সেরা ৩ স্কুটার
অক্সফোর্ড লারনার্স ডিকশনারি অনুযায়ী, স্কুটার হচ্ছে হালকা মোটরসাইকেল যাতে, সাধারণত ছোট চাকা এবং রাইডারের পা রক্ষা করার জন্য সামনে একটি বাঁকা ধাতব আবরণ থাকে। সংজ্ঞাটি প্রায় নির্ভুল হলেও অতিসরলীকৃত।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে স্বল্প খরচ, অর্থনৈতিক অবস্থা এবং চালাতে সহজ হওয়ার কারণে ব্যক্তিগত পরিবহনের একটি মাধ্যম হয়ে ওঠে স্কুটার। পঞ্চাশের দশকে Piaggio ও Vespa তাদের ক্লাসিক মডেলের মাধ্যমে স্কুটারের বাজারে আধিপত্য বিস্তার শুরু করে। যুক্তরাজ্য, জার্মানি, পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো এবং ভারতে এর ধারাবাহিকতা বজায় থাকে। তবে পরবর্তীতে জাপান, চীন ও তাইওয়ান শেষ পর্যন্ত স্কুটারের ব্যাপক উৎপাদনের মাধ্যমে বিশ্ব বাজারে আধিপত্য বিস্তার করে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্কুটার গঠনগতভাবে আরও মজবুত, পরিমার্জিত এবং আড়ম্বরপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কোনো কোনো স্কুটারে স্পোর্টবাইকের মতো প্রযুক্তিও যুক্ত করা হয়েছে। আরামদায়ক এই যানটি দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য একটি দুর্দান্ত বিকল্প হয়ে গেছে। চাহিদার কারণে প্রতি বছরই প্রস্তুতকারকরা তাদের মডেলগুলোতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করছে। আজ আমরা হাজির করবো সেরা তিনটি স্কুটারকে। অবশ্য এই স্কুটারগুলো এখনও বাংলাদেশের বাজারে আসেনি। ৩৭৫ সিসির মোটরসাইকেল অনুমোদন পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, হয়তো সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো এই স্কুটারগুলোও বাংলাদেশের বাজারে নিয়ে আসবে।
Vespa GTS300
সেরার তালিকায় শীর্ষে রয়েছে Vespa GTS300। ২৭৮ সিসির স্কুটারটিতে রয়েছে ফোর স্ট্রোক, লিকুইড কুলড, ইউরো ফাইভ কমপ্লায়েন্ট, হাই পারফরমেন্স ইঞ্জিন। এর কার্বন নিঃসরণের মাত্রাও কম। সবদিক থেকে একে অলরাউন্ড পারফরমারই বলতে পারেন। এতে স্টিলের মনোকোক ফ্রেম, পুরানো ভার্সনের রেট্রো বডি-ওয়ার্ক, গোল ক্লাসিক হেডলাইট এবং ক্লাসিক্যাল সিঙ্গেল আর্ম ডিজাইন বজায় রেখে রি-ডিজাইন করা ফ্রন্ট সাসপেনশন রয়েছে।
স্কুটারটিতে ডিজি-অ্যানালগ ইন্সট্রুমেন্টেশন, অ্যান্টি লক ব্রেকিং সিস্টেম ও ট্র্যাকশন কন্ট্রোল সিস্টেম রয়েছে। স্কুটারটির সিটের নিচে জিনিসপত্র রাখার বড় একটি জায়গা রয়েছে। এছাড়া রয়েছে একটি গ্লাভ বক্স, চাবিহীন ইগনিশন এবং একটি বাইক ফাইন্ডার ফাংশন। আধুনিক ছোঁয়া, আপগ্রেড প্রযুক্তি এবং চিত্তাকর্ষক পারফরম্যান্সের সাথে চমৎকার ডিজাইনের GTS300 এর দাম প্রায় ৯ লাখ টাকা।
Honda Forza 350
২০০০ সালে Forza মডেলটি বাজারে নিয়ে আসে হোন্ডা। প্রাণবন্ত রাইড, পর্যাপ্ত জায়গা এবং উদ্ভাবনী ব্রেকিং সিস্টেম ছিল এর বৈশিষ্ট। Honda Forza 300 সেই ঐতিহ্যের মধ্যেই রয়েছে। এই মডেলটিতে উল্লেখযোগ্যভাবে হোন্ডার S MATIC ইলেকট্রনিকভাবে নিয়ন্ত্রিত কনটিনিউয়াস ভ্যারিয়েবল ট্রান্সমিশন, স্মার্ট কী ফাংশন, ফুয়েল ইনজেকশন এবং কম্বাইন্ড অ্যান্টিলক ব্রেকিং সিস্টেম রয়েছে।
চলতি বছর হোন্ডা Forza 300 এর পরিবর্তে Forza 350 বাজারে এনেছে। ৩৩০ সিসির ইঞ্জিনটি ২৮ দশমিক ৮ হর্সপাওয়ার উৎপন্ন করে। হোন্ডা তাদের নিজস্ব eSP+ প্রযুক্তির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে এবং ট্র্যাকশন কন্ট্রোল সিস্টেমে সিলেক্টেবল টর্ক কন্ট্রোল সিস্টেমকে যুক্ত করেছে। 350-এ ইন্টিগ্রেটেড ব্লুটুথ এবং বৈদ্যুতিক উইন্ডশিল্ডসহ একটি নতুন ডিজাইন করা এলসিডি স্ক্রিন রয়েছে। এবার আসি দামের পালায়। ইউরোপের বাজারে এর দাম বাংলাদেশের হিসাবে ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা।
Honda ADV 160
৩৫০ সিসির মধ্যে তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে আছে হোন্ডারই আরেকটি স্কুটার। এই স্কুটার নিয়ে হোন্ডার ভাষ্য, আপনাকে অ্যাডভেঞ্চার করার জন্য সাহারা মরুভূমিতে যাওয়ার দরকার নেই! Honda ADV 160 এ উঠুন! এটি অবশ্যই একটি সত্যিকারের অ্যাডভেঞ্চার মোটরসাইকেল এবং একটি স্কুটারের সমন্বিত রূপ।
Honda ADV 160-তে রয়েছে ১৫৭ সিসির লিকুইড কুলড ইঞ্জিন। এতে রয়েছে স্বয়ংক্রিয় ট্রান্সমিশন, সামনের দিকে শোওয়া ব্র্যান্ডের টেলিস্কোপিক সাসপেনশন, পিছনে শোওয়া ব্র্যান্ডেরই এক জোড়া রিমোট পিগিব্যাক রিজার্ভারভিত্তিক শক এবং অ্যান্টি লক ব্রেকিং সিস্টেম। এতে আরও রয়েছে একটি উদ্ভাবনী টু পজিশন উইন্ডশিল্ড, ফ্লিপ ওপেন সিটের নিচে ২৮ লিটারের স্টোরেজ, সামনে ছোট কম্পার্টমেন্ট এবং হোন্ডার স্মার্ট চাবি। চমৎকার লুকের স্কুটারটিতে এক ধরণের কঠোর আবেদন রয়েছে যা বলে দেয়- এটি একটি দুঃসাহসিক কাজ করতে যাচ্ছে। এর দাম প্রায় পাঁচ লাখ টাকা।
ঢাকা/শাহেদ