সব অংশীজনের মতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের দাবি

জনগণের প্রত্যাশাকে গুরুত্ব দিয়ে সব অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রায় এক মাস নিবন্ধিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আলোচনার শেষ দিনে মন্ত্রিসভায় নির্বাচন কমিশন আইনের খসড়া অনুমোদন আশাব্যঞ্জক। তবে, সাংবিধানিক অঙ্গীকারের প্রতিফলক এ ধরনের জনগুরুত্বপূর্ণ একটি আইন পাসের আগে পূর্ণাঙ্গ যাচাই- বাছাইসহ নাগরিক সমাজ তথা সব অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ করে চূড়ান্ত করা প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে আইনটির খসড়া অবিলম্বে সবার জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সাংবিধানিক অঙ্গীকার ও আপামর জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটিয়ে নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের পথে অনেকটা আকস্মিকভাবে সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা ইতিবাচক। নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে নিবন্ধিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই নাগরিক সমাজ নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের তাগিদ দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় আলোচনায় অংশ নেওয়া অধিকাংশ রাজনৈতিক দলও কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের দাবি জানায়। আলোচনায় অংশ নেওয়ার আগমুহূর্তে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার নির্বাচন কমিশন আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করে।’

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, বরাবরের মতো সার্চ কমিটির মাধ্যমেই নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। কিন্তু সার্চ কমিটির জন্য কিছু সাধারণ মানদণ্ড নির্ধারণ করার বাইরে খসড়া আইনে কী আছে, তার বিস্তারিত এখনো সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও নাগরিক সমাজের অজানা। বিশেষ করে সার্চ কমিটিতে নারী প্রতিনিধি থাকবে কি না, কমিটিতে যে দুজন নাগরিক প্রতিনিধির কথা বলা হচ্ছে, তাদের যোগ্যতার মাপকাঠি কী হবে, কমিটির কর্মপদ্ধতি কিরূপ হবে, প্রস্তাবিত নামগুলো প্রকাশ করা হবে কি না, সর্বোপরি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ও অন্যান্য কমিশনারদের যোগ্যতা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তারা নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ অবস্থান সমুন্নত রাখার মতো সৎসাহস ও দৃঢ়তাসম্পন্ন হবেন—এই নিশ্চয়তা বিধানের পদ্ধতি আইনে অন্তর্ভুক্ত করা অপরিহার্য।’

ড. জামান আরও বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও নাগরিক সমাজের মতামত ও যাচাই-বাছাই ছাড়া আইনটি পাস করা হলে এর গ্রহণযোগ্যতা যেমন প্রশ্নবিদ্ধ হবে, তেমনই কার্যকারিতা নিয়েও নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে না। তাই, জনপ্রত্যাশাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সর্বজনের মতামতের ভিত্তিতে আইনটি পাশের বিকল্প নেই।’