ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

জাতিসংঘে চার বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী 

রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে সমন্বিত পদক্ষেপ নিন 

কূটনৈতিক প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:০০, ১ জুন ২০২৪   আপডেট: ১৯:০০, ১ জুন ২০২৪
রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে সমন্বিত পদক্ষেপ নিন 

নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ছয় উন্নয়ন সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ

বাংলাদেশে আশ্রিত প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন, সে দেশের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাত নিরসন ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো এবং অন্যান্য অংশীদারকে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে জোর আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। 

শনিবার (১ জুন) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেলে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের সভাপতি, সংস্থাটির মহাসচিবের মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ দূত, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার এবং জাতিসংঘের ছয় উন্নয়ন সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে পৃথক চার বৈঠকে এ আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। 

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতি ডেনিস ফ্রান্সিসকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ২০১৭ সালে যখন প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমারে সহিংসতা থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের মানুষ তাদেরকে মমতা দিয়ে গ্রহণ করেছিল। কিন্তু, ক্রমেই রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে বিভিন্ন স্থানে কাজ করছে আর ক্যাম্পগুলো মানবপাচার, মাদক চোরাচালান, জঙ্গি নিয়োগসহ নানা অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। ফলে, স্থানীয়দের জীবন অতিষ্ঠ প্রায়।

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডির সঙ্গে বৈঠকে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের পাশাপাশি গত ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ ও সেনাবাহিনীর প্রায় ৭৫০ সদস্য বিভিন্ন সময়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের বেশিরভাগকেই ফেরত পাঠানো হয়েছে। বাকিদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। শুধু তাই নয়, মিয়ানমারে বিবদমান গোষ্ঠীর মর্টার শেল বাংলাদেশ অংশে পড়ে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এসবের পুনরাবৃত্তি রোধ একান্ত প্রয়োজন। 

মিয়ানমার বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলি বিশপের সঙ্গে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, মিয়ানমারে চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতি কোনো নতুন ঘটনা নয় এবং এটিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিপক্ষে ব্যবহারের অজুহাত তৈরির সুযোগ দেওয়া অনুচিত।

এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘ক্রাইসিস, কনফ্লিক্টস অ্যান্ড ইন্টার-এজেন্সি কোলাবরেশন: নেক্সাস অ্যাপ্রোচ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন। জাতিসংঘের ছয় সংস্থা—ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ, ইউএনওপিএস ও ইউএন উইমেনের প্রধান এবং ইউনিসেফ ও ডব্লিউএফপি’র উপপ্রধান এতে অংশ নেন। 

মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বিশ্বে সংঘাত প্রভাবিত অঞ্চলগুলোতে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর নেক্সাস বা সম্মিলিত উদ্যোগের সুবিধাগুলো তুলে ধরেন। তিনি রাখাইন ও কক্সবাজারের পরিস্থিতির কথা করেন এবং উদ্বাস্তু সঙ্কট নিরসন ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উন্নতির লক্ষ্যে জাতিসংঘের সকল সংস্থা, তহবিল এবং কর্মসূচিকে সুসংহতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ এ মুহিত, মন্ত্রণালয় ও মিশনের অন্য সদস্যরা বৈঠকগুলোতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।

হাসান/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়