ঢাকা     রোববার   ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১৪ ১৪৩১

নিয়মিত সফরেই নয়া দিল্লিতে যাচ্ছেন পররাষ্ট্র সচিব

কূটনৈতিক প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:২৭, ২২ নভেম্বর ২০২৩  
নিয়মিত সফরেই নয়া দিল্লিতে যাচ্ছেন পররাষ্ট্র সচিব

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন (ফাইল ফটো)

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের ভারত সফর নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। তবে, এসব নাকচ করে পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন, কোনো এজেন্ডা নয়, নিয়মিত সফরে ভারতে যাচ্ছেন তিনি।

বুধবার (২২ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান পররাষ্ট্র সচিব। বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে যাচ্ছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

সফরের বিষয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, আলাদা কোনো বার্তা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না। এটা একটা রুটিন মেকানিজম। সেখানে দুই দেশের সব বিষয়ে আলোচনা হবে।

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের এ বৈঠকে যেসব বিষয় অগ্রাধিকার পাবে, সেগুলো হলো—রাজনীতি, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, বাণিজ্য-বিনিয়োগ, কানেক্টিভিটি, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, পানিবণ্টন, আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক এবং বহুপাক্ষিক সহায়তা, উন্নয়ন সহায়তা, কনস্যুলার সহযোগিতা প্রভৃতি। এর বাইরেও আলোচনা হতে পারে।

দুই দেশের যৌথ পরামর্শক সভার পাশাপাশি চলমান রাজনৈতিক সম্পর্ক বা প্রধানমন্ত্রীর কোনো রাজনৈতিক বার্তা নিয়ে ভারত যাচ্ছেন কি না? এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় পররাষ্ট্র সচিবের কাছে। জবাবে তিনি বলেন, আপনারা মেলাতে পারেন। সাধারণত, গত এক বছরে আমাদের অগ্রগতি আছে। সেগুলোর একটা টেকিং টকস এবং নির্বাচনের পরে বা আগামী বছরে আমরা কোন কোন জায়গায় আরও বেশি জোর দিতে পারি। যেন সময় নষ্ট না হয়, বিশেষ করে যোগাযোগের ক্ষেত্রে। সেগুলো থাকতে পারে।

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমি মনে করি না, অপ্রয়োজনীয় অন্য কোনো হিডেন (লুকোনো) এজেন্ডা আছে। যেহেতু নির্বাচন সামনে, তাদের পক্ষ থেকে যদি কোনো কিছু জানার থাকে, সেটা অবহিত করতে পারব। তবে, আমি প্রধানমন্ত্রী থেকে আলাদা কোনো বার্তা নিয়ে যাচ্ছি না।

চলতি বছরে দুইবার এফওসি করার কারণ ব্যাখ্যা করে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, পর্যালোচনা করার জন্য যেতেই পারি। একাধিকবার হবে না (এফওসি), এমন কোথাও বলা নেই। বছরের প্রথমে হয়েছে, এখন আবার বছরের শেষে হচ্ছে। এর মধ্যে প্রচুর অগ্রগতি হয়েছে।

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কানেক্টিভিটির গুরুত্ব তুলে ধরে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, কানেক্টিভিটি সবচেয়ে বেশি সময় লাগে। এখন কিন্তু অনেকটা শেইপের মধ্যে এসে গেছে। ইন্দো-প্যাসিফিকে ভারতের আগ্রহ আছে, আমেরিকার আছে। আমরা কী কী ধরনের প্রজেক্টস নিতে পারি সেখানে, আমরা আমাদের আউটলুকস বলেছি, সেটা নিয়েও আলোচনা করার সুযোগ আছে।

আলোচনায় আরও কী কী থাকতে পারে, তা তুলে ধরেন পররাষ্ট্র সচিব। তিনি বলেন, গ্লোবালের স্বার্থ সংরক্ষণে কীভাবে আমরা কাজ করতে পারি। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন বহুপাক্ষিক ফোরামে কীভাবে আমরা একে অপরকে সহযোগিতা বাড়াতে পারি, সে বিষয়গুলো এখানে আলোচিত হবে। এক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ কী ধরনের ভূমিকা পালন করতে পারে, সেগুলো নিয়েও আলোচনা হবে। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়েও তাদের আপডেট দেব। কারণ, আমরা সব সময় তাদের সহযোগিতা চেয়ে এসেছি।

এজেন্ডায় শুরুতে রাজনীতির প্রসঙ্গ রাখেন মাসুদ বিন মোমেন। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওদের নির্বাচন আছে সামনে। আমাদেরও নির্বাচন আছে। নির্বাচন পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী দুই দেশের মধ্যে যে সম্পর্ক, এটা তো খুবই বহুপাক্ষিক সম্পর্ক; ট্রেড আছে, বিনিয়োগ আছে, পিপল টু পিপল কন্টাক্ট আছে, ভিসা ইস্যু আছে—এগুলো যেন নির্বাচনের পরও স্মুথলি চলতে পারে।

এ সফরকে রাজনৈতিক সফর বলা যায় কি না, জানতে চাওয়া হয় মাসুদ বিন মোমেনের কাছে। জবাবে তিনি বলেন, রাজনৈতিক ব্যাখ্যা কীভাবে দেবেন, আমি জানি না। আমি মনে করি, নিয়মিত যে মিটিং হয়, এটাও সেভাবে হবে। এটা ঠিক যে সামনে আমাদের নির্বাচন আছে।

উল্লেখ্য, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার আমন্ত্রণে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির পর দ্বিতীয় দফায় আগামী শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) দিল্লিতে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক হতে যাচ্ছে। সভায় ঢাকার পক্ষে মাসুদ বিন মোমেন এবং দিল্লির পক্ষে বিনয় কোয়াত্রা প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন। দিল্লিতে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে পররাষ্ট্র ছাড়াও, স্বরাষ্ট্র, বাণিজ্য ও নৌ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

হাসান/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়