ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

গৃহবধূকে ধর্ষণ, আত্মহত্যা

জড়িতদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ মানবাধিকার কমিশনের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২৯, ৩ জুন ২০২৪  
জড়িতদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ মানবাধিকার কমিশনের

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন

কুড়িগ্রামে ধারের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও পরে আত্মহত্যার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

রোববার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

কুড়িগ্রামের রাজীবপুরে ধারের ২০ হাজার টাকা সময়মতো পরিশোধ করতে না পারায় এক গৃহবধূকে দুই মাস ধরে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। পরে পুলিশের বাধার কারণে থানায় মামলা করতে পারেননি ওই গৃহবধূ। স্থানীয় ইউপি সদস্য চিকিৎসার খরচের জন্য এক লাখ টাকা দাবি করে ফাঁকা স্ট্যাম্পে সই নিয়েছেন। বিষপানের পর গৃহবধূ মারা গেছেন।

ধর্ষণসহ উল্লিখিত সব অভিযোগকে অত্যন্ত মর্মান্তিক ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছে মানবাধিকার কমিশন। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ।

গত ৩১ মে জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত ‘পাওনা টাকার জন্য গৃহবধূকে দিনের পর দিন ধর্ষণ, বিষপানে ‘আত্মহত্যা’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নজরে আসে। এরপর কমিশন স্বপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করে।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়, মামলা করতে না পারা এবং চিকিৎসার খরচের জন্য এক লাখ টাকা দাবি করে ফাঁকা স্ট্যাম্পে সই নেওয়া–সংক্রান্ত অভিযোগগুলো তদন্তে একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই কমিটির পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত প্রতিবেদন মানবাধিকার কমিশনে পাঠাতে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এই ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে জরুরি ভিত্তিতে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে জানাতে কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৬ জুলাই প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করা হয়েছে।

কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এ ঘটনার সর্বশেষ অগ্রগতি জানতে মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে কুড়িগ্রামের রাজীবপুর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলা হয়। তিনি জানিয়েছেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০–এর আওতায় নিয়মিত মামলা হয়েছে। মামলায় প্রধান আসামি জয়নালসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ধারের ২০ হাজার টাকা সময়মতো পরিশোধ করতে না পারায় এক গৃহবধূকে দুই মাস ধরে দলবদ্ধ ধর্ষণ, পরবর্তীতে পুলিশের বাধার কারণে থানায় মামলা করতে না পারা, স্থানীয় ইউপি সদস্য কর্তৃক চিকিৎসার খরচের জন্য এক লাখ টাকা দাবি করে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া সংক্রান্ত অভিযোগগুলো অত্যন্ত মর্মান্তিক ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।

সুয়োমটোতে বলা হয়, এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা সমীচীন মর্মে কমিশন মনে করে। এ অবস্থায় পুলিশের বাধার কারণে থানায় মামলা করতে না পারা এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য কর্তৃক চিকিৎসার খরচের জন্য এক লাখ টাকা দাবি করে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া সংক্রান্ত অভিযোগগুলো একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তপূর্বক কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রেরণ করতে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসককে বলা হলো এবং দায়ের করা মামলার তদন্ত নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে জরুরি ভিত্তিতে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন, ২০০৯ এর ১৭ ধারা অনুযায়ী কমিশনকে অবহিত করতে কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপারকে বলা হয়েছে।

আগামী ১৬ জুলাই প্রতিবেদনের জন্য দিন ধার্য করতে বলেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

/হাসান/সাইফ/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়