দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গণতন্ত্রের জন্য ভালো ইঙ্গিত: বিদেশি পর্যবেক্ষক
কূটনৈতিক প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী বা দল দ্বারা ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখানো বা হুমকি চোখে পড়েনি বিদেশি পর্যবেক্ষকদের। তা গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের জন্য ভালো ইঙ্গিত বলে মন্তব্য করেছেন তারা।
সদ্য সমাপ্ত জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের প্রতিক্রিয়া জানাতে সোমবার (৮ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে সাত দেশের পর্যবেক্ষক উল্লিখিত মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সাতটি দেশের উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক বিশ্লেষক, সাবেক কংগ্রেসম্যান এবং সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধিদল।
সংবাদ সম্মেলনে হোয়াইট হাউস ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ও চিফ অব স্টাফের সাবেক উপ- সহকারী এবং আমেরিকান গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিসের সিইও আলেকজান্ডার বার্টন গ্রে বলেন, ৭ জানুয়ারি আমরা তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় মোট ২০টি ভোট কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করেছি। আমরা ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশে এসেছি এবং গতকাল পর্যন্ত আমরা দেখেছি, বাংলাদেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকারের ব্যাপারে খুবই আন্তরিক, যা বিশ্বের অন্য দেশে খুব কমই পাওয়া যায়। বিশ্বের অনেক দেশ আছে, যারা ভোট না দেওয়ার জন্য জরিমানা আরোপ করে এবং অনেক দেশ ভোটকে উৎসাহিত করার জন্য অতিরিক্ত নাগরিকত্ব সুবিধা দেয়। কিন্তু, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ভোট দেওয়ার আগ্রহ ও উৎসাহ আছে, যা আমরা খুবই উৎসাহব্যঞ্জক বলে মনে করি।
আলেকজান্ডার বার্টন গ্রে আরও বলেন, সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৪টায় শেষ হয়। আমরা দেখেছি, বাংলাদেশের ভোট প্রক্রিয়া বিশ্বের অনেক দেশের মতোই। কিছু রাজনৈতিক দলের ভোট থেকে বিরত থাকা নিয়ে প্রচারণা এবং একটি বড় রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ না করা নির্বাচনের উৎসবমুখর পরিবেশে কিছুটা প্রভাব ফেলেছে। সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিলে পরিবেশ আরও সুন্দর ও আনন্দময় হতো। আমরা যেসব কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করেছি, সেখানে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে আমরা জানতে পেরেছি, ভোট দেওয়ার পথে তাদের কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী বা দল দ্বারা ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখানো বা হুমকি দেখা যায়নি। এটা গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের জন্য ভালো ইঙ্গিত দেয়। আমরা কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার কথা শুনেছি। সরকারি প্রার্থী, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য দলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের মতো, যা অপ্রত্যাশিত। কিন্তু, সার্বিক নির্বাচনি পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে সেসব ঘটনা খুবই নগণ্য।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন—সাবেক মার্কিন কংগ্রেসম্যান জিম বেটস, অস্ট্রেলিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য শাওকেট মুসেলমানে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ওএসসিইর সার্টিফাইড নির্বাচন পর্যবেক্ষক টেরি এল ইজলি, ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ ইকোনমিক ফোরামের কমিউনিকেশন ডিরেক্টর ক্রিস্টোফার জন ব্ল্যাকবার্ন। এছাড়াও আয়ারল্যান্ড, জার্মানি, নরওয়ে ও জাপানের প্রতিনিধিরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
হাসান/রফিক