স্বাধীন বিচার বিভাগ দেশের উন্নয়নকে এগিয়ে নেয়: প্রধানমন্ত্রী
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
![স্বাধীন বিচার বিভাগ দেশের উন্নয়নকে এগিয়ে নেয়: প্রধানমন্ত্রী স্বাধীন বিচার বিভাগ দেশের উন্নয়নকে এগিয়ে নেয়: প্রধানমন্ত্রী](https://cdn.risingbd.com/media/imgAll/2024February/Sheikh-Hasina-Risingbd-2402241158.jpg)
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ফাইল ফটো)
স্বাধীন বিচার বিভাগ, শক্তিশালী সংসদ ও প্রশাসন একটি দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার বিচার বিভাগকে প্রশাসন থেকে পৃথক করে সম্পূর্ণ স্বাধীন করেছে।
তিনি বলেছেন, ‘ক্ষমতা গ্রহণের পর আমরা বিচার বিভাগকে প্রশাসন থেকে আলাদা করে সম্পূর্ণ স্বাধীন করেছি, যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লক্ষ্য ছিল।’
শরিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন সাউথ এশিয়ান কনস্টিটিউশনাল কোর্টস ইন দ্য টুয়েন্টিফার্স্ট সেঞ্চুরি: লেসন্স ফ্রম বাংলাদেশ অ্যান্ড ইন্ডিয়া’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার বিচার বিভাগকে প্রশাসন থেকে আলাদা করার জন্য পৃথক বাজেট বরাদ্দ করে করেছে। বিচার বিভাগ আগে আর্থিক বিষয়ে সরকারের ওপর নির্ভরশীল ছিল।
আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইন প্রণয়ন করেছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এর আগে নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এটাকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) হিসেবে সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন করেছি এবং এর জন্য আলাদা অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি। এর মানে হলো—আমরা নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি এবং আওয়ামী লীগ সরকার তা করতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী সংবিধানে একটি অনুচ্ছেদ সংযোজন করেছে, যাতে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
তিনি বলেন, 'এই অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে আমি বলতে পারি, জনগণের মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষিত হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি অর্জন করেছে। ইনশাআল্লাহ, ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশে পরিণত করতে সক্ষম হব।’
প্রধানমন্ত্রী জানান, ইতোমধ্যে আমাদের ৯০০ জনের বেশি বিচারক ভারতের ন্যাশনাল জুডিসিয়াল একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এজন্য ভারত সরকার এবং ভারতের সুপ্রিম কোর্টকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার ও সাংবিধানিক মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থে বিভিন্ন কালজয়ী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুই বন্ধুপ্রতিম দেশ একই আইন ও আইনি দর্শনের উত্তরাধিকারী হওয়ায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তগুলো আমাদের উচ্চ আদালত দৃষ্টান্ত হিসেবে গ্রহণ করার নজির আছে। তাছাড়া, কমন ল কান্ট্রিজ হওয়ার সুবাদে যেকোনো দেশ যে কারও রায়কে প্রিসিডেন্স হিসেবে গ্রহণ করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি, এ ধরনের কনফারেন্স আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের সাথে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের মিথষ্ক্রিয়া বৃদ্ধি পাবে। আইনি জ্ঞান ও প্রজ্ঞার বিনিময়ের মাধ্যমে উভয় দেশের আদালত ও বিচার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সমৃদ্ধ হবেন। ফলে দুই দেশের বিচার বিভাগের মধ্যে সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় আরোহণ করবে।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এই সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে অদূর ভবিষ্যতে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার উদ্দেশ্যে উন্নত বিচার প্রশাসন বিনির্মাণে দুই দেশের মধ্যে একটি রোডম্যাপ তৈরি করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন—প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, ভারতের প্রধান বিচারপতি ধনঞ্জয় ওয়াই চন্দ্রচূড়; আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এবং আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ।
পারভেজ/রফিক
আরো পড়ুন