ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

করোনা ঝুঁকি ও বাড়তি ভাড়া দিয়ে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৪২, ২৩ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
করোনা ঝুঁকি ও বাড়তি ভাড়া দিয়ে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ

করোনার ঝুঁকি নিয়ে ঈদ করতে বাড়ি যাচ্ছেন মানুষ। ছবিটি শনিবার গাবতলী বাসটার্মিনাল থেকে তোলা (ছবি: শাহীন ভূঁইয়া)

ঈদ আসন্ন। এ বছর করোনার কারণে বন্ধ গণপরিবহন। চলছে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও ব্যক্তিগত পরিবহন। অতিরিক্ত ভাড়া ও করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই ঈদ করতে বাড়ি ফিরছে মানুষ।

এ সুযোগে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস মালিকরা ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন।  নির্দিষ্ট ভাড়ার চেয়ে অনেক বেশি নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।

গাবতলি থেকে পাটুরিয়া ফেরিঘাটে যেতে স্বাভাবিক সময়ে ভাড়া ছিলো লোকাল পরিবহনে ১০০ থেকে ১২০ টাকা।  ঈদের সময় একই পরিবহনে ভাড়া লাগত ২০০ থেকে ৩০০ টাকা।   এবার গণপরিবহন না চলায় প্রাইভেটকার চালকরা বাড়িয়ে দিয়েছেন ভাড়া।

শনিবার (২৩ মে) গাবতলি বাস টার্মিনাল এলাকায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকালে ঢাকা থেকে পাটুরিয়া যেতে ভাড়া চাওয়া হয়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা।  বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীর সংখ্যাও বাড়ায় সেই ভাড়া এক লাফে চলে গেছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। যাত্রীরা বলছেন, প্রাইভেট চালকরা যাত্রীদের অসহায়ত্তের সুযোগ নিচ্ছেন। 
 


কথা হয় ওবায়েদুল হক নামের একজন যাত্রীর সঙ্গে।  তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমি খুলনা যাবো।  ঢাকায় একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করি।  কিন্তু গণপরিবহন না চলায় খুব ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।  গাবতলি থেকে পাটুরিয়ার ভাড়া ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা চাচ্ছে প্রাইভেটকার চালকরা।  এটা কী করে সম্ভব?’

তিনি বলেন, ‘সকালে আমার পরিচিত একজন বরিশাল গেছে।  তাকে কল করে জিজ্ঞাসা করেছিলাম ভাড়া কতো। তিনি বলেছেন সকালে তার কাছ থেকে ৪৫০ টাকা রেখেছিলো।  এখন দুপুর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাড়া ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা চাওয়া হচ্ছে। ’

যাত্রী জাহিদ হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘পিরোজপুর যাবো। চাকরি করি গার্মেন্টসে।  ছুটি নিয়েছি বাড়ি যাওয়ার জন্য।  কিন্তু এখানে এসে দেখি ভাড়া চাওয়া হচ্ছে অনেক বেশি। ’

করোনার মধ্যেও ঝুঁকি নিয়ে কেন যাচ্ছেন—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সবাইতো যাচ্ছে।  করোনা হলেতো কিছু করার নেই।  এই করোনার কারণে গত কয়েক মাস বাড়ি যাওয়ার কথা থাকলেও যেতে পারিনি।  এখন করোনার চিন্তা করছি না। তাছাড়া মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস পরে যাচ্ছি। স্যানিটাইজারও সঙ্গে রয়েছে।  আশা করি করোনার সমস্যা হবে না।’
 


উবার চালক ফরিদ হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমি ঢাকায় উবারে গাড়ি চালাই।  কিন্তু করোনার কারণে দুই মাস বাসায় বসে ছিলাম।  কোনও আয় নেই।   গতকাল থেকে নিজস্ব পরিবহন চলাচল করতে দেওয়ার পর থেকে আমি ঢাকা থেকে পাটুরিয়া পর্যন্ত যাত্রী আনা নেওয়া করছি।  ঈদের আগে কিছুটা হলেও আয় করার একটা পথ তৈরি হয়েছে আমাদের জন্য। ’

ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে কেন—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রাইভেটকার কম, যাত্রীর সংখ্যা বেশি।  যাত্রী নিয়ে পাটুরিয়া গেলেও আসার সময় আসতে হচ্ছে খালি।  তাই ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে।  গাড়িতে যাত্রী নিচ্ছি মাত্র দুজন বা তিনজন।  পুলিশ বলছেন ২ জন নিয়ে।  মাঝে মাঝে তিনজন নেওয়া যায়।  এজন্য ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে।

ড্রাইভার ইদ্রিস আলী বলেন, ‘অনেকদিন বাসায় বসে ছিলাম।  খুব ভালো লাগছে গাড়ি চালাতে পেরে।  সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। ’

গাবতলি বাস টার্মিনাল এলাকায় দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা জাকারিয়া হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, গতকাল থেকে নিজস্ব পরিবহন চলাচল করতে দেওয়ায় ঘরমুখো মানুষ এই এলাকা দিয়ে ঢাকা ত্যাগ করছেন। আমরা খুব কঠোরভাবে নির্দেশনা পালন করছি।

 

হাসিবুল/সাইফ  

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়