ঢাকা     মঙ্গলবার   ০২ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৮ ১৪৩১

অসাম্প্রদায়িকতাই বাংলাদেশের সৌন্দর্য: প্রধানমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪২, ২২ অক্টোবর ২০২৩  
অসাম্প্রদায়িকতাই বাংলাদেশের সৌন্দর্য: প্রধানমন্ত্রী

রামকৃষ্ণ মন্দিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিশ্বে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে সব উৎসব ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মিলে উদযাপন করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই অসাম্প্রদায়িকতাই বাংলাদেশের সৌন্দর্য।

রোববার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর রামকৃষ্ণ মন্দিরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষে তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গেলে এ কথা বলেন তিনি।

উৎসবমুখর পরিবেশে দেশে দুর্গাপূজা পালিত হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এ উপলক্ষে দেশ-বিদেশে অবস্থানরত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

তিনি বলেন, জাতির পিতা আমাদের যে সংবিধান দিয়েছেন তাতে সব ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করেছেন। সব ধর্মের মানুষ, যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে- সেটি তিনি নিশ্চিত করেছিলেন। দুর্ভাগ্য জাতির পিতাকে হত্যাকাণ্ডের পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তারা আমাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। মার্শাল ল’ অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে আমাদের ধর্মনিরপেক্ষতা বাতিল করেছিল। এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্যের বিষয়।

‘আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সংবিধান সংশোধন করে আমরা আমাদের ধর্ম নিরপেক্ষতা অর্থাৎ সব ধর্মের মানুষের ধর্ম পালনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছি। আমরা চাই এবং এটা আমাদেরই স্লোগান যে, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমার মনে হয়,  বাংলাদেশ বিশ্বে একটি দেশ, যেখানে সকলের মিলেমিশে উদযাপন করে থাকি। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের সৌন্দর্য।’

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশে আওয়ামী লীগ ছিল ও সবসময় আছে জানিয়ে তিনি বলেন, হাজারো পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। সেই সাথে সাথে আমাদের সংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছি যাতে সতর্ক থাকে এবং শান্তি বজায় থাকে, সেভাবে কাজ করতে।

সরকারপ্রধান বলেন, হাজারো পূজামণ্ডপ হচ্ছে সারাদেশে, শান্তিপূর্ণভাবে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অথচ এমনও দিন গেছে দেশে, যে পূজা না করে শুধু ঘরে পূজা করতে হয়েছিল। এরশাদ ও খালেদা জিয়ার আমলে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছিল।

কোভিড পরিস্থিতির কারণে ২০১৯ সালের পর এই প্রথম দুর্গাপূজায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে প্রতিবছরই তিনি শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন।

সেই কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, করোনার কারণে আসতে পারিনি। আজ আসতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। আপনার উৎসবমুখরভাবে পূজা করবেন। আশীর্বাদ করবেন যেন আমাদের সুজলা-সুফলা বাংলাদেশ, গোলা ভরা ধান, পুকুর ভরা মাছ খেয়ে পড়ে সুন্দরভাবে মানুষ যেন বাঁচতে পারে, উন্নত জীবন পায়- যেটা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল।

বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই দেশ সবারই। আপনারা কখনো নিজেদের ছোট মনে করবেন না।

‘সবসময় মনে করবেন এই মাটি আপনাদের, এই মাটিতে আপনারা জন্মগ্রহণ করেছেন; এখানে আপনাদের সব অধিকার নিয়েই বসবাস করবেন। অন্তত আমরা ক্ষমতায় থাকতে এই নিশ্চয়তা আপনাদের দিতে পারি।’

এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছি, দারিদ্রের হার কমিয়েছি। খাদ্যের কোনও অভাব নেই। যদিও যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার কারণে সারাবিশ্বে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে। একই ধাক্কা আমাদেরও সামাল দিতে হচ্ছে। শুরু থেকেই একটি কাজ আমরা করেছি। সকলকে আহ্বান করেছি এক ইঞ্চি জমিও যাতে অনাবাদী না থাকে। আমি খুশি, যে যার যতটুকু জমি আছে কিছু না কিছু ফলন উৎপাদন করছে।

এর আগে, রামকৃষ্ণ মন্দিরে পৌঁছে তিনি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ঢাকা রামকৃঞ্চ মিশনের অধ্যক্ষ ও সম্পাদক স্বামী পূর্ণাত্মানন্দজী মহারাজ। পরে প্রধানমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার স্মারক হিসেবে উপহার তুলে দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন ঢাকা রামকৃঞ্চ মিশনে পরিচালনা পর্ষদের সদস্য প্রবীর কুমার সাহা।

এসময় রামকৃষ্ণ মিশনের বিবেকানন্দের শিক্ষার্থীদের প্রকাশিত স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।

পারভেজ/এনএইচ 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়