পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর সাহস ও সংকল্পের প্রশংসা চীনা রাষ্ট্রদূতের
নানা তর্ক-বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে এটি উদ্বোধনের অপেক্ষায়। দেশীয় অর্থায়নে বিশাল এ সেতু নির্মাণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহস ও সংকল্পের প্রশংসা করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।
রোববার (১৯ জুন) রাতে ঢাকায় চীনা দূতাবাসে কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন তিনি। সোমবার (২০ জুন) চীনা দূতাবাসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বিষয়টি প্রকাশ করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ‘বিদেশি কিছু উন্নয়ন অংশীদার বিশ্বাসই করতে পারেনি যে, বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব অর্থায়নে এ ধরনের একটি বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারবে। বৈদেশিক তহবিল বন্ধ সত্বেও দেশীয় অর্থায়নে পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) অসীম সাহস দেখিয়েছেন। সত্যিই আমার সন্দেহ হয়, এ ধরনের কঠিন সিদ্ধান্ত অন্যদের পক্ষে নেওয়া সম্ভব হতো কি না।’
লি জিমিং বলেন, ‘সেতু সম্পর্কে ভাবতে গেলেই তিনটি শব্দ আমার মনে ভেসে ওঠে। তা হলো সাহস, সংকল্প এবং সমৃদ্ধি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি স্বপ্ন থেকে সেতুটি আজ দৃঢ় বাস্তবে রূপ নিয়েছে এবং এখন থেকে কেউ সন্দেহ করতে পারবে না যে, বাংলাদেশ পারে না। পদ্মা সেতুকে ঘিরে বাংলাদেশের ওপর আস্থা আরও বেড়েছে চীনের।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘পদ্মা সেতু কেবল দুই খণ্ড ভূমিকেই সংযুক্ত করবে না, বরং এটি আমাদের জনগণের হৃদয়কে সংযুক্ত করে অভিন্ন সমৃদ্ধি ও ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবে। আমি বিশ্বাস করি, যাতায়াতের জন্য সেতুটি খুলে দেওয়ার পর এটি বাংলাদেশের জনগণকে উপকৃত করবে। এটি দক্ষিণ এশিয়ার যোগাযোগের ক্ষেত্রে অবদান রাখবে। এটি চীন ও বাংলাদেশের ভ্রাতৃত্বের চিরবন্ধন হিসেবে কাজ করবে।’
পদ্মা সেতু নির্মাণে চীনা কোম্পানির সংশ্লিষ্টতা থাকায় গর্ববোধ করেন রাষ্ট্রদূত লি। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সম্ভবত এটাই সবচেয়ে বড় সেতু, যা চীনা কোম্পানিগুলো এ যাবত চীনের বাইরে তৈরি করেছে। সুতরাং আমি মনে করি, চীনের পক্ষেও এ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা একটি সাহসী পদক্ষেপ।’
বিদেশি অর্থায়ন ছাড়া সেতু নির্মাণে বাংলাদেশ বিশ্বকে কী বার্তা দিচ্ছে, রাষ্ট্রদূতের কাছে জানতে চান সাংবাদিকরা। জবাবে লি জিমিং বলেন, ‘এটা শিক্ষা দেয় যে, বাংলাদেশের ওপর আস্থা রাখা উচিত।’
চীনের নেতৃত্বাধীন বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে বলে কথা উঠেছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, বিআরআই সম্পর্কে অনেকে ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে।’
হাসান/রফিক