রাত পোহালেই ওয়ারী লকডাউন, প্রস্তুত ডিএসসিসি
রাত পোহালেই ২১ দিনের জন্য ‘লকডাউন’ হচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)-এর ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়ারী এলাকা। করোনা-সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করে শনিবার (৪ জুলাই) ভোর থেকে এই এলাকাকে ‘লকডাউন’ করতে ইতোমধ্যেই সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ডিএসসিসি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ডিএসসিসি ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নির্ধারিত এলাকার সব ধরনের আসা-যাওয়ার পথ বন্ধ করে দেওয়া হবে। বাসিন্দাদের ঘরে রাখতে সড়কে থাকবে পুলিশি টহল-নজরদারি। এই সময়ের মধ্যে ওই এলাকার সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ওষুধের দোকান ছাড়া অন্যান্য দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যেন বন্ধ থাকবে। এই উদ্দেশ্যে ওয়ারী এলাকায় মাইকিং করে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে ই-ক্যাবের মাধ্যমে সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, লকডাউন এলাকায় স্বাস্থীয় বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীদের সমন্বয়ে স্বেচ্ছাসেবী দল তৈরি করা হয়েছে। যেকোনো প্রয়োজনে বাসিন্দাদের সহযোগিতা করবেন এই স্বেচ্ছাসেবকরা। এছাড়া, ওয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি সুরক্ষা বুথ তৈরি করা হয়েছে। করোনা উপসর্গ থাকলে সেখানে তাৎক্ষণিক নমুনা দেওয়া যাবে। পুলিশ ও ডিএসসিসির পক্ষ থেকে আলাদা দুটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। এসব বুথ থেকে নজরদারিসহ প্রয়োনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া, আইসোলেশনের জন্য মহানগর হাসপাতালকে প্রস্তুত করা হয়েছে।
ডিএসসিসির একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ‘ওয়ারী লকডাউন বাস্তবায়নে পূর্ব-রাজাবাজারের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো হবে। সেই অনুযায়ী কাজও চলবে। তবে যেসব বিষয়ে পূর্বরাজাবাজারে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, সেগুলো কিভাবে কাটিয়ে ওঠা যায়, সে বিষয়ে কাজ করা হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসির ৪২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সারোয়ার হোসেন আলো বলেন, ‘যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ। এক হাজার পরিবারের জন্য খাদ্য মজুদ রাখা হয়েছে। এখন লকডাউন বাস্তবায়ন করা হবে। তবে এই কাজে সাধারণ মানুষের সহযোগিতা লাগবে।’
লকডাউন বাস্তবায়ন ও সাধারণ মানুষকে শৃঙ্খলায় আনতে পুলিশের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন থাকার বিষয়টিও নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে জানান সারোয়ার হোসেন আলো।
জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)-এর ওয়ারী জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. হান্নানুল ইসলাম বলেন, ‘১৭টি পয়েন্ট ব্লক করা হবে। জরুরি প্রয়োজনে যাতায়াতের জন্য দুটি পথ খোলা থাকবে। সেখানে পুলিশের কড়া নজরদারি থাকবে। খুব বেশি প্রয়োজন হলে উপযুক্ত প্রমাণসহ কেউ এলাকা থেকে বের হতে পারবেন। এছাড়া অন্যদের বের হওয়া ও প্রবেশে কড়াকড়ি থাকবে।’
উল্লেখ্য, গত ৩০ জুন বিকেলে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ওয়ারী লকডাউনের ঘোষণা দেন। এই সময় তিনি জানান, শনিবার ভোর ৬টা থেকে ওয়ারী এলাকা ২১ দিনের জন্য লকডাউন করা হবে।
ঢাকা/নূর/এনই
রাইজিংবিডি.কম