করোনার প্রভাবে ৭০ শতাংশ দরিদ্র মানুষের আয় বন্ধ
করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশের ৭০ শতাংশ দরিদ্র মানুষের আয় বন্ধ হয়ে গেছে।
পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
জরিপে দেখা যায়, শহরে বস্তির বসবাসরত ৮২ শতাংশ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। আর গ্রামাঞ্চলে কর্মহীন হয়েছে ৭৯ শতাংশ দরিদ্র মানুষ।
বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জরিপের ফল তুলে ধরেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান ও বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন।
জরিপ বলছে, করোনার প্রভাবে দেশে ৭০ শতাংশ দরিদ্র মানুষের আয় বন্ধ হয়ে গেছে। এই দরিদ্র্য শ্রেণির মধ্যে রয়েছে অতি দরিদ্র, মাঝারি দরিদ্র ও দারিদ্র্যসীমার ওপরে ছিল কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রভাবে তারাও দারিদ্র্য সীমার নিচে নেমে এসেছে। ৪০ শতাংশ দরিদ্র শ্রেণির ভোগ কমে গেছে। আর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে শহরের ৭১ শতাংশ দরিদ্র মানুষের।
এ বিষয়ে হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘কভিড-১৯ এর প্রভাবে কর্মহীন ও আয় বন্ধ হয়ে যাওয়া দরিদ্র মানুষদের জন্য নগদ টাকা দেওয়া জরুরি। সেক্ষেত্রে আমাদের জরিপে উঠে এসেছে, প্রতি মাসে দরিদ্র্য মানুষদের জন্য খরচ হবে পাঁচ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা। দেশে এখন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা তিন কোটি ৮১ লাখ ৫৬ হাজার ৬৬৯ জন। যার মধ্যে গ্রামে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা দুই কোটি ৬৯ লাখ ৬৪ হাজার ৫৩০ জন আর শহরে দরিদ্র মানুষ আছে এক কোটি ১১ লাখ ৯২ হাজার ১৩৯ জন।’
হোসেন জিল্লুর রহমান আরো বলেন, ‘টেলিফোনের মাধ্যমে গত চার এপ্রিল থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত জরিপটি করা হয়েছে। দৈব চয়নের ভিত্তিতে ৫ হাজার ৪৭১ জন দরিদ্র মানুষকে নিয়ে জরিপটি করা হয়েছে। শহর থেকে ৫১ শতাংশ আর গ্রাম থেকে ৪৯ শতাংশ দরিদ্র মানুষের সঙ্গে কথা বলে জরিপটি করা হয়েছে।’
জরিপে দেখা গেছে, ৬১ শতাংশ দিনমজুর বলেছেন, এখন তাদের কোনো কাজ নেই। ৬০ শতাংশ ভাঙ্গারি শ্রমিক বলেছেন, করোনার প্রভাবে এখন তাদের কোনো কাজ নেই। ৫৯ শতাংশ রান্না ও রেস্টুরেন্ট শ্রমিক বলেছেন, তাদের কাজ বন্ধ। ৫৭ শতাংশ গৃহপরিচারিকা বলেছেন, তাদের কাজ নেই। ৫৫ শতাংশ পরিবহন শ্রমিকের কাজ বন্ধ। ৫৪ শতাংশ কৃষি শ্রমিকের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। রেস্টুরেন্টের একজন শ্রমিক আগে যে টাকা আয় করতেন, করোনা প্রভাবে সেটি ৯৩ শতাংশ কমে গেছে। রিকশা চালক আগে যে টাকা আয় করতেন, করোনা প্রভাবে তার ৭৩ শতাংশ আয় কমে গেছে।
ঢাকা/এম এ রহমান/ইভা
রাইজিংবিডি.কম