মুগদা হাসপাতালে বাড়ছে করোনা রোগী
মেসবাহ য়াযাদ || রাইজিংবিডি.কম
করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। জুন মাসের প্রথম দিকে যার পরিমাণ ছিল ৭০ থেকে ৭৫ জন। মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত স্বাস্থ্যকর্মী মাসুদুল হক বলেন, ‘গত কয়েকদিন থেকে করোনা রোগীর চাপ বাড়ছে। এর আগে রোগীর পরিমাণ বেশ কম ছিল। গত দুই সপ্তাহ ধরে রোগী বেশি আসছে। গড়ে প্রতিদিন ৯০-১০০ জন রোগী চিকিৎসা নিতে আসছে। এর মধ্যে যাদের অবস্থা বেশি খারাপ, তাদের ভর্তি করা হচ্ছে। যাদের অবস্থা তুলনামূলক ভালো, সেসব রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এবং বাসায় থাকতে বলা হচ্ছে।'
বাসাবো থেকে চাচাকে নিয়ে আসা মারুফ বলেন, ‘কয়েকদিন থেকে চাচা অসুস্থ। জ্বর, ঠাণ্ডা, কাশি ছিল। সন্দেহ করে তার করোনা টেস্ট করি। রেজাল্ট পজিটিভ । গত চারদিন থেকে তিনি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। তবে প্রথম দিনের চেয়ে এখন একটু ভালো আছেন।'
মুগদা হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. কল্লোল বলেন, ‘বেশ কিছুদিন করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও গত ২-৩ সপ্তাহ থেকে তা বাড়তে শুরু করেছে। এভাবে রোগী বাড়তে থাকলে পরিস্থিতি খারাপ হবে। তাহলে রোগীদের বেড বা চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হবে না।’
এ বিষয়ে মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. অসীম কুমার বলেন, ‘গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে রোগীর পরিমাণ প্রতিদিনই বাড়ছে। গড়ে ১২ থেকে ১৫ জন করোনা রোগী প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এখানকার ৩০০ সাধারণ বেডের মধ্যে বুধবার (২৩ জুন) পর্যন্ত রোগীর সংখ্যা ১২৯ জন। ২২ জুন ছিল ১২১ জন, তার আগের দিন ছিল ১১৫ জন। হাসপাতালের ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ)-এর ২৪ বেডের মধ্যে ২৩ বেডেই রোগী ভর্তি আছেন।’
ডা. অসীম কুমার বলেন, ‘করোনার এই ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে সবাইকে আরও সতর্ক হতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। আক্রান্তের হার ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকলে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে। সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও সময় মতো পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বিধিনিষেধ এবং লকডাউন মানার পাশাপাশি- সবাইকে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’
ডা. অসীম আরও বলেন, ‘ভ্যাকসিন ছাড়া এ ভাইরাস ঠেকানোর কোনো উপায় নেই। পর্যাপ্ত না থাকার কারণে, তা আমরা ভালোভাবে দিতে পারিনি। আমাদের এখানে কেবল ছাত্রদের ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। তাও প্রয়োজনের তুলনায় অতি অল্প। তাই আপাতত মাস্ক পরে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে হবে।’
ঢাকা/মেসবাহ/এমএম