ঢাকা     সোমবার   ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৮ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রী ট্রান্সজেন্ডারের পক্ষে নাকি বিপক্ষে, জানতে চায় ইসলামী আন্দোলন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৫১, ২৬ জানুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ২১:৫১, ২৬ জানুয়ারি ২০২৪
প্রধানমন্ত্রী ট্রান্সজেন্ডারের পক্ষে নাকি বিপক্ষে, জানতে চায় ইসলামী আন্দোলন

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে স্পষ্ট করতে হবে, তিনি ট্রান্সজেন্ডারের পক্ষে নাকি বিপক্ষে। ৯২ ভাগ মুসলমানের শিক্ষাব্যবস্থায় কারা ট্রান্সজেন্ডার সংযোজন করেছে, তাদের পরিচয় তুলে ধরতে হবে।

শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) বাদ জুমা রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে ‘শিক্ষা কারিকুলাম পরিবর্তন ও ট্রান্সজেন্ডারকে প্রোমোট’ করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ-পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, ট্রান্সজেন্ডারের নামে সমকামিতাকে প্রমোট করছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। সমকামিতার বিরোধিতা করায় আসিফ মাহতাব স্যারকে ব্র্যাক থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

তিনি তাকে চাকুরিতে পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে বলেন, অন্যথায় ব্র্যাকের সকল প্রতিষ্ঠানকে বয়কট করা হবে। ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক সরোয়ার স্যারকেও চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এ ধরনের আস্ফালন মেনে নেওয়া হবে না।

শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির বলেন, এ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত শিক্ষা কারিকুলামের মধ্যে মুসলমানদের ইতিহাস ছিল। আবু বকরের (রা.) ইতিহাস ছিল, ওমরের (রা.) ইতিহাস ছিল। ড. শহিদুল্লাহর হাজারও গল্প ছিল। কিন্তু, এগুলোকে আজ বিলীন করা হচ্ছে। ওরা (ভারত) জানে, কাঁটাতারের বেড়াই বড় সীমান্ত নয়, এ দেশের বড় সীমান্ত হলো মুসলমান। যদি এ দেশের মুসলমানকে নষ্ট করা যায়, তাহলে কাঁটাতারে বেড়া থাকবে না। এপার বাংলা ওপার বাংলা এক হয়ে যাবে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে। স্বাধীনতার পর থেকে দেশের শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ইসলামবিমুখ করে নাস্তিক্যবাদী জাতি গঠনে কাজ করা হচ্ছে।

ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা মহানগরের উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন—দলটির মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা খলিলুর রহমান, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, ডা. শহিদুল ইসলাম, নূরুজ্জামান সরকার, মুফতি ফরিদুল ইসলাম, কেএম শরয়াতুল্লাহ, মুফতি মাছউদুর রহমান, হাফেজ মাওলানা মাকসুদুর রহমান, হাফিজুল হক ফাইয়াজ, হাফেজ শাহাদাত হোসেন প্রধানিয়া, মাইদুল ইসলাম সিয়াম, কাওছার মাহমুদ প্রমুখ।

সীমান্তে বিজিবি সদস্য হত্যার নিন্দা জানিয়ে মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, বিজিবি হত্যাকাণ্ডের পরও কোনো প্রতিক্রিয়া না থাকা প্রমাণ করে, বিজিবির সদস্যদের পোশাক, বুট ও রাইফেল আছে; সাহস, রক্ত, মনুষ্যত্ব নেই।

হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা মানুষকে পশু বানানোর কাজ করছে। আমরা আশা করেছিলাম, শিক্ষাব্যবস্থার অসঙ্গতি নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়া হবে। কিন্তু, সরকার তা করেনি।

মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়িত হলে আগামী ১৫ বছর পর দেশে শিক্ষিত জাতি থাকবে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষায় ৩৫০ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে একজনও পাস করতে পারেনি। পরকিল্পিতভাবে শিক্ষাব্যবস্থা পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে।

বর্তমান শিক্ষা কারিকুলাম বাতিল করে নতুনভাবে দেশের দ্বীনদার বুদ্ধিজীবী ও হক্কানি ওলামায়ে কেরামের পরামর্শে নতুন কারিকুলাম প্রণয়ন করার দা‌বি জানান তি‌নি।

প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, বর্তমান সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় বিরোধী দল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিরোধী দল না থাকলে কার্যকর সংসদ থাকে না। সরকারও শক্তিশালী হয় না। জনগণ অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। এজন্য দেশে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কট ও রাজনৈতিক সঙ্কট চলছে।

পরে বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি পল্টন মোড় হয়ে বিজয়নগরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।

নঈমুদ্দীন/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়