জনগণ নির্ধারণ করবে, কারা দেশ চালাবে: তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘ক্ষমতার মালিক জনগণ। আমরা জনগণের শক্তিতে বলীয়ান। জনগণই এ দেশের মালিক। জনগণই নির্ধারণ করবে, কারা দেশ পরিচালনা করবে, কারা করবে না।’

সোমবার (১৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন প্রসঙ্গে বন্ধুরাষ্ট্রের যে কেউ যেকোনো পরামর্শ দিতে পারে। দেশ আমাদের, দেশের মালিক জনগণ। জনগণ কী চায়, সেটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তারা পরামর্শ দিতে পারে, সে পরামর্শ গ্রহণ করব কি না, সেটি আমাদের এখতিয়ার।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকার করতে হবে—বিএনপির এসব শর্ত নিয়ে কখনো সংলাপ হবে না বলেও মন্তব‌্য করেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান বিএনপির আন্দোলনে সাহস যোগাচ্ছে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এ মন্তব্য বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান স্পষ্টত ইসরায়েলকে সাহস যোগাচ্ছে। ইউরোপের যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, অস্ট্রিয়া, এমনকি অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কোনো মিছিল-সমাবেশ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে অর্থাৎ মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে দমন করা হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান একদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত ইসরায়েলকে সাহস যোগাচ্ছে, আরেকদিকে মির্জা ফখরুল সাহেব বলছেন, তাদেরকেও সাহস যোগাচ্ছে। কিন্তু, বিএনপির আন্দোলনে কারো সমর্থন নেই।’

বিএনপির বিদেশনির্ভরতার প্রতি ইঙ্গিত করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির জনগণের ওপর কোনো আস্থা নেই। সেজন্যই জনগণের দিকে না তাকিয়ে বিএনপি এখন কাকের মতো দূর দেশ থেকে কে কী বলল, সেদিকে তাকিয়ে থাকে। কাক যেমন কখন কে খাবারের উচ্ছিষ্ট ফেলল, সেদিকে তাকিয়ে থাকে; মির্জা ফখরুল সাহেবরাও তেমন পাশ্চাত্যের দিকে তাকিয়ে আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব এবং অন্যান্য দেশের সাথে আমাদের অত্যন্ত সুসম্পর্ক। মির্জা ফখরুল সাহেবরা এগুলো বলে তাদের কর্মীদের একটু চাঙ্গা রাখার চেষ্টা করছেন মাত্র।’

নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের কোনো প্রয়োজনীয়তা বা বাধ্যবাধকতা নেই। চলতি সরকারই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচনকালে বর্তমান মন্ত্রিসভার পুরোটাই থাকবে, নাকি সেটি ছোট কিংবা বড় করবেন, সেটি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার।’

বৃহৎ শক্তির নাখোশের শঙ্কায় নিশ্চুপ বিএনপি বর্বরতা ও ইসরায়েলের পক্ষ নিয়েছে

ফিলিস্তিনের বিষয়ে বিএনপির নিরবতা বিষয়ে প্রশ্নের জবাবের হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ইসরায়েল পাখি শিকার করার মতো করে ফিলিস্তিনিদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। যুদ্ধের কথা বলে পুরো গাজা উপত্যকায় খাদ্য, পানীয়, জ্বালানি, বিদ্যুৎ—সমস্ত কিছু বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকি, হাসপাতালেও বোমা বর্ষণ করছে। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন। আমি সরকারের তথ্যমন্ত্রী হিসেবেও এই বর্বরতা বন্ধের ব্যাপারে বক্তব্য রেখেছি। এটির সমালোচনা করে সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘যখন নির্বাচন আসে, তখন বিএনপি-জামাত কড়া মুসলমান হয়ে যায় এবং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানা ধরনের কথা বলে। অথচ, আজ যখন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, সেটি নিয়ে তারা নিশ্চুপ। একটি বৃহৎ শক্তি নাখোশ হতে পারে, সে কারণে নিশ্চুপ থেকে বিএনপি প্রকৃতপক্ষে এই বর্বরতা, নির্মমতা, যুদ্ধাপরাধের পক্ষ নিয়েছে এবং ইসরায়েলের পক্ষ নিয়েছে। দেশের জনগণ এদেরকে চিনে রাখবে।’