‘বুয়েটের ঘটনায় বিএনপি-জামায়াত ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে’

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ‌্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত‌্যার ঘটনায় বিএনপি-জামায়াত ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছাত্রদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

রোববার দুপুরে সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।

আওয়ামী‌ লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, আজ আমরা লক্ষ করছি, ছাত্রদের আবেগ-অনুভূতিকে পুঁজি করে একটি মহল, বিশেষ করে বিএনপি ও তাদের মিত্র জামায়াত-শিবির বুয়েটে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। বেনামে শিবির-ছাত্রদল সক্রিয় হয়ে বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে ছাত্রদের সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটি মহল আছে যারা দেশ অস্থিতিশীল হলে ফায়দা লুটতে পারে। তারা সবাই মিলে এ ঘটনাকে পুঁজি করে শিক্ষাঙ্গন অশান্ত করার চেষ্টা করছে। দেশকে অশান্ত করার দুরভিসন্ধি থেকে ছাত্রদের মধ্যে তাদের এজেন্ট ঢুকিয়ে দিয়েছে। যে কারণে দাবি মেনে নেয়ার পরও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা আসছে। সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের সব দাবি তো মেনে নিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, দাবি মেনে নেয়ার পরও কেন আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা?

‘এ ঘটনাকে পুঁজি করে অনেকে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। সেখানে আমরা লক্ষ করছি, শিবির সক্রিয় হয়েছে, ছাত্রদল সক্রিয় হয়েছে। তারা স্বনামে নয় বেনামে সক্রিয় হয়েছে, সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। তারা বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে,’ বলেন হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, আমি ছাত্রদের অনুরোধ জানাব, কেউ যাতে এটিকে পুঁজি করে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

আবরার হত‌্যাকাণ্ডকে ন্যক্কারজনক আখ‌্যায়িত করে হাছান মাহমুদ বলেন, বুয়েটে যে ঘটনাটি ঘটেছে, এটি অত্যন্ত নিন্দনীয় ও নৃশংস। আমরা প্রথম থেকেই এ ঘটনার প্রতিবাদ করেছি। কেউ দাবি তোলার আগেই সরকার এ ব্যাপারে ত্বরিত ব্যবস্থা নিয়েছে। এ পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অতীতে বাংলাদেশের ইতিহাসে এত ত্বরিত গতিতে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, এ ঘটনায় বুয়েটের ছাত্রদের আবেগ জড়িত। এর সঙ্গে আমারও আবেগ জড়িত। তাদের প্রতিবাদের সঙ্গেও আমি একমত। এর প্রতিবাদ হওয়া প্রয়োজন। আমি মনে করি, এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না হয় সেজন্য এ প্রতিবাদ অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করছে বলে আমি মনে করি।

বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধে মৌলবাদী গোষ্ঠীর তৎপরতা বাড়বে কি না, জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সাময়িকভাবে যেটি বন্ধ হয়েছে, সেটি পরিস্থিতি উত্তরণে সহায়ক হবে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি। তবে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলে সেটির নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তবে এটি একান্তই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ব্যাপার।

তিনি বলেন, দেশে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করার দাবি অমূলক। বাংলাদেশের সমস্ত অর্জনের সাথে ছাত্রসংগঠনগুলোর ভূমিকা জড়িয়ে আছে। আজ যারা দেশে প্রতিষ্ঠিত নেতা, তাদের বেশিরভাগই এসেছেন ছাত্ররাজনীতি থেকে। ছাত্ররাজনীতি একেবারে বন্ধ করে দেয়া ঠিক হবে না। ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করার জন্য কেউ কেউ যে বিশেষজ্ঞ মত প্রকাশ করছেন তাদের আসলে উদ্দেশ্য ভালো নয়। সুতরাং সেটি হওয়া কোনোভাবেই সমীচীন নয়।

মন্ত্রী বলেন, যারা বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়ার সঙ্গে অতীতে যুক্ত ছিলেন, বিরাজনীতিকরণের জন্য যারা সচেষ্ট থাকেন, তাদের কারো কারো মুখ থেকে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের কথাগুলো আসছে বলে আমরা লক্ষ করছি।


ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক