ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

৬০ শতাংশের বেশি ভোট পড়ার আশা ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১২, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩  
৬০ শতাংশের বেশি ভোট পড়ার আশা ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের

ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: রাইজিংবিডি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সামগ্রিক পরিস্থিতি ও নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে ৬০ শতাংশের বেশি ভোট পড়ার আশা করছে ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকসহ ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ সম্মেলন এসব কথা বলা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের মুখপাত্র ও পরিচালক আব্দুল জাব্বার খান। 

তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণার পরবর্তী সময়ে সরকারি দলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের আচরণবিধি প্রশ্নে কঠোর রয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যে আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে নির্বাচন কমিশন কারণ দর্শানোর নোটিশ, কমিশনে তলব, জবাবদিহিতা, সতর্কতা এবং শুনানির মাধ্যমে বাতিল করা নমিনেশনের পুনরায় প্রার্থীতা ফিরে পাওয়াসহ নানা কাজ করেছে। নির্বাচন কমিশনের এ কার্যক্রমগুলো নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও স্বক্ষমতার প্রমাণ দেয়।

ফোরামের প্রস্তুতির বিষয়ে তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের সদস্য সংগঠনের ৬ হাজার ৩০১ জন স্থানীয় পর্যবেক্ষক কমপক্ষে ২ শতাধিক আসনে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। আমরা বিশ্বাস করি স্থানীয় নাগরিক, পর্যবেক্ষক ও সংবাদকর্মীরা সচেতন হলে জাল ভোট প্রদান, ব্যালট বক্স ও ব্যালট পেপার ছিনতাই, কেন্দ্রে আসা ও ভোটদানে বাধা প্রদান, ভোটের আগে অবৈধ অর্থের লেনদেন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

বিদেশি পর্যবেক্ষকদের প্রসঙ্গে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের মুখপাত্র বলেন, অতীতের ন্যায় এবারও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমিশনের আমন্ত্রণে এবং স্বেচ্ছায় প্রায় দুই শতাধিক বিদেশি পর্যবেক্ষক বাংলাদেশে আসবেন। ইতোমধ্যে প্রায় ১৫টি আন্তর্জাতিক সংগঠন ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের সাথে নির্বাচনের পরিবেশ, রাজনৈতিক দলের ভূমিকা, নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য যোগাযোগ করেছে। এর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্টের সহকারী ও জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের চিফ অব স্টাফ, সাবেক কংগ্রেসম্যান, ওএসসিই-এর সার্টিফাইড নির্বাচন পর্যবেক্ষকসহ ১০ জন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পর্যবেক্ষণে আসবেন বলে আমরা বিভিন্ন সূত্রে জেনেছি।

এছাড়াও যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড, পোল্যান্ড, জার্মানি, নেদারল্যান্ড, নরওয়ে, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা, ইরাক, জাপান, কংগো, ক্যামেরুন, থাইল্যন্ড, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, নেপাল ও ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যবেক্ষকরা জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আগ্রহী হয়ে স্বেচ্ছায় আবেদন করেছেন বলেও জানান নির্বাচন আলোচিত-সমালোচিত পর্যবেক্ষক ফোরামটির চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রয়েছে। যা বহির্বিশ্বে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখবে ও দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি নির্বাচনকে আরও প্রাণবন্ত করবে।

ভোটার কাস্টিং প্রসঙ্গে নিজেদের মত তুলে ধরে ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম জানায়, ভোটকক্ষ অনুপাতে প্রতি কক্ষে গড়ে দুটি করে গোপন বুথ থাকলে প্রতি বুথে গড়ে ২২৯ জন ভোট প্রদান করতে পারবে। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভোট হলে একজন ভোটার ভোট দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ ২ মিনিট সময় পাবেন। বিগত ১১টি নির্বাচন পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, জাতীয় নির্বাচনে সাধারণত ৫০ শতাংশ বা ৬০ শতাংশের বেশি ভোট গ্রহণ হয়নি। এ নির্বাচনে যদি ৫০ শতাংশ ভোট গ্রহণ হয় তাহলে একজন ভোটার ভোট দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ ৪ মিনিট সময় পাবেন। অতীতে এমন ব্যবস্থাপনায় ভোটগ্রহণে ধীর গতি, লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা, অনভিজ্ঞ নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে ভোট গ্রহণসহ নানাবিধ কারণে ভোটারদের সমস্যা তৈরি হতে পারে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ফোরামের চেয়ারম্যান আবেদ আলী বলেন, রাজনৈতিক দল তাদের নিজস্ব কৌশল অনুযায়ী নির্বাচনে আসবে কি আসবে না সেটা তাদের বিষয়। আমরা মনে করছি নির্বাচনে ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ ভোট হলে নির্বাচন স্বচ্ছ হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক বিচারপতি ছিদ্দিকুর রহমান মিয়া বলেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলোর নিজস্ব কৌশল রয়েছে। তারা তাদের কৌশল অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কে কেমন প্রচারণা চালাবে, চালাবে কি চালাবে না তা আমাদের দেখার বিষয় না। আমাদের কাজ নির্বাচনের আগে ও পরে পরিস্থিতি ও আচরণবিধি পালন হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ, ডুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান, বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহফুজুল ইসলাম, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আহমেদ আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদ ইকবাল বাহার ও ড. আজাদুল হক প্রমুখ।

/রায়হান/এসবি/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ