ঢাকা     শনিবার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৭ ১৪৩১

ডেঙ্গুর উচ্চঝুঁকিতে রাজধানীর ১৮ ওয়ার্ড

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫০, ২৮ মে ২০২৪   আপডেট: ১২:৫৬, ২৮ মে ২০২৪
ডেঙ্গুর উচ্চঝুঁকিতে রাজধানীর ১৮ ওয়ার্ড

এডিস সার্ভে-২০২৪ এর ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠান

রাজধানীতে ডেঙ্গু মৌসুম শুরুর আগেই বাড়ছে এর প্রভাব। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক জরিপে দেখা গেছে, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ১৮টি ওয়ার্ডে ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার লার্ভার ঘনত্বের পরিমাণ নির্দিষ্ট মানদণ্ডের চেয়ে অনেক বেশি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার আওতাধীন জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির অধীনে গত ১৭ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত চালানো প্রাক-বর্ষা জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।

মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালে রাজধানীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আয়োজিত মৌসুম পূর্ব এডিস সার্ভে-২০২৪ এর ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে জরিপের তথ্য উপস্থাপন করা হয়।

আরো পড়ুন:

দুই সিটির ৯৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮টিতে ব্রুটো ইনডেক্স ২০-এর বেশি। এর অর্থ, এসব এলাকার ১০০টির মধ্যে ২০টির বেশি পাত্রে মশা বা লার্ভা পাওয়া গেছে। এই এলাকাগুলো ডেঙ্গুর বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ঝুঁকিতে থাকা ওয়ার্ডগুলো হলো–১২, ১৩, ২০, ৩৬, ৩১, ৩২, ১৭ ও ৩৩। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডগুলো হলো– ৪, ১৩, ৫২, ৫৪, ১৬, ৩, ৫, ১৫, ১৭ ও ২৩।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে ১২ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে এডিসের ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে ৪৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এরপরের অবস্থানে রয়েছে ১৩ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ড, এগুলোতে ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে ৪০ শতাংশ। ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ, ৩১ নম্বর ও ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে ৩০ শতাংশ, ১৭ নম্বর ও ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে ২৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে।

এছাড়াও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে সবচেয়ে বেশি ৭৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৪৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ, ৫২ নম্বর ও ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে। আর ৩, ৫, ১৫, ১৭ এবং ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৩০ শতাংশ ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি প্রতি বছর ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় মৌসুম পূর্ব, মৌসুম, মৌসুম পরবর্তী তিনটি জরিপ পরিচালনা করে আসছে। তারই অংশ হিসেবে অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার কীটতত্ত্ববিদদের ২১টি টিমের মাধ্যমে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

জরিপ পদ্ধতি:
উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ৯৯টি ওয়ার্ডে ২১টি টিমের মাধ্যমে জরিপ পরিচালনা করা হয়। প্রতি ওয়ার্ড ৮টি ব্লকে ভাগ করে দুটি টিম ৪টি ব্লকে ১৫টি করে প্রতি ওয়ার্ডে ৩০টি বাড়িতে জরিপ পরিচালনা করে। ১০ দিনে ৯৯টি ওয়ার্ডে সর্বমোট ৩১৫২টি বাড়িতে সার্ভে করা হয়। তাছাড়া যেসব ওয়ার্ডে বাড়ির সংখ্যা বেশি ও এলাকা বড় সেগুলোতে ৩-৫টি টিমের মাধ্যমে জরিপ পরিচালনা করা হয়।

জরিপের ফলাফল: 
জরিপ করা ৩১৫২টি বাড়ির মধ্যে ৪৬৩টি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা ও পিউপা পাওয়া গেছে। তার মধ্যে বহুতল ভবন ৪২ দশমিক ৩৩ শতাংশ, স্বতন্ত্র বাড়ি ২১ দশমিক ৬ শতাংশ, নির্মাণাধীন ভবন ২১ দশমিক ৬ শতাংশ, সেমিপাকা বাড়ি ১২ দশমিক ৭৪ শতাংশ ও খালি জায়গা ১ দশমিক ৭৩ শতাংশ। 
ঢাকা উত্তর সিটিতে মশার ঘনত্ব পরিমাপক সূচক ব্রুটো ইনডেক্স ১৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ ও হাউস ইনডেক্স ১৪ দশমিক ৩০ শতাংশ। এছাড়াও দক্ষিণ সিটিতে মশার ঘনত্ব পরিমাপক সূচক ব্রুটো ইনডেক্স ১৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ ও হাউস ইনডেক্স ১৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

/এমএ/ইমন/এসবি/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়