ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

‘বিএনপির অসহযোগে তাদের কর্মীরাই নেতাদের সহযোগিতা করছে না’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪০, ২১ ডিসেম্বর ২০২৩  
‘বিএনপির অসহযোগে তাদের কর্মীরাই নেতাদের সহযোগিতা করছে না’

বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনে তাদের কর্মীরাই নেতাদের সহযোগিতা করছে না ব‌লে মন্তব্য ক‌রে‌ছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের তথ্য অধিদফতর সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

নির্বাচনে বিএনপির অসহযোগ আন্দোলন ও ভোটার উপস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ইতিমধ্যে জনগণের ভেতরে যেভাবে উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে এবং গড়ে প্রতিটি আসনে ৭ জনের বেশি প্রতিদ্বন্দ্বী, সে কারণে নির্বাচন অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। যে যতো কথাই বলুক, নির্বাচনবিরোধীরা যতো চেষ্টাই করুক, ব্যাপক ভোটার উপস্থিতি হবে এতে কোনো সন্দেহ নাই। ভোটার উপস্থিতির জন্য বাড়তি কোনো প্রচেষ্টার প্রয়োজন আমরা মনে করি না। বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনে জনগণ সাড়া দেয়নি। তাদের কর্মীরাই নেতাদের সহযোগিতা করছে না।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার  সর্বোতভাবে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করছে। এখন সরকারের সমস্ত প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যস্ত হয়েছে। আপনারা জানেন, ক’দিন আগে নির্বাচন কমিশন দেশের বেশির ভাগ ইউএনওদের এবং অর্ধেকের বেশি থানার ওসি বদলি করেছে, কয়েকজন ডিসিকে বদলি করেছে। নির্বাচনের আয়োজক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সুতরাং ভোট সুষ্ঠু করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। সরকার এ ক্ষেত্রে সর্বোতভাবে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করছ।’

‘ট্রেনে আগুন নিয়ে বিএনপি নেতা রিজভী সাহেবদের মিথ্যাচার হত্যাকান্ডের চেয়েও নারকীয় বীভৎস ও কুৎসিত কদাকার’  বলেও মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী।

তি‌নি বলেন, ‘সরকার সবসময় দেশে শান্তি স্থিতি বজায় রাখতে চায়। সকল ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে চায়। আর সরকার ও দেশকে অস্থিতিশীল করার হীন উদ্দেশ্যে নির্বাচন বানচালের জন্য বিএনপি-জামায়াত ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে যেভাবে অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল এখনও একই কায়দায় সেটি করছে- এটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট। গত পরশু তেজগাঁওয়ে ট্রেনের বগিতে আগুন দিয়ে যে নারকীয়ভাবে মা ও সন্তানসহ আরো দু’জনকে এবং ইতিপূর্বে বহু মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে, তার চেয়েও আরো বেশি জঘন্য কুৎসিত কদাকার এবং সেই সন্ত্রাসের চেয়েও নারকীয় বীভৎস হচ্ছে রিজভী সাহেবদের মিথ্যাচার।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রিজভী সাহেব সম্পর্কে আমি এই শব্দগুলো ব্যবহার করতে চাই না। কিন্তু তার যে বক্তব্য, সে প্রেক্ষিতে আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, তার মিথ্যাচার নরকের কীটের চেয়েও জঘন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। যারা এই সমস্ত ঘটনা ঘটিয়ে, ঘটনার নির্দেশ দিয়ে আবার সেগুলোকে আড়াল করার চেষ্টা করে তারাও সমান অপরাধী। জনগণের দাবি উঠেছে, এই জঘন্য, কুৎসিত, কদাকার মিথ্যাচার যারা করছে, নরকের কীটের মতো আচরণ করছে, কথা বলছে, এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার। শুধু আগুনসন্ত্রাসী না, তাদের হুকুমদাতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি।’

এর আগে দুবাইয়ে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৮ এ দেশের অর্জন নিয়ে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সঙ্গে আলোচনায় মিলিত হন মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, ফোরামের সভাপতি কাউসার রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রমুখ এ সময় বক্তব্য রাখেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কপ-২৮ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রিত ছিলেন। তিনি সেখানে যেতে পারেননি। তার পক্ষ থেকে আমাকে পাঠিয়েছিলেন। সেখানে বাংলাদেশ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবিলায় যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছি সেগুলো প্রশংসিত হয়েছে। সে কারণে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং গ্লোবাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট মোবিলিটি (জিসিসিএম) যৌথভাবে প্রধানমন্ত্রীকে ‘ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার এওয়ার্ডে’ ভূষিত করেছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও আইওএমের ডিরেক্টর জেনারেল সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বাংলাদেশকে স্থানীয় অভিযোজনে সাফল্যের জন্য ‘গ্লোবাল সেন্টার অন এডাপটেশন এওয়ার্ড’ দেওয়া হয়েছে।’

ড. হাছান বলেন, ‘বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের অসহায় শিকার হলেও যেভাবে এই জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা করে এসেছে সেগুলো বিশ্বব্যাপী সবসময় প্রশংসিত হয়েছে। সে কারণে প্রধানমন্ত্রীকে ২০১৫ সালে ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কপ-২৮ সম্মেলনের অন্যতম প্রধান অগ্রগতি হচ্ছে ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড’ গঠন করা, যেটি আগে ছিলো না। এবং এই সম্মেলনে সবাই জীবাশ্ম জ্বালানী থেকে ধীরে ধীরে সরে আসার বিষয়ে একযোগে একমত হয়েছে।’

এ সময় নগর পরিকল্পনায় প্রকৃতির সাথে মানুষের সংযোগের প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে বেশিরভাগ নগর পরিকল্পনার ক্ষেত্রে প্রকৃতির সাথে মানুষের সংযোগ ঘটিয়ে তোলা হয়নি। সে কারণে নগরগুলো ইট-পাথরের জঞ্জালে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অনেকগুলো উদ্যোগ একা গ্রহণ করেছেন। সে উদ্যোগের প্রেক্ষিতে অনেকগুলো খাল পুনঃখনন করা হচ্ছে কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, খাল খননের সাথে যুক্তদের চেয়েও অনেক শক্তিশালী হচ্ছে খাল দখলকারীরা। এটি একটি বড় প্রতিবন্ধকতা। অবশ্যই প্রকৃতির সাথে মানুষের সংযোগ ঘটিয়েই নগর পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। শুধু নগর পরিকল্পনা নয়, যে কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনাই প্রকৃতির সাথে মানুষের সংযোগ ঘটিয়ে করা প্রয়োজন।

নঈমুদ্দীন/তারা 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ