ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা আনতে সংসদে বিল পাস

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪৮, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩  
সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা আনতে সংসদে বিল পাস

ফাইল ফটো

সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত, ক্রয় প্রক্রিয়া সহজ ও টেকসই এবং ক্রয় কাজে অবাধ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিল-২০২৩’ পাস করা হয়েছে। আগামীতে এই বিধান অনুযায়ী নতুন একটি কর্তৃপক্ষ (অথরিটি) গঠিত হবে।

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। কণ্ঠভোটে বিলটি পাস হয়। 

বিলের ওপর জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব দেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা। প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, শামীম হায়দার পাটোয়ারি, বেগম রওশন আরা মান্নান, কাজী ফিরোজ রশীদ ও রুস্তম আলী ফরাজী এবং গণফোরামের মোকাব্বির খান ও স্বতন্ত্র সদস্য রেজাউল করিম বাবলু।

সংসদে পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, এই আইনের অধীনে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত আইনগুলোর প্রতিপালন নিয়ন্ত্রণ, পরিবীক্ষণ, সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধানের জন্য বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ) গঠিত হবে। বিপিপিএ’র ১৭ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে। এর চেয়ারম্যান হবেন পরিকল্পনামন্ত্রী এবং ভাইস চেয়ারম্যান হবেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব। সরকারের নিয়োগ করা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃপক্ষের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

বিলের ৯ ধারায় কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ও কার্যাবলিতে বলা হয়েছে, এই কর্তৃপক্ষ সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত নীতি, কৌশল ও আইনি কাঠামো প্রণয়ন, বিপিপিএর পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনাবিষয়ক নীতি প্রণয়ন, বিপিপিএর উন্নয়ন সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা অনুমোদন, বিপিপিএর সামগ্রিক কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা, প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ২০০৬ ও বিধিমালা ২০০৮-এর প্রয়োজনীয় সংশোধন আনাসহ সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে।
বিলের ১৫ (৪) ধারায় বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে সরকারি কেনাকাটার তথ্য, দলিল ও নথিপত্র তলবের ক্ষমতা থাকবে বিপিপিএর। কেনাকাটার ক্ষেত্রে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত আইনগুলো সঠিকভাবে মানা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করতে সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ ও নথিপত্র পর্যালোচনা করতে পারবে। সরকারি কেনাকাটায় কোনো আইন ও নিয়ম লঙ্ঘন হলে তা সংশোধন করে কোনো ক্রয়কারীকে ক্রয় প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন বা সংশোধন করার পরামর্শ ও সুপারিশ বা প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিতে পারবে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণসম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত এবং ক্রয় প্রক্রিয়ায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ২০০২ সালে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আইএমইডির অধীনে একটি ইউনিট হিসেবে সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) গঠন করা হয়। সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধি ও পেশাদারি সৃষ্টির লক্ষ্যে সিপিটিইউ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু, সরকারের উন্নয়ন বাজেটের পরিমাণ প্রতিবছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে অনুযায়ী সরকারি ক্রয়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারি ক্রয়ের এ বর্ধিত কলেবরের আইনি ও কারিগরি তত্ত্বাবধানের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল ও অবকাঠামো সিপিটিইউতে নেই। তাই, আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করার প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়াজনিত বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি নতুন প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এজন্য বিলটি আনা হয়েছে।

আসাদ/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়