সব প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবো: মেয়র আতিক
সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়তে নগরবাসীকে দেওয়া সব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) বদ্ধ পরিকর। আমরা আগামী সময়ের মধ্যে নগরবাসীকে দেওয়া সব প্রতিশ্রুতি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।
গত চার বছরে নির্বাচন-পূর্ব দেওয়া মোটাদাগের ৩৮টি প্রতিশ্রুতির বিপরীতে দেওয়া কাজের অগ্রগতি সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন মেয়র আতিকুল।
সোমবার (১৩ মে) দুপুরে ডিএনসিসির নগর ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার চার বছর পূর্তি উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ডিএনসিসি।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, আমার প্রতি নগরবাসীর আস্থা-বিশ্বাসই আমার কাজের শক্তি। ঢাকাকে বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সব প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে শেষ পর্যন্ত কাজ করে যাবো। যা কিছু সফলতা, প্রাপ্তি, তার সব কৃতিত্ব নগরবাসীর, সব ব্যর্থতা আমার।
তিনি বলেন, আমার মেয়াদের বাকি যে সময় আছে, সে সময়ে নতুন ১৮ ওয়ার্ডের উন্নয়নকাজ শেষ করা এবং খাল উদ্ধারে সর্বাধিক গুরুত্ব দেব। পাশাপাশি কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজার স্থানান্তর করার ব্যাপারটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েই কাজ করবো।
সংবাদ সম্মেলনে খালের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে সর্বশেষ পরিস্থিতির বিষয়ে মেয়র বলেন, সেনাবাহিনী তাদের কাজ করে যাচ্ছে। সিএস, আরএস, এসএ তিনটি ধাপ পার করে কাজটি করা হচ্ছে। পিলার নির্ধারণের ক্ষেত্রে একেক খালের বেলায় ভিন্ন মাপে পিলার বসাতে গিয়ে কিছু জায়গায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এরই মধ্যে ১২০০ মতো পিলার বসানো হয়েছে।
ডেঙ্গু নিধনে হাজার কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। কিন্তু মশা নিয়ন্ত্রণে আসছে না। এজন্য নতুন কৌশল নেওয়া হচ্ছে না কেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, কোভিডের সময় ৫৪টি ওয়ার্ডে দ্বারে দ্বারে গিয়েছি। এখনো ক্যাম্পেইনের ওপর জোর দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। বিটিআই এনে ফেল করেছি এ কথাটা সত্যি নয়, আমরা এখন সরাসরি বিটিআই আনছি। নতুন সংযোজন টারবাইন মেশিন আনা হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে কীটতত্ত্ববিদ আনা হয়েছে। ডেঙ্গু নিধনে ডেঙ্গু যেসব স্থানে জন্ম নেয়, সেসব পরিত্যক্ত পণ্য কিনে নেওয়া হচ্ছে।
অবৈধ দখল প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, আমরা অবৈধভাবে দখলকৃত সরকারি সম্পত্তি, খাল, খেলার মাঠ, ফুটপাত- এসব উদ্ধারে নিয়মিত কাজ করছি। অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দিচ্ছি, জেল-জরিমানা করছি। কিছুদিনের মধ্যেই তা আবার দখল হয়ে যাচ্ছে। আবার উদ্ধার করছি। এটা যেন একটা চোর-পুলিশ খেলা।
মেয়াদকালের আগামী দিনগুলোতে কী কী কাজের ওপর বেশি জোর দেবেন? এমন প্রশ্নে মেয়র আতিক বলেন, এডিস মশা ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ এবং কারওয়ান বাজার স্থানান্তর করাই হবে আমার শেষ সময়ের মূল কাজ।
গত চার বছরে কোন কাজে ব্যর্থতা বা না করতে পারার আক্ষেপ রয়েছে? জবাবে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, একটি আধুনিক মানের গরু জবাইখানা না করতে পারার আক্ষেপ রয়েছে। আর গুলশান-বনানী-বারিধারার মতো এলাকার যেসব বাড়ির মালিক তাদের বর্জ্যের লাইন লেকের সঙ্গে সংযোগ দিয়েছেন, তাদের সেসসব লাইনের মুখ ‘কলাগাছ থেরাপি’ দিয়ে বন্ধ করে দিতে না পারার আক্ষেপও রয়েছে ডিএনসিসি মেয়রের।
নিজেকে তিনি ‘নগরপিতা’ নন, ‘নগরসেবক’ হিসেবে ভাবতে বেশি পছন্দ করেন। তাই, ঢাকাকে সবার বাসযোগ্য, সুন্দর, সুস্থ, স্মার্ট নগর বানাতে সবার সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, সব কিছু ‘আমার নয়, আমাদের’ এটা ভাবতে হবে। নিজের দায়িত্ব নিজে পালন করলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
চার বছর পূর্তি উপলক্ষে ডিএনসিসি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী মীর খাইরুল আলম, ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. ইমরুল কায়েস চৌধুরী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কমিশনারবৃন্দ এবং ডিএনসিসির কর্মকর্তারা।
এমএ/এনএইচ