ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

‘শ্রম আইন সংশোধনে তাড়াহুড়ো না করতে আইএলও’র পরামর্শ’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:১৬, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  
‘শ্রম আইন সংশোধনে তাড়াহুড়ো না করতে আইএলও’র পরামর্শ’

সংশোধিত শ্রম আইন পার্লামেন্টে পাস করার উদ্যোগ নিলেও আইনটি সংশোধনের বিষয়ে তাড়াহুড়ো না করতে পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)।

আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর তুওমো পাউটিয়াইনেনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ কথা জানান।

আইএলও’র সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন আজকে আমরা শ্রম আইনের যে সংশোধন, সেটার বিষয়ে বসেছিলাম। এর আগে যখন বসেছিলাম, তখন যে সংশোধনীর কথা বলা হয়েছিল, সেখানে আরও কিছু নতুন সংশোধনী আনার ব্যাপারে শ্রম মন্ত্রণালয় আমাকে জানিয়েছিল। সে বিষয়ে আইএলওর কিছু বক্তব্য দেওয়ার জন্য তারা অনুরোধ জানিয়েছে।

আইএলও দুই দিন আগে একটা অনুরোধ জানিয়েছে যে, জেনেভায় আইএলও’র একটি টিম আমাদের এই মিটিংয়ে থাকতে চায়। চার জনের একটি টিম আজকে ছিল। সেখানে প্রত্যেকটা ধারা নিয়ে আলোচনা করি। আমরা চাচ্ছিলাম শ্রম আইনটা এই পার্লামেন্টে পাস করার জন্য। কিন্তু তারা যে পরামর্শ দিয়েছে, সেটা করতে গেলে এই পার্লামেন্টে সে পরামর্শগুলো ইনকর্পোরেট করব কী করব না, সেটার সিদ্ধান্ত নিতে পারব না। সেজন্য আলোচনা হয়েছে উনারা যে পরামর্শ দিয়েছেন, সেটা পরে বিবেচনা করা যায়। এখন এই শ্রম আইনটা পাস করা যায়। তখন তারা বলেন, তাড়াহুড়ো না করে আমরা আলোচনা করে আরও কিছু করতে পারলে ভালো হবে, সেটা তারা জানালেন- যোগ করেন আইনমন্ত্রী।

আনিসুল হক বলেন, আমি তাদের পরিষ্কারভাবে একটা কথা জিজ্ঞেস করেছি যে, ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশনে আমাদের বিরুদ্ধে গত তিন বছর ধরে একটা অভিযোগ চলে যাচ্ছে। প্রত্যেকবারই বলেন যে, এটা মার্চ মাসে সিদ্ধান্ত হবে না, নভেম্বরে যাবে। আবার নভেম্বরে হবে না মার্চে যাবে। আমি সেজন্য বলেছি মার্চ মাসের গভর্নর বডির মিটিংয়ে যদি বলেন, এটা আবার নভেম্বরে যাবে। সেটা তো আমরা নিতে রাজি না। তখন তারা বলেছে, কমপ্রিহেন্সিভ লেবার অ্যাক্ট (সমন্বিত শ্রম আইন) তাদের পরামর্শ মিলিয়ে যদি করতে পারি, তাহলে সেটা এই মার্চ মাসে আমাদের অভিযোগ নিয়ে আলোচনার ব্যাপারে প্রতিবন্ধকতা হবে না, বরং আমরা যে আলোচনাগুলো করছি, সেটার একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

তিনি বলেন, এটার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন নীতিনির্ধারকরা। আর তার থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো, প্রধানমন্ত্রী এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, আমি যে কথাই বলি না কেন এবং আজকের যে আলোচনা, সেটা সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীকে ব্রিফ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা করতে পারব। আমরা আবার আজকে এটার ধারা ও উপধারা নিয়ে আলোচনা করতে গেলে অনেক সময় লাগবে। কিছু কিছু বিষয় আছে স্টেকহোল্ডারদের সাথেও আলাপ করতে হবে। তাই আমরা দুটি সিদ্ধান্তে এসেছি। একটা হচ্ছে এই মিটিংটা আবারও পরে অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে আইএলও’র উদ্যোগে একটা স্টেকহোল্ডার ফ্যাসিলিটি মিটিং হবে। যেখানে যেসব ইস্যু নিয়ে আমাদের সাথে তাদের মতপার্থক্য আছে, সেগুলো আলোচনা হবে।

আজ তারা কী পরামর্শ দিয়েছে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, মূল সাজেশন হচ্ছে ধরুন ব্যাপারটা হচ্ছে সংজ্ঞা। সংজ্ঞার মধ্যে তারা বলছেন সি মেন্ট যেটা, সেটার নাম বদলিয়ে সি ফেয়ার নাম করা। তারপরে বলছে ম্যানেজার এবং সুপারভাইজার স্টাফদের ওয়ার্কার বলা, এগুলো আমাদের সাথে তাদের সাথে আলোচনা হচ্ছে। যেমন ইউনিভার্সিটি টিচারদের ওয়ার্কার বলতে হবে, আমি সেটা নাকচ করে দিয়েছি। আমি বলেছি, ইউনিভার্সিটি টিচারদের আমরা ওয়ার্কার বলতে পারব না। তার কারণ হচ্ছে ইউনিভার্সিটি টিচাররাও চান না যে, তাদের ওয়ার্কার বলতে। ওয়ার্কারের সংজ্ঞায় আনতে, আমরাও চাই না।

ট্রেড ইউনিয়ন করার ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ নিয়ে কোনও আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ১০ শতাংশ নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি। ব্যাপারটি হচ্ছে আগে কথা ছিল ১৫ শতাংশ শুধু হবে তিন হাজার বা তার ঊর্ধ্বে যেসব কারখানা শ্রমিক আছে তাদের। এখন আমরা সেটাও তুলে দিচ্ছি। সকল শ্রমিকদের ব্যাপারে ১৫ শতাংশ কাজ করবে।

আইএলও প্রতিনিধিদলে ছিলেন সংস্থাটির প্রোগ্রাম ম্যানেজার নীরন রামজুথান, টেকনিক্যাল অফিসার চয়নিচ থামপারিপাত্র, সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মো. সাইদুল ইসলাম, প্রোগ্রাম অফিসার চৌধুরী আলবাব কাদির।

নঈমুদ্দীন/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়