ঢাকা     রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

ছয় দফা বাঙালি জাতির জন্য ম্যাগনাকার্টা ছিল: প্রধানমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩২, ৭ জুন ২০২৪  
ছয় দফা বাঙালি জাতির জন্য ম্যাগনাকার্টা ছিল: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ছয় দফা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি বাঙালি জাতির জন্য ম্যাগনাকার্টা ছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (৭ জুন) বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ছয় দফা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই ছয় দফাই ছিল বাঙালি জাতির জন্য ম্যাগনাকার্টা। এই ছয় দফার মধ্যে দিয়েই আমরা অর্জন করেছি স্বাধীনতা। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন হয়েছিল এই ছয় দফার ভিত্তিতে।

তিনি বলেন, ‘বাঙালি প্রতিটি অর্জন বুকের তাজা রক্তে দিয়ে আদায় করেছে, সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে আদায় করেছে। বাঙালিদের অবস্থাটা ছিল সম্পূর্ণ অরক্ষিত। এর পরেই কিন্তু বঙ্গবন্ধু ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। ছয় দফা দাবি যখন পেশ করতে গেলেন, তখন বাধা দেওয়া হলো, পেশ করতে দেওয়া হলো না। তখন তিনি ওখানে বসেই প্রেস কনফারেন্সে বললেন, প্রচার করে দিলেন, তখনই তাকে হত্যারও চেষ্টা করা হলো। এরপর ঢাকায় এসে এয়ারপোর্টে প্রচার করে দিলেন। পরবর্তীতে ছয় দফা ব্যাপকভাবে প্রচার শুরু হলো।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছয় দফার যে পোস্টার, একটা পোস্টারের কথা বলি... যেমন: একটা গরু, তার বুকটা হচ্ছে পূর্ব পাকিস্তানে আর পেছনটা হচ্ছে পশ্চিম পাকিস্তানে। অর্থাৎ পূর্ব পাকিস্তানে খাবার-দাবার খাওয়ায় আর ওরা (পশ্চিম পাকিস্তন) শুধু দুধ ধোয়ায়। এরকম নানা ধরনের পোস্টার-লিফলেট হয় ছয় দফার ব্যাখ্যা দিয়ে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বৈষম্য দূর করার জন্য যা যা আছে, সবকিছুই তিনি এই ছয় দফায় তুলে ধরেছিলেন। ছয় দফা দিলেন ফেব্রুয়ারি মাসে। হাতে সময় খুব কম ছিল। মার্চ-এপ্রিল দুটো মাসের মধ্যে এই ছয় দফা বাংলাদেশের মানুষ লুফে নিল। এই যে বৈষম্যের চিত্র দেখানো হলো, মানুষের মধ্যে সেই চেতনাটা এলো।’ 

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এটা সারা বাংলাদেশে প্রচার করলেন, নিজে মিটিং করলেন। ৫২ দিনের মধ্যে ৩৫টি মিটিং করেছিলেন। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগের যেখানে সম্মেলন হয়নি, সেখানে সম্মেলনটাও করতেন। এই ছয় দফা মানুষ এমনভাবে লুফে নিয়েছিল।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রবৃদ্ধি অর্জন ৯ ভাগ একমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত দিয়ে অর্জিত হয়েছিল। আমরা কেউ আজ পর্যন্ত পারিনি। এর পরে যারা ক্ষমতায় এসেছে, তাদের তো আর ওই দিকে নজর ছিল না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তাদের মাথায় তো ছিল শুধুমাত্র ক্ষমতা দখল। তাদের মধ্যে ওই পাকিস্তানি মনোভাব, পেয়ারে পাকিস্তানটাই বেশি ছিল। এটা তো আমরা নিজেরা জানি, কীভাবে দেশটাকে একেবারে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাচ্ছিল।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু প্রত্যেকটা বক্তব্যে বলত, গ্রামের মানুষের সচ্ছলতা, গ্রামের মানুষের উন্নতির কথা। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে কাজ করতে পেরেছি বলেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা দেখা দিয়েছে। আমরাও কিন্তু প্রবৃদ্ধি প্রায় আট ভাগের কাছাকাছি নিয়ে এসেছিলাম। মাথাপিছু আয় বাড়িয়েছি। আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।’

আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘পঁচাত্তরের পর ক্ষমতায় এসেছে অবৈধভাবে জিয়াউর রহমান এরশাদ, খালেদা জিয়া। এরপর আবার ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত খালেদা জিয়া ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এই ২৯ বছর ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতির যে পরিবর্তন, বাংলাদেশের মানুষের অর্থ-সামাজিক যে উন্নয়ন, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন, বাংলাদেশটার অবকাঠামোর উন্নয়ন কোনোটাই কিন্তু কেউ করতে পারেনি।’ 

পারভেজ/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়