পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিলেন রাষ্ট্রপতি
পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
রাষ্ট্রপতি ও তার সহধর্মিণী ড. রেবেকা সুলতানা বুধবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে বঙ্গভবনে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন পাবনা সদরের ভোটার।
এদিন ভোট প্রদান শেষে আগামী ৭ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।
মো. সাহাবুদ্দিন আশা প্রকাশ করেন, সবার অংশগ্রহণে সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এবং সচিব সংযুক্ত মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান।
বঙ্গভবন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। আগামী ৭ জানুয়ারি এই ব্যালট খুলবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
ভোটকেন্দ্রে যেতে অসমর্থ ও কষ্টসাধ্য-এমন চার ধরনের ভোটাররা ডাকে (পোস্টাল ব্যালটে) ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন বলে আইনের বিধান রয়েছে। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে এই বিধান চালু হয়। আইনে এমন সুযোগ থাকলেও এই বিধানের তেমন প্রয়োগ হয় না। এবার রাষ্ট্রপতির ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে এ বিষয়টিকে জনপ্রিয় করতে চায় নির্বাচন কমিশন। এর আগে নির্বাচন কমিশন থেকে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার বিষয়ে প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
রাষ্ট্রপতির দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার জন্ম স্থান পাবনার ভোটার। ঢাকা থেকে সেখানে ভোট দিতে গেলে প্রটোকল দেওয়াসহ নানা জটিলতা এবং স্থানীয় মানুষের কষ্টের বিষয়টি মাথায় রেখে এবার পোস্টাল ব্যালটে ভোটের সিদ্ধান্ত নেন রাষ্ট্রপতি। আইনে এ ধরনের ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকায় রাষ্ট্রপতি দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে তা কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এর আগে গত ২১ নভেম্বর এক বিবৃতিতে নির্বাচন কমিশন জানায়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশের কোনো জেলখানায় বা অন্য কোনো আইনগত হেফাজতে আটক থাকলে, কোনো ব্যক্তি নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো দায়িত্ব পালনের জন্য তার নির্ধারিত ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত না থাকতে পারলে এবং বিদেশে বসবাসরত কোনো বাংলাদেশি ভোটার পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন।
কোনো ব্যক্তি যদি পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে চায় তাহলে তাকে নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে:
(১) নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার তারিখ থেকে পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে আবেদন করতে হবে।
(২) তিনি যে নির্বাচনী এলাকার ভোটার, সেই এলাকার রিটার্নিং অফিসারের কাছে পোস্টাল ব্যালটে ভোট প্রদানের জন্য একটি ব্যালট পেপারের আবেদন করবেন এবং আবেদনে ভোটারের নাম, ঠিকানা এবং ভোটার তালিকার ক্রমিক নম্বর উল্লেখ থাকবে।
(৩) রিটার্নিং অফিসার কোনো ভোটারের আবেদন পাওয়ার পর ওই ভোটারের কাছে ডাকযোগে একটি পোস্টাল ব্যালট পেপার এবং একটি খাম প্রেরণ করবেন। খামের ওপর তারিখ প্রদর্শন করতে ‘সার্টিফিকেট অব পোস্টিং’ এর একটি ফরম থাকবে, যা ভোটার ডাকযোগে পাঠানোর সময় ডাকঘরের উপযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী পূরণ করবেন।
(৪) কোনো ভোটার পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে ব্যালট পেপার পাওয়ার পর, নির্ধারিত পদ্ধতিতে ভোট দিয়ে ব্যালট পেপারটি তার কাছে পাঠানো খামে ন্যূনতম বিলম্বের মধ্যে রিটার্নিং অফিসারের কাছে ডাকযোগে পাঠিয়ে দিতে হবে। রিটার্নিং অফিসার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রাপ্ত ব্যালটের ফল মূল ফলের সাথে যোগ করে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করবেন। এ বিষয়ে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস/হাইকমিশনসমূহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
/হাসান/এসবি/