ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

মরণোত্তর দেহদানকারী ও অঙ্গীকারকারীদের সম্মাননা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৩২, ১০ জুন ২০২৪  
মরণোত্তর দেহদানকারী ও অঙ্গীকারকারীদের সম্মাননা

একজন মানুষ মৃত্যুর পরও বেঁচে থাকতে পারেন মরণোত্তর দেহদানের মাধ্যমে। তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের মাধ্যমে আলো ছড়াতে পারেন অন্যের জীবনে। হতে পারেন আরেকজনের জীবনীশক্তি, হৃৎস্পন্দন। তখন মরেও অমর হয়ে যায় এই মানবজীবন। সেই মহৎ ব্যক্তিদের সম্মাননা জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি বিভাগের আয়োজনে মরণোত্তর দেহদানকারী ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্য ও দেহদানের অঙ্গীকারকারী প্রায় অর্ধশত ব্যক্তিকে সম্মাননা জানানো হয়েছে। সোমবার (১০ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ ডা. মিল্টন হলে এক অনুষ্ঠানে তাদের শুভেচ্ছা ও সম্মাননা জানান বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক বলেন, আজকের দিনে আমি সত্যিই অভিভূত ও আবেগাপ্লুত। এটা আমার জন্য একটি সুন্দর ও মহৎ দিন। আজ আমি এখানে কিছু মহামানবকে দেখছি। যারা মানুষের প্রতি ভালোবাসার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও শিক্ষার কাজে তারা মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার করেছেন।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে অনেকে কর্নিয়াসহ বিভিন্ন অঙ্গ দান করেছেন। আজ আমার মনে পড়ছে স্বামী বিবেকানন্দের সেই অমর বাণী, ‘জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর’। মানুষ হিসেবে আপনাদের স্থান অনেক ঊর্ধ্বে। আপনারা সাদা মনের মানুষ। আপনাদের চারিত্রিক দৃঢ়তা অসীম। মানুষের জন্য শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে যারা কাজ করে যান, আপনারা সেই সুন্দর শ্রেণির মানুষ। আপনাদেরকে পেয়ে আমরা সম্মানিত ও গৌরব বোধ করছি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। তিনি বলেন, অনেক মহৎ ব্যক্তির তার মরদেহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এনাটমি বিভাগে দান করে গেছেন। এই দেহটি পরবর্তী সময়ে চিকিৎসা শিক্ষা এবং গবেষণার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। কেউ কেউ কর্নিয়া দান করে গেছেন, যে কর্নিয়াগুলো অন্য মানুষের চোখে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। সেসব মহৎ ব্যক্তির স্মরণেই আজকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আজকের অনুষ্ঠানে এমনও অনেক মহৎ ব্যক্তি আছেন, যারা দেহদানের অঙ্গীকার করেছেন। সেসব ব্যক্তির মধ্যে আছেন—বীর মুক্তিযোদ্ধা, একুশে পদকপ্রাপ্ত  মনোরঞ্জন ঘোষাল, গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের সচিব কৃষ্ণ দাস গুপ্ত (মনু গুপ্ত), জাতীয় পতাকার অন্যতম মূল নকশাকার প্রয়াত স্বর্গীয় শিবনারায়ণ দাস; রয়েছেন সাংবাদিক ও আরো অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি। তাদেরকে ও তাদের পরিবারের সদস্যদেরকে সংবর্ধনা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই আজকের এই আয়োজন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লায়লা আঞ্জুমান বানুর সভাপতিত্বে ও সহকারী অধ্যাপক ডা. শারমিন আক্তার সুমির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন—বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি, অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. নাজির উদ্দিন মোল্যাহ, এনাটমি বিভাগের অধ্যাপক ডা. নাহিদ ফারহানা আমিন, ডা. লতিফা নিশাত, ডা. শাফিনাজ গাজী, ডা. মহিউদ্দিন মাসুমসহ এনাটমি বিভাগের রেসিডেন্টবৃন্দ।

এমএ/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়