‘দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা ও অন্ধত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্বে থাকবে বাংলাদেশ’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা এবং অন্ধত্বের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী লড়াইয়ে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করতে থাকবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ক্যারিবীয় দ্বীপরাষ্ট্র এন্টিগা অ্যান্ড বারবুডার রাজধানী সেন্ট জনসে জাতিসংঘ আয়োজিত ‘ক্ষুদ্র দ্বীপ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের চতুর্থ সম্মেলনে’র (সিডস) অফিসিয়াল সাইডলাইন ইভেন্ট ‘সর্বজনীন চক্ষুসেবা’ আলোচনায় এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।
দক্ষিণ গোলার্ধের দেশটির স্থানীয় সময় সোমবার দুপুরে ‘আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অভ এন্টিগা’র মিলনায়তনে জাতিসংঘের ‘গ্রুপ অভ ফ্রেন্ডস অন ভিশন’ আয়োজিত এ আলোচনায় স্বাগতিক দেশ এন্টিগা অ্যান্ড বারবুডার পররাষ্ট্র, কৃষি ও বাণিজ্যমন্ত্রী শেত গ্রিন এবং জাতিসংঘে আয়ারল্যান্ডের স্থায়ী প্রতিনিধি ফারগাল মিথেন, পর্তুগালের স্থায়ী প্রতিনিধি পলা জাকারিয়াস, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালক ওয়ার্নার ওবারমায়ার প্রমুখ বক্তব্য দেন।
ড. হাছান বিশ্বব্যাপী সবার জন্য চোখের চিকিৎসার উন্নতির লক্ষ্যে ২০২১ সালে ‘সবার জন্য দৃষ্টি’ বিষয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ঐতিহাসিক রেজুলেশন গ্রহণ করার ক্ষেত্রে এন্টিগা অ্যান্ড বারবুডা এবং আয়ারল্যান্ডের সাথে বাংলাদেশের নেতৃত্বের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘ইউনাইটেড নেশনস গ্রুপ অভ ফ্রেন্ডস অন ভিশনে’র কো-চেয়ার হিসেবে বাংলাদেশ জাতিসংঘের দৃষ্টি বিষয়ক বিশেষ দূত নিয়োগ এবং ২০২৬ সালে বিশ্ব চক্ষু স্বাস্থ্য সম্মেলন বা গ্লোবাল আই হেলথ সামিট আয়োজন সমর্থন করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্থনৈতিক-সামাজিক ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্য ও বিস্ময়কর অগ্রগতি অর্জনের কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ২০০টি কমিউনিটি আই সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং ২০২৯ সাল নাগাদ আরও ২৫০টি আই সেন্টার প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে।
শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রীর ফ্ল্যাগশিপ উদ্যোগ দেশব্যাপী ১৪ হাজার ৫০০ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে চোখের প্রাথমিক যত্ন ও চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান আমাদের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ, বলেন মন্ত্রী।
এ সময় তিনি বিশ্বব্যাপী দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকারি অবকাঠামোগুলোতে প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা, শিক্ষা উপকরণের উন্নয়ন এবং ডিজিটাল সাক্ষরতা প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এন্টিগা অ্যান্ড বারবুডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং জাতিসংঘে আয়ারল্যান্ড ও পর্তুগালের স্থায়ী প্রতিনিধিদ্বয় তাদের বক্তৃতায় বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে চোখের যত্ন ও চিকিৎসায় বৈষম্য মোকাবিলার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
৪র্থ সিডস সম্মেলনে বাংলাদেশ
প্রতি দশকে একবার আয়োজিত ক্ষুদ্র দ্বীপ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের সম্মেলনের (সিডস) ৪র্থ আসরে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলনেতা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সোমবার সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেন।
তিন দিনের এ সম্মেলনে সিডস সদস্য ৩৯টি দ্বীপরাষ্ট্রের সাথে বিশেষত: জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় অভিন্ন স্বার্থের অংশীদার বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপনের পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান ডোমিনিকান রিপাবলিক ও জ্যামাইকার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদ্বয় এবং জাতিসংঘে কানাডার স্থায়ী প্রতিনিধির সাথে বৈঠকে মিলিত হওয়ার কথা।
শান্তিরক্ষী দিবসে যোগ দেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সিডস সম্মেলন শেষে ৩০ মে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। পাশাপাশি দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশের স্থায়ী দূতাবাস আয়োজিত অস্ট্রিয়ার সাথে যৌথ অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন তিনি।
তিন দিনের নিউইয়র্ক সফরে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল, মিয়ানমারে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত, জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট প্রমুখের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ নিউইয়র্কে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা-ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের উদ্দেশ্যে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে বক্তৃতা দেবেন।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আবদুল মুহিত, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা অণুবিভাগের মহাপরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলম, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মীর আকরাম উদ্দীন আহম্মদ সিডস সম্মেলন ও নিউইয়র্কের কর্মব্যস্ত সফরে দেশের প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে যোগ দিচ্ছেন।
/হাসান/সাইফ/