ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

‘টাকা পে’ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পদক্ষেপ: প্রধানমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১০, ১ নভেম্বর ২০২৩  
‘টাকা পে’ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পদক্ষেপ: প্রধানমন্ত্রী

ডিজিটাল বাংলাদেশের পর এখন সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘টাকা পে’ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পদক্ষেপ।

বুধবার (১ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে জাতীয় কার্ড স্কিম ‘টাকা পে’ সেবার উদ্বোধন করতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি। বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করতে ভিসা ও মাস্টারকার্ডের মতো ‘টাকা পে’ নামে দেশে এই প্রথম নিজস্ব কার্ড চালু হলো।

এর আগে জাতীয় কার্ড স্কিম ‘টাকা পে’র উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আজেকে আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের একটি দিন। ২০০৮ সালে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। এখন আমাদের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। ‘টাকা পে’ উদ্বোধন সেই স্মার্ট বাংলাদেশের একটি পদক্ষেপ। আমাদের সবকিছুই স্মার্ট হবে। জনগণ, সমাজব্যবস্থা, সরকার সবকিছু স্মার্ট হবে।

এ সময় জাতীয় কার্ড স্কিম ‘টাকা পে’র কারিগরি দিক দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের ব্যাংকিং সেক্টর গড়ে তোলার ক্ষেত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু অবদান স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতাপূর্ব বাংলাদেশে যেসব ব্যাংক ছিলো তার প্রায় সবগুলোর মালিকই ছিলো পাকিস্তানিরা। স্বাধীনতার পর তারা পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলো। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু চারটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন এবং নিজস্ব ব্যাংকিং খাত গড়ে তোলা, নিজস্ব মুদ্রার প্রচলন করেন। সেভাবেই আমাদের যাত্রাটি শুরু।    

তিনি বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করার পর অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে যারা ক্ষমতায় আসে তারা দেশের জন্য কিছুই করেনি। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে নিজস্ব আর্থিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়। ওই সময়ে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হই, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করি এবং আমরা বেসরকারি ব্যাংক অনুমোদন দেই।

সরকারের ক্যাশলেস সোসাইটি করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন যেসব কার্ড ব্যবহার করি সেগুলো বিদেশি সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত। সেখানে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রাও পে করতে হয়। এখন আর সেটা করা লাগবে না। আমাদের বিদেশি নির্ভরতাও হ্রাস পাবে। নিজস্ব নেটওয়ার্ক আমরা ব্যবহার করব, যাতে তথ্য কেউ না নিতে পারে। প্রতিটি মানুষের তথ্য যাতে সুরক্ষিত থাকে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা ক্যাশলেস সোসাইটি করতে চাই। আজ যে ন্যাশনাল স্কিম টাকা পে অর্থাৎ ক্যাশলেস সোসাইটি করার যে পদক্ষেপ, এটা বাংলাদেশের জন্য একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের ডিজিটাল সিস্টেমে স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে কাজ করা হচ্ছে। করোনাভাইরাসের সময় ‌‘আমার ঘর আমার স্কুল’ সেভাবে শিক্ষাব্যবস্থা করা, আমি নিজেই কত ভিডিও কনফারেন্স করেছি, যাতে আমরা কোনো ক্ষেত্রেই থেমে না যাই। যদি ডিজিটাল ব্যবস্থা না হতো আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল থাকত না।

মোবাইলে বৃত্তির টাকা পাঠানোর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে যে সত্যিকারের প্রাপ্য সেই পাচ্ছে, মাঝে কেউ নিতে পারছে না। শিক্ষক থেকে শুরু করে ছাত্রীদের বেতন ভাতা, পেনশন, সব কিছু সহজে দেওয়া যাচ্ছে। সবাই ডিজিটাল সিস্টেমে নিয়ে নিতে পারেন। অনলাইনে নিতে পারছেন, মোবাইল ফোনে নিতে পারছেন।

তিনি বলেন, পঁচাত্তরের পর যারা ক্ষমতায় আসে, তারা জাতির পিতা যেখানে দেশটাকে রেখে গিয়েছিল সেই অবস্থানে ধরে রাখতে পারেনি। মাথাপিছু আয়, প্রবৃদ্ধি কমে গিয়েছিল। দেশ সম্পূর্ণ পরনির্ভরশীল হয়ে পড়ে। অন্যের কাছে হাত পেতে চলা– এটাই যেন আমাদের নিয়তি ছিল। যাই হোক, আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে আমাদের প্রচেষ্টাই ছিল আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াব, নিজেদের আর্থিক ব্যবস্থাপনা আমরা গড়ে তুলব। সেইসঙ্গে কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি করব।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ মাত্র পাঁচ বছর আমরা সময় পেয়েছিলাম। সে সময় আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করি, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করি এবং আমরা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতকেও সম্পূর্ণ উন্মুক্ত করে দিই। কিন্তু ২০০১ থেকে ২০০৮ আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি। তখন আবার দেশ পিছিয়ে যায়।

সরকারপ্রধান বলেন, আজকের বাংলাদেশ কারও করুণা ভিক্ষা করে না। আমরা এখন বিশ্ব দরবারে মর্যাদা নিয়ে চলতে পারি, যেটা আমাদের লক্ষ্য ছিল। এখন যেখানেই আমরা যাই, বাংলাদেশ নাম শুনলে দেখবেন আলাদা একটা মর্যাদা অর্জন করতে পেরেছি গত ১৪-১৫ বছরে। আমাদের লক্ষ্য এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা।

পারভেজ/ইভা 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়