ঢাকা     শনিবার   ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২০ ১৪৩১

‘জনগণের সমর্থন থাকলে প্রতিকূল পরিবেশেও নির্বাচনে জয় সম্ভব’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২৬, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩  
‘জনগণের সমর্থন থাকলে প্রতিকূল পরিবেশেও নির্বাচনে জয় সম্ভব’

ডিএসসিসি আয়োজিত আলোচনা সভায় মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, জনগণের আস্থা-সমর্থন থাকলে জনরায়ের মাধ্যমে চরম প্রতিকূল পরিবেশেও নির্বাচনে জয়লাভ করা সম্ভব।

শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে নগর ভবনের সম্মুখ প্লাজায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ডিএসসিসি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। 

মেয়র তাপস বলেন, ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, মাওলানা ভাসানী ও শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট গঠন করে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে। সে সময় মুসলিম লীগ ছিল সবচেয়ে প্রভাবশালী সংগঠন। প্রতিকূল পরিবেশে সেদিন নৌকা প্রতীক নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়া বাংলাদেশের অন্যান্য সকল রাজনৈতিক সংগঠন বলেছিল, নির্বাচনে যাওয়া মানে আত্মহত্যার শামিল। এমনও স্লোগান উঠেছিল, ‘ভোটের বাক্সে লাথি মারো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’। সে বারও নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ ছিল না। সবকিছুই ছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অধীন। প্রশাসন ছিল পাকিস্তানের। সবকিছুই যখন পাকিস্তানি প্রশাসনের অধীন, তখনও বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমি নির্বাচনে যাবো। সেই প্রতিকূল পরিবেশেও আওয়মী লীগ ১৬৯ আসনের মধ্যে ১৬৭ আসনে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে। বঙ্গবন্ধু জনগণের সেই রায় নিয়ে স্বাধীনতার পথে এগিয়ে গেছেন। সর্বশেষ ২০০৮ সালের নির্বাচনও আওয়ামী লীগের জন্য অনুকূল পরিবেশ ছিল না। রাষ্ট্রপতি ছিলেন ইয়াজউদ্দিন আহমেদ। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ছিলেন ফখরুদ্দিন আহমেদ আর সেনাপ্রধান ছিলেন মঈন ইউ আহমেদ। তারা সবাই বিএনপি কর্তৃক নিযুক্ত। পুরো প্রশাসন ছিল বিএনপি-জামায়াতের পক্ষে। কিন্তু, জননেত্রী শেখ হাসিনা কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে চরম প্রতিকূল পরিবেশে দিন বদলের সনদ ঘোষণা করেন এবং আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। আওয়ামী লীগ ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৩টি আসন নিয়ে এককভাবে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। সুতরাং নির্বাচন কোনো অনুকূল পরিবেশ, প্রতিকূল পরিবেশের ওপর নির্ভর করে না। যদি জনগণের ওপর আস্থা থাকে, জনগণের সমর্থন থাকে তাহলে চরম প্রতিকূল পরিবেশেও নির্বাচনে জয়লাভ করা সম্ভব।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন প্রক্রিয়া উল্লেখ করে ব্যারিস্টার তাপস বলেন,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চার বছর মেয়াদে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হয় এবং সেজন্য ৪ নভেম্বর দিনটি নির্দিষ্টভাবে নির্ধারিত। এর কোনো ব্যত্যয় কোনভাবেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সম্ভব না। কোনো রাজনৈতিক সংগঠন অংশগ্রহণ করুক বা না করুক, কোনো প্রার্থী নির্বাচনে আসুক বা না আসুক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৪ নভেম্বর নির্বাচন হবে। তেমনই সকল দেশের যে সংবিধান আছে, সেই সংবিধান অনুযায়ী নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যই নির্বাচন করাটা অত্যাবশকীয়। তাই, ২০২৪ সালে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ৭ জানুয়ারি যে তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে, সে দিনেই আমাদের নির্বাচন করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা আছে।

আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটির কাউন্সিলরগণসহ করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন৷

আলোচনা সভা শেষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সঙ্গীত শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।

এএএম/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়