কমিটি করে বিমানভাড়া পুনর্নির্ধারণে প্রধানমন্ত্রীর কাছে হাবের চিঠি
![কমিটি করে বিমানভাড়া পুনর্নির্ধারণে প্রধানমন্ত্রীর কাছে হাবের চিঠি কমিটি করে বিমানভাড়া পুনর্নির্ধারণে প্রধানমন্ত্রীর কাছে হাবের চিঠি](https://cdn.risingbd.com/media/imgAll/2023October/Untitled-1-2311051452.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
একটি স্বতন্ত্র টেকনিক্যাল কমিটি গঠনের মাধ্যমে হজযাত্রীদের বিমানভাড়া কমিয়ে হজ প্যাকেজ পুনর্নির্ধারণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। হাবের প্রেসিডেন্ট এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম স্বাক্ষরিত চিঠিটি রোববার প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পৌঁছানো হয়েছে। বিমান ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী, মুখ্যসচিব, বিমান ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠির অনুলিপি পাঠানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে হাব প্রেসিডেন্ট শাহাদাত হোসাইন তসলিম জানান, অতিরিক্ত অযৌক্তিক বিমান ভাড়ার কারণে হজযাত্রীদের বাড়তি খরচ দিতে হচ্ছে। এজন্য আমরা এ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটা স্বতন্ত্র টেকনিক্যাল কমিটি গঠনের কথা বলেছি, তারা সবকিছু পর্যালোচনা করে বিমানভাড়া নির্ধারণ করবেন। আর তাতে এখন যে বিমানভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে অনেক কমে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।
তিনি বলেন, বিমানভাড়া নিয়ে প্রতিবছরই অসন্তোষ তৈরি হয়। সব মহলে প্রশ্ন ওঠে। সাধারণ মুসলমানদের মধ্যেও নানা বিভ্রান্তি ও ক্ষোভ দেখা দেয়। সরকারিভাবে একটা কমিটি করে ভাড়া নির্ধারণ করা হলে সেই ভাড়া যা-ই হোক না কেন সবাই মেনে নেবেন। এ নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠবে না, এমনকি বিভ্রান্তি কিংবা ক্ষোভও থাকবে না। তাছাড়া বিমানভাড়া কমে গেলে হজযাত্রীরাও স্বস্তির সঙ্গে পবিত্র হজ পালন করতে পারবেন। সরকারের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হবে।
চিঠিতে হাব প্রেসিডেন্ট বলেন-
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এ বছরের বিমানভাড়া ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারিত ভাড়া বিগত বছর হতে ২ হাজার ৯৯৭ টাকা কম হলেও, বিভিন্ন বিষয়াদি বিবেচনায় আরও কমানো সম্ভব। যেহেতু বিমান একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, তাই তাদের একক কর্তৃত্বে ভাড়া নির্ধারণ যথাযথ হয়নি বলে হাব কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ মনে করে।
বর্তমানে এয়ারলাইন্সগুলো প্রায় ৭৫ হাজার টাকায় ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রিটার্ন টিকেট বিক্রি করছে এবং প্রায় ২০ শতাংশ আসন খালি রেখে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। হজের সময় প্রায় শতভাগ যাত্রী নিয়ে ফ্লাইট গমন করে। তাছাড়া খালি ফিরতি ফ্লাইটের পরিচালনা ব্যয়ও কম। সাধারণ ফ্লাইটের বিপনণ ও সিস্টেম পরিচালনায় অতিরিক্ত ব্যয় করতে হয়, যা হজের ফ্লাইটে করতে হয় না। সে হিসেবে ‘ডেটিকেটেড হজ ফ্লাইটের’ সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫০ হাজার টাকা বিমানভাড়া হতে পারতো।
আপনার (প্রধানমন্ত্রীর) সরাসরি দিক-নির্দেশনা ও প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনা সৌদি সরকারের কাছেও প্রশংসিত হয়েছে।
হাব সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের হজযাত্রীদের কল্যাণে ও সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে আপনার নেওয়া সব পদক্ষেপ এরইমধ্যে সর্বমহলে বিশেষ করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মাঝে প্রশংসিত ও সমাদৃত হয়েছে। হজযাত্রীদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রথা বাতিল, আধুনিক ই-হজ ব্যবস্থাপনা, হজযাত্রীদের সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন বাংলাদেশে সম্পন্নকরণ, আশকোনা হজ ক্যাম্প সংস্কার ও বর্ধিতকরণসহ হজযাত্রীদের ভোগান্তি নিরসনকল্পে সামগ্রিক হজ ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য আপনি যে অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন, তা বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনার ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে।
বাংলাদেশের হজযাত্রী ও হজ এজেন্সির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে চিঠিতে হাব প্রেসিডেন্ট তসলিম বলেন, পবিত্র হজের সঙ্গে বাংলাদেশের মুসলমানদের আবেগ-অনুভূতি নিবিড়ভাবে জড়িত। বিষয়টি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভীষণ রকমের স্পর্শকাতর। কেবল হজযাত্রীদের পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন এবং পাড়া-প্রতিবেশিই নয়; বাংলাদেশের সব মুসলিম নাগরিক হজ ব্যবস্থাপনার বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, হজ্জ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে সততা ও নিষ্ঠার সাথে আপনার সরকারকে সহযোগিতা করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি হজযাত্রীদের কল্যাণে সর্বদাই নিবেদিত এবং আধুনিক ও কল্যাণমুখি হজ ব্যবস্থাপনায় আপনার ভূমিকা সর্বমহলে প্রশংসিত। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সারা দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমগণ কেবল আপনার দিক তাকিয়ে আছে। অতএব বর্তমান প্রেক্ষিত বিবেচনায় একটি স্বতন্ত্র টেকনিক্যাল কমিটির মাধ্যমে হজযাত্রীদের বিমানভাড়া কমিয়ে হজ প্যাকেজ পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে আপনার সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
নঈমুদ্দীন/এনএইচ
আরো পড়ুন