ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

শিশু সুরক্ষায় সমাজকর্মীর সংখ্যা ৪০ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার: ইউনিসেফ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:১৭, ১৪ মার্চ ২০২৪  
শিশু সুরক্ষায় সমাজকর্মীর সংখ্যা ৪০ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার: ইউনিসেফ

ইউনিসেফের সহযোগিতায় সরকার শিশু সুরক্ষা খাতে ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি সমাজকর্মী নিয়োগের কাজ সম্পন্ন করেছে। দেশজুড়ে শিশু ও তাদের পরিবারের কল্যাণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ বলে মনে করে ইউনিসেফ।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায় সংস্থাটি।

শিশু সুরক্ষা সামাজিক সেবায় (চাইল্ড প্রোটেকশন সোশ্যাল সার্ভিসেস) অন্তর্ভুক্তির প্রথম ধাপ হিসেবে আজ ঢাকায় সমাজসেবা অধিদপ্তর (ডিএসএস) ও ইউনিসেফ যৌথভাবে নতুন এই সমাজকর্মীদের জন্য তিন দিনব্যাপী ‘প্রশিক্ষকদের জন্য প্রশিক্ষণ’ (ট্রেনিং অব ট্রেইনার্স—টিওটি) কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে।

এই সমাজকর্মীরা যেন শুরুতেই তাদের নতুন কর্মক্ষেত্র ও দায়িত্ব সম্পর্কে সম্যক ধারণা পান এবং সহজে খাপ খাইয়ে নিতে পারেন, সেভাবে প্রশিক্ষণ সাজানো হয়েছে। পাশাপাশি জোর দেওয়া হয়েছে শিশুর সুরক্ষা, পারিবারিক সহায়তা, জরুরি পরিস্থিতিতে পরিষেবা এবং শিশু অধিকারবিষয়ক নীতি বাস্তবায়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে তাদের কাজ করার দক্ষতা গড়ে তোলার ওপর। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো, একটি দক্ষ কর্মীবাহিনী গড়ে তোলার মাধ্যমে সেবা প্রদানের মান উন্নত করা এবং সবার জন্য এই সেবা সহজলভ্য করা।

সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার শিশুদের সব ধরনের ক্ষতি থেকে সুরক্ষিত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নতুন এই সমাজকর্মীদের নিয়োগ দেশের শিশু সুরক্ষাব্যবস্থা উন্নত করতে আমাদের অঙ্গীকারের একটি নজির।

তিনি আরও বলেন, সরকারি প্রচেষ্টাগুলোর প্রতি সমর্থন, সেবা প্রদানকারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রতিটি শিশু যাতে তার প্রাপ্য যত্ন ও সুরক্ষা পায়, তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ইউনিসেফের যে প্রতিশ্রুতি, তার আমরা প্রশংসা করি।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াটলি বলেন, আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ। একটি উন্নত জাতি গড়ে তুলতে শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক। সমাজকর্মীদের সংখ্যা ৪০ শতাংশ বৃদ্ধির মাধ্যমে শিশু সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে সরকারের এই প্রয়াসকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সাধুবাদ জানায়। সমাজসেবার ক্ষেত্রে আমরা সরকার ও অন্য সমমনা অংশীজনদের সঙ্গে প্রায় ২০ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করছি। আমাদের এই সমন্বিত প্রয়াসের ফল দেখে আমরা সত্যিই গর্বিত।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, শিশুদের সুরক্ষায় নিয়োজিত সমাজকর্মীদের সংখ্যা বাড়ানো যেমন গুরুত্বপূর্ণ, সমান গুরুত্বপূর্ণ তাদের মাঝে সঠিক তথ্য ও জ্ঞানের সন্নিবেশ ঘটানো। কেননা, শিশু ও তাদের পরিবার যখন কোনও সহিংসতার শিকার হয়, তখন এই সমাজকর্মীরাই তাদের পাশে অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা নিয়ে দাঁড়ায়।’

এই অগ্রগতি সত্ত্বেও শিশু শ্রমের ব্যাপকতা, অপর্যাপ্ত জন্মনিবন্ধন, প্রাতিষ্ঠানিক তত্ত্বাবধানে বেড়ে ওঠা শিশুদের জীবনে পারিবারিক সহায়তার অভাব এবং শিশু বিয়ের উচ্চ হারের মতো চ্যালেঞ্জগুলো বাংলাদেশে এখনও বিদ্যমান। ইউনিসেফ বিশ্বাস করে, সরকার, সুশীল সমাজ ও আন্তর্জাতিক অংশীজনদের সঙ্গে নিয়ে সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এসব সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব।

সঙ্গে প্রয়োজন, মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগ চলমান রাখার এবং প্রান্তিক পর্যায়ের শিশু ও পরিবারগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির।

ইউনিসেফ দেশের বিপুল সংখ্যক ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিশুদের কার্যকরভাবে সহায়তা করার জন্য শিশু সুরক্ষায় নিয়োজিত কর্মীবাহিনীর সংখ্যা আরও বাড়ানোর ও তাদের ক্ষমতায়নের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্য অংশীজনদের সঙ্গে একত্রে ইউনিসেফ একটি বিস্তৃত জাতীয় শিশু সুরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা বাংলাদেশের প্রতিটি শিশুর অধিকার ও সার্বিক মঙ্গল নিশ্চিত করবে।

আসাদ/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়