ঢাকায় ফিরছেন পোশাককর্মী, ফেসবুকে ক্ষোভ
করোনায় আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। চলছে সাধারণ ছুটি। ঠিক এই মুহূর্তে পোশাক কারখানা খোলার সিদ্ধান্তে সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
শনিবার (৪ এপ্রিল) ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কারখানা খোলার সিদ্ধান্তকে অনেকেই হটকারি, অমানবিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এনামুল মনি নামে একজন সংবাদকর্মী ট্রাক বোঝাই করে ঢাকায় আসা পোশাক শ্রমিকদের ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে অর্ডার বাতিল হয়েছে বলে প্রণোদনা চাইলো। সরকার ৫০০০ কোটি টাকার প্রণোদনাও ঘোষণা করলেন। শ্রমিকদের বেতনের জন্য টাকাও দিচ্ছে সরকার। তবে আজ কারখানা খোলার আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত কেন? … এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের যেই ভয়ংকর পরিণাম হবে, এর বোঝাও কি জনগণেরই বহন করতে হবে? সকল প্রণোদনা বন্ধ করে এই টাকা দিয়ে হাসপাতাল বানানোর এবং সরঞ্জাম কেনার দাবি জানাচ্ছি। গার্মেন্টস মালিকরা যেহেতু কারখানাই চালাবেন, তাদের শ্রমিকের বেতনের দায়িত্বও তাদের।’
শেখ রাসেল নামে এক ফার্মাসিস্ট ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সরকারের অনেক বড় দায়িত্ব। এখনই সবকিছু একেবারে বন্ধ করে দেওয়া উচিত। বন্ধ বন্ধ খেলা নয়। সম্পূর্ণ বন্ধ, সবকিছু।’
মাহরিন মৌ নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘গণপরিবহন ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। অন্যদিকে পোষাক শিল্পের অনেক অর্ডার যেখানে আগেই বাতিল করে দিয়েছে ক্রেতারা সেখানে শ্রমিকরা এত কষ্ট করে গার্মেন্টেসে এসে এখন কি কাজ করবে? কোন দেশ এখন প্রোডাক্ট সাপ্লাই নিবে? গার্মেন্টস আরও কিছু দিন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলে ভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়ানো যেত হয়ত।’
আরটিভির যুগ্ন বার্তা সম্পাদক তাবিবুর রহমান তালুকদার লিখেছেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে গার্মেন্টস খোলা রাখা কি আত্মঘাতী নয়? মানুষকে ঘরে থাকতে বলছেন, আবার গার্মেন্টসও খোলা রাখছেন!’ পরে তিনি রাইজিংবিডিকে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাংবাদিক নেতা শহিদুল ইসলাম লিখেছেন, ‘একদিকে সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং ও হোম কোয়ারেন্টাইনের নির্দেশ অপরদিকে গার্মেন্টস খুলে দেওয়ায় ঢাকামুখী মানুষের ঢল! কে দেখবে, কে রুখবে এই দ্বিমুখী নীতি?’
ফেসবুকে পোস্টের বিষয়ে জানতে চাইলে শহিদুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সরকার একদিকে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার কথা বলছেন, অন্যদিকে পোশাক কারখানা চালু করা হচ্ছে। আমি তো মনে করি পোশাক শ্রমিকদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।’
অ্যাডভোকেট ফারিয়া ফেরদৌস নামে এক আইনজীবী পোশাক কারখানা খোলার সিদ্ধান্তে বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘গার্মেন্টস কেনো খুললো? আমি আসলে বুঝি নাই! বেতন দেবার জন্য নাকি লস যেনো না হয় সেজন্য? ৫০০০ কোটি টাকা তাহলে কেন?’
পোশাক শ্রমিকদের দলে দলে ঢাকায় আসার ছবি শেয়ার করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মনিরুল ইসলাম রাহুল নামে একজন আইনজীবী। তিনি লিখেছেন, ‘এই হচ্ছে করোনা প্রতিরোধ ব্যবস্থা। যারা অর্থনীতির চাকা সচল রাখে তারা সমানভাবে ছুটিটা পর্যন্ত ভোগ করতে পারল না। করোনা আমাদের অনেক বিভেদ করে দিল। বৈষম্য এই দেশের জন্ম থেকে, এটা কখনো শেষ হবে না।’
মেহেদী/সাইফ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন