কারখানা শ্রমিকদের টিকা কবে?
সরকার ঘোষিত সমন্বিত টিকা কার্যক্রম শুরু হলেও এখনো পোশাক খাতের গুরুত্বপূর্ণ তৈরি পোশাক ও বস্ত্রশিল্প শ্রমিকদের ক্ষেত্রে বাস্তবায়নের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। খাত সংশ্লিষ্ট কারখানা মলিকরা বলছেন, সাংগঠনিক নির্দেশনার ভিত্তিতে কারখানা মালিকরা শ্রমিকদের তথ্য সংগ্রহ করে টিকার অপেক্ষায় আছেন। ঈদের আগে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হলেও ঈদের পরে সরকারের উদ্যোগের অপেক্ষায় রয়েছেন কারখানা মালিকরা।
সরকার শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- সরকারের পক্ষ থেকে টিকা নিয়ে কোন জটিলত নেই। অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক বাজার রক্ষার গুরুত্ব বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী খাত সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের জন্য টিকা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ইতিমধ্যে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক সমিতি বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন- দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য পোশাক ও বস্ত্রশিল্পের সকল শ্রমিককে যতদ্রুত সম্ভব টিকাদান কার্যক্রমের আওতায় আনার বিকল্প নেই।
গত শনিবার (৭ আগস্ট) নারায়নগঞ্জে আড়াইহাজার উপজেলায় মিথিলা গ্রুপের কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে একই সময়ে অন্য কোন কারখানায় এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে তথ্য মেলেনি।
বিজিএমইএ’র সদস্যভুক্ত কারখানার সংখ্যা ১ হাজার ৬৪৩টি, বিকেএমইএ’র ৮১৬টি, বিটিএমএ’র ৩১০টি বেপজা’র ৩৬৯টি এবং অন্যান্য ৪ হাজার ৭৫৪টি কারখানা রয়েছে। এ শিল্পে ৪৪ লাখ শ্রমিক কর্মরত আছে যার প্রায় ৬০ শতাংশ নারী। (শ্রমিকের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে)।
বস্ত্রখাতের কয়েকজন কারখানা মালিক রাইজিংবিডিকে জানান, এমন অনেক কারখানা রয়েছে- যেখানে ৫ থেকে ১০ হাজার শ্রমিক রয়েছে। এছাড়া ছোট বা মাঝারি যেসব কারখানা রয়েছে, তাদেরও শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য নিয়মিত চিকিৎসা কার্যক্রম বা চিকিৎসা কেন্দ্র রয়েছে। এজন্য তাঁদের টিকা দেয়ার জন্য কারখানার মধ্যেই সব ব্যবস্থা রয়েছে। এখন শুধু টিকার ব্যবস্থা হলেই কারখানা চলাকালিন যে কোন সময় তা বাস্তাবয়ন সম্ভব। এজন্য যে অর্থ ব্যয় হবে তাও বহন করতে মালিকরা প্রস্তুত রয়েছেন।
শ্রমিকদের টিকা কার্যক্রমের বিষয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নজান সুফিয়ান এমপি রাইজিংবিডিকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন, মালিকদের সঙ্গে বৈঠক শ্রমিকদের টিকা দেয়ার বিষয়ে মালিকদের সঙ্গে আমাদের বৈঠকও হয়েছে। টিকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দেশের স্বার্থে, শিল্পের স্বার্থে এবং আন্তর্জাতিক বাজারের স্বার্থে শ্রমিকদের টিকা দেয়া হবে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বানিজ্য সংগঠনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
ঠিক কবে এই কার্যক্রম শুরু হবে এই প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন- প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনামতে এটি শুরু হওয়ার কথা। যদি না হয়ে থাকে তাহলে আমরা আবার সবার সঙ্গে কথা বলবো। দ্রুত এই কার্যক্রম তথা শ্রমিকদের টিকা দানের কর্মসূচি শুরু করতে হবে।
এদিকে শ্রমিক নেতারা বলছেন- সরকারের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের টিকা দেয়ার কথা বলা হলেও দুই একটি কারখানায় তা পরীক্ষামূলক শুরু করার পর এখন তার কোন কার্যক্রম পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
তারা জানান, করোনা মহামারিতে জীবন বাজি রেখে শ্রমিকরা দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। তাই তাদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়া এখন সময়ের দাবি।
ঢাকা/শিশির/এমএম