থাকতে পারবেন না। তখন ব্যবসা ছেড়ে দেবেন। ফলে অর্থনীতি ভেঙে পড়বে। 

প্রসঙ্গত, বাড্ডা থানায় প্রথম মামলাটি দায়ের করা হয় মঙ্গলবার রাতে। মামলা নম্বর ৪। মাছুমা নামে এক নারীর দায়ের করা মামলায় শেখ হাসিনা, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরসহ ১৮০ জনের নাম রয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় মামলাটি দায়ের করা হয় একই থানায় গতকাল বুধবার। আবু বকর সিকদার নামে আরেক ব্যক্তি ১৭৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। মামলা নম্বর ৬। অপর মামলার বাদী হলেন বিল্লাল। মামলা নম্বর ৭। মামলায় ১৭৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

/এনএইচ/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়