বৃহস্পতিবার থেকে ‘রেডি টু কুক ফিশ’ বিক্রি করবে বিএফডিসি 

কর্মজীবী নারীদের সুবিধার্থে বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) থেকে রাজধানী ও চট্টগ্রামে ৪০ প্রজাতির ‘রেডি টু কুক ফিশ (তাৎক্ষণিকভাবে রান্নার জন্য প্রস্তুত করা মাছ)’ বিপণন করা হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।

বুধবার (১৩ মার্চ) ঢাকায় মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফডিসি) ‘বিএফডিসি রেডি টু কুক ফিশ’ বিপণন কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে তিনি এ তথ্য জানান।

মো. আব্দুর রহমান জানান, ঢাকা শহরের ১৬টি স্পটে ছয়টি ভ্রাম্যমাণ ফ্রিজিং ভ্যানের মাধ্যমে ‘বিএফডিসি রেডি ফিশ’ বাজারজাত করা হবে। 

তিনি বলেন, রেডি টু কুক ফিশ বিপণন কার্যক্রমের ফলে নারীরা, বিশেষ করে কর্মজীবী নারীরা অনেক উপকৃত হবেন। বর্তমান সরকারের নানা উদ্যোগের ফলে নারীরা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত হচ্ছেন। ফলে, তাদের জীবনযাত্রা সহজ করার জন্য বিএফডিসি রেডি ফিশ খুবই ফলপ্রসূ হবে।

‘রাজধানীতে স্থায়ীভাবে বিপণনের স্থান তিনটি হলো— কারওয়ান বাজারে অবস্থিত বিএফডিসি ভবনের মৎস্য বিতান, যাত্রাবাড়ীর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং চট্টগ্রাম মৎস্য বন্দর। এছাড়া, ঢাকা শহরের ১৬টি ভ্রাম্যমাণ স্পট হলো: (১) মহাখালী ডিওএইচএস, ২৭ নম্বর রোড, (২) বনানী, নেভী হেড কোয়ার্টার ও গুলশান (আজাদ মসজিদ সংলগ্ন), (৩) সচিবালয়ের দক্ষিণ গেট, (৪) মিরপুর ডিওএইচএস, মিরপুর, (৫) স্বপ্ন নগর আবাসিক এলাকা, ক্যান্টনমেন্ট, (৬) মিরপুর অপরাজিতা ভবন, মিরপুর, (৭) ধানমন্ডি ৬ নম্বর, (৮) আজিমপুর কলোনী, আজিমপুর, (৯) লেডিস ক্লাব, ইস্কাটন, (১০) সচিব কোয়ার্টার, ইস্কাটন (বুধবার ও শনিবার), (১১) দুদক অফিস, সেগুনবাগিচা, (১২) এজিবি কলোনি, মতিঝিল, (১৩) শংকর, ধানমন্ডি, (১৪) সেচভবন, মানিক মিয়া এভিনিউ (শুক্রবার ও শনিবার), (১৫) ধানমন্ডি ২৮ এবং (১৬) মোহাম্মদপুর মা ও শিশু হাসপাতাল সংলগ্ন, মোহাম্মদপুর। 

মন্ত্রী জানান, অনলাইন, ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম এবং এলাকাভিত্তিক ডিলার নিয়োগের মাধ্যমে রেডি ফিশ বাজারজাত করার কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্মজীবী মহিলাদের রান্না সহজ করতে রেডি টু কুক ফিশ প্রস্তুতকরণ, বাজারজাতকরণ ও বাজার সম্প্রসারণের জন্য দূরদর্শী দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, জানিয়ে আব্দুর রহমান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিএফডিসি রেডি-টু-কুক ফিশ প্রস্তুত ও বাজারজাত করার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। বিএফডিসি গৃহিত সময়োপযোগী এই কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তিনি আরও বলেন, রেডি টু কুক ফিশের ক্ষেত্রে একটা বড় চ্যালেঞ্জ হলো—স্বাদ ও খাদ্যমান বজায় রাখা। তবে, বিএফডিসি থেকে যেসব মৎস্যপণ্য ‘রেডি টু কুক’ হিসেবে বিপণন করা হবে, তা অত্যন্ত মানসম্মত বলে দাবি করেন মন্ত্রী। খাদ্যমান নিশ্চিত করার বিষয়ে অধিক গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে এসব পণ্য প্রস্তুত করা হলে ভালো সাড়া পাওয়া যাবে বলে মনে করেন মন্ত্রী।

বাংলাদেশ মাছ উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয় হলেও রপ্তানি ও প্রক্রিয়াজাতকরণে পিছিয়ে আছে, উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে রেডি টু কুক ফিশের অনেক চাহিদা। বিদেশের বাজারে রেডি টু কুক ফিশের ক্ষেত্রে কোন কোন ধরনের মাছের চাহিদা রয়েছে, সেটা খুঁজে বের করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে রেডি টু কুক ফিশ প্রস্তুত করতে পারলে এসব পণ্য রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন। রেডি টু কুক ফিশের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলেও তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।

মৎস্য পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলে মন্ত্রী আশ্বস্ত করেন। রেডি ফিশ বাজারজাতকরণ ও বাজার সম্প্রসারণে সব অংশীজনকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখার জন্য আহ্বান জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী।