ঢাকা     সোমবার   ০১ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৭ ১৪৩১

‘টেকসই নগরায়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছার বিকল্প নেই’ 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০৭, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩  
‘টেকসই নগরায়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছার বিকল্প নেই’ 

‘ঢাকার বিকেন্দ্রীকরণ এবং বাংলাদেশের টেকসই নগরায়ন’ শীর্ষক সেমিনারে অতিথিরা

‘টেকসই নগরায়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছার বিকল্প নেই। সুশাসন, পরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়ন, প্রান্তিক পর্যায়ে অবকাঠামো উন্নয়ন, পর্যাপ্ত গণপরিবহন ব্যবস্থা এবং টেকসই অবকাঠামো উন্নয়ন ঢাকা শহরের বিকেন্দ্রীকরণ ও বাংলাদেশের টেকসই নগারয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’ 

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) অডিটোরিয়ামে ‘ঢাকার বিকেন্দ্রীকরণ এবং বাংলাদেশের টেকসই নগরায়ন’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেছেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার। 

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ।  

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে নগরায়ন এমনভাবে গড়ে উঠেছে, যেখানে আমাদের জিডিপির ৬৫ শতাংশ আসছে শহরাঞ্চল থেকে। ঢাকাকেন্দ্রিক নগরায়নের জন্য আমরা যানজট, পানিদূষণ, বায়ুদূষণ প্রভৃতি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি। আমাদের কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বাড়ছে জ্বালানি খরচ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি। এমতাবস্থায় ঢাকার বিকেন্দ্রীকরণের বিকল্প নেই। পাশাপাশি ঢাকার নগরবাসীর জীবনমান উন্নয়নের জন্য সুচিন্তিত কর্মপরিকল্পনা নীতি গ্রহণ করা সময়ের দাবি।

তিনি আরও বলেন, দেশের প্রতিটি শহরে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে প্রয়োজনীয় আইনগত, প্রশাসনিক, অবকাঠামো ও আর্থিক সক্ষমতা বাড়ানো, পরিকল্পিত স্যাটেলাইট শহরের বিকাশ, ঢাকার বাইরে বসবাসকারীদের জন্য ট্যাক্স হলিডে, সুলভ মূল্যে ইউটিলিটি পরিসেবার পাশাপাশি আর্থিক প্রণোদনা দিতে হবে। তাছাড়া, টেকসই নগরায়ন ও শহরের বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত করতে সুশাসন, পরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়ন ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার বিকল্প নেই।

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আমাদের সবকিছু ঢাকাকেন্দ্রিক, এটাই বাস্তবতা। তবে, এটা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। সরকার ঢাকার বাইরেও অবকাঠমো খাতে উন্নয়ন করেছে। আশা করি, এর সুফল দেশবাসী পাবেন। 

তিনি জানান, মেট্রোরেলের অবকাঠামোর সম্প্রসারণ আরও ১০-১৫ বছর চলবে। ফলে, যানজট কমবে এবং নগরবাসী উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা উপভোগ করবেন। রাজধানীর ঢাকার উপশহরগুলোকে আরও উপযোগী করার জন্য সরকার নিরসলভাবে কাজ করছে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আগামী প্রজন্মের জন্য সুন্দর নগর নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের ব্যবহৃত প্লাস্টিক বর্জ্য দেশের জলবায়ু ও নদীগুলোকে মরাত্মকভাবে দূষিত করছে। এর প্রতি আরও মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সহ-সভাপতি স্থপতি ইকবাল হাবিব। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৩৩ শতাংশ লোক নগরে বাস করেন। ঢাকা মহানগরীতে প্রতিবছর নতুন করে ৫ লাখ লোক যোগ হচ্ছে।

ইকবাল হাবিব আরও বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়নের জন্য প্রতিনিয়ত গৃহহীন জনসংখ্যা বৃদ্ধি, বর্জ্য বৃদ্ধি, পানি ও বায়ুদূষণ, বৃক্ষ নিধন ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি, জলাবদ্ধতা, যানজট ও স্বাস্থ্য সঙ্কটের শিকার হচ্ছি। 

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের স্থাপত্য অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান স্থপতি কাজী গোলাম নাসির, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবি সমিতির প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন এবং নতুনধারা এ্যাসেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মো. শহীদ-উজ্জ-জামান সেমিনারে অংশ নেন।

এনএফ/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়