ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

অফিসে না গিয়ে ভূমির সব কাজ করার ব্যবস্থা হচ্ছে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৪৩, ২৩ অক্টোবর ২০২৩  
অফিসে না গিয়ে ভূমির সব কাজ করার ব্যবস্থা হচ্ছে

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, মানুষ যেন ভূমি অফিসে না গিয়েই জমির মালিকানা পরিবর্তনের সব আইনি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারেন, সে ব্যবস্থা করতে আমরা কাজ করছি।

সোমবার (২৩ অক্টোবর) ঢাকার একটি হোটেলে ভূমি মন্ত্রণালয়; আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বিশ্বব্যাংকের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে সমন্বিত ও ব্যাপক ভূমি প্রশাসন’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ভূমি সচিব মো. খলিলুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ভূমিমন্ত্রী বলেন, দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমি আবশ্যিক উপাদান। ভূমিকেন্দ্রিক সমস্যা কমলে মানুষের মূল্যবান সময় এবং অর্থ বেঁচে যাবে, যা অধিকতর উৎপাদনশীল কাজে ব্যয় করা যাবে। ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক অর্থনীতি—দুই ক্ষেত্রে অগ্রগতিতেই দক্ষ ও টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এজন্যই ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশনকে এত গুরুত্ব দিয়েছেন।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী আশা প্রকাশ করে বলেন, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত ভূমি নিবন্ধন (রেজিস্ট্রেশন) ডিজিটাইজেশন দ্রুত শেষ করে, তা দেশব্যাপী ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত নামজারির (মিউটেশন) সাথে আন্তঃসংযোগ করা গেলে মানুষের জন্য ভূমিসেবা গ্রহণ আরও মসৃণ হবে।

দেশব্যাপী ডিজিটাল সার্ভে শেষ হলে মাঠে গিয়ে জরিপের প্রয়োজনীয়তা থাকবে না, উল্লেখ করে ভূমিমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য—জমি কেনার আগেই অনলাইনেই তাৎক্ষণিকভাবে ক্রেতা যেন জমির মালিকানা পরিবর্তনের ইতিহাস জানতে পারেন।

মন্ত্রী বলেন, আমরা স্বপ্ন দেখছি এমন এক সিস্টেম স্থাপনের, যেখানে ক্রেতা জমি কেনার সময় ডিজিটালি নিবন্ধন করার পরই যেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে নামজারি, হোল্ডিং তৈরি হয়ে ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণ হয় এবং একই সঙ্গে একক মালিকভিত্তিক খতিয়ান ও মৌজা ম্যাপও যেন প্রস্তুত হয়ে যায়।

ভূমি সচিব বলেন, ইতোমধ্যে ভূমি অপরাধ প্রতিকার ও প্রতিরোধ আইনে জুডিশিয়াল কোর্টে মামলা হয়েছে। আমরা এসব পর্যবেক্ষণ করছি। এই আইনের বিধি প্রণয়নের কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে। উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্য সম্পদের ওপর নারীদের যথাযথ অধিকারের বিষয়টি খুব গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।

কর্মশালায় প্রথম দিন বিশেষজ্ঞ আলোচকদের মধ্যে ছিলেন সাবেক সচিব ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খান, ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. মো. জাহিদ হোসেন পনির, বিশ্বব্যাংকের লিড ল্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন স্পেশালিস্ট মিকা পেটেরি টরহোনেন, বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ল্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন স্পেশালিস্ট ডং কিউ কোয়াক প্রমুখ।

কর্মশালায় অংশ নেন ভূমি মন্ত্রণালয় ও আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং এসবের আওতাভুক্ত দপ্তর/সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমিসেবা উন্নয়ন পরামর্শকবৃন্দ, মাঠ পর্যায়ে সরাসরি ভূমিসেবা প্রদানকারী ভূমি অফিস, সেটেলমেন্ট অফিস এবং নিবন্ধন অফিসের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশন কার্যক্রমের ভেন্ডার প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তাবৃন্দ।

প্রসঙ্গত, ভূমি ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাইজেশনের ফলে ইতোমধ্যে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। ডিজিটাইজেশনের কারণে নাগরিক সেবা বৃদ্ধি এবং সরকারের ভূমি ব্যবস্থাপনা অনেক সহজ হয়েছে। তবে, আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং নাগরিকের অনিষ্পত্তিকৃত সমস্যা সমাধানে এখনো অনেক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। 

এর মধ্যে উত্তরাধিকার সূত্রে মালিকানা সংশোধন, জমির মূল্য নির্ধারণ, ভূমি ব্যবস্থাপনা সিস্টেমের আধুনিকায়ন, নবায়নযোগ্য শক্তি বিষয়ে কর্মশালায় উপস্থাপনা এবং আলোচনা করা হচ্ছে। আগামী ২৫ অক্টোবর কর্মশালার দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম হওয়ার কথা রয়েছে।

নঈমুদ্দীন/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়